• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    সিটিকে চমকে দিল ওলভস

    সিটিকে চমকে দিল ওলভস    

    ১৯৮১ সালের পর মলিনিউ স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি দর্শক উপস্থিতি। চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে নিজেদের দলের খেলা দেখতে হাজির হয়েছিলেন ওলভস সমর্থকেরা। শেষপর্যন্ত তাদের ফেরার যাত্রাতেও সঙ্গী হয়েছে আনন্দ। সিটিকে অবশ্য হারানো হয়নি, তবে ১-১ গোলের ড্রটা ওলভসের জন্য তো জয়ের সমানই। সিটি সমর্থকেরা অবশ্য রাগটাও সঙ্গী করে নিয়ে ফিরেছেন। রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা পালন করেছে ম্যাচে, তার সবকিছুই গেছে সিটির বিপক্ষে।

    প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন সিটি আর ওলভস আগের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী! দুই দলের পার্থক্য আকাশ পাতাল। ম্যাচে গোলও হয়েছে মাত্র দুইটি। তবুও সেই ম্যাচ নিয়ে আলোচনা যে খুব তাড়াতাড়ি থামবে না সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। বিতর্কের শুরু ওলভসের প্রথম গোলটা থেকেই। ৫৬ মিনিটে হেল্ডার কস্তা শট আটকে দিয়ে সিটিকে রক্ষা করেন এডারসন মোরায়েস। সেই কর্নার থেকেই গোল পায় ওলভস। রুবেন নেভেসের ক্রস ম্যাট ডোহার্টির মাথা ছুঁয়ে নিচে নেমে এসেছিল, কিন্তু ততো নিচুতে পৌঁছাতে পারেননি, উইলি বলি। তিনি মাথা নামিয়েছিলেন, কিন্তু তার ডান হাতে লেগেই বল ঢুকে গেল জালে। রেফারি মার্টিন অ্যাটকিনসনের চোখে ধরা পড়ানে, বলি এড়িয়ে গেছেন লাইনসম্যানের চোখকেও। বিতর্কিত ওই গোলেই ৫৬ মিনিটে এগিয়ে যায় ওলভস।



    তবে গোলটা যে ওলভসের প্রাপ্য ছিল না সেটাও বলা যাচ্ছে না। শুরু থেকেই সিটিকে আজ বিপদের মুখোমুখি করেছে নুনো সান্তোর দল। প্রথমার্ধ একবার সিটির জালে বল পাঠিয়েও অবশ্য অফসাইড সিদ্ধান্তে বাতিল হয় সেটা। নেভেস, জোতারা খেলছিলেন ভয়-ডরহীন ফুটবল। একারণেই হয়ত ভাগ্যটাও সঙ্গী হয়েছে তাদের। নাহলে প্রথমার্ধেই অন্তত দুই গোলে পিছিয়ে যেতে পারত ওলভস। প্রথমে সার্জিও আগুয়েরোর শট লাগে বারপোস্টে। ২২ মিনিটে রুই প্যাট্রিসিও অসাধারণ এক সেভ করে দলকে টিকিয়ে রাখেন ম্যাচে। রাহিম স্টার্লিং বল পেয়েছিলেন ডিবক্সের ঠিক বাইরে। হাফভলিতে মেরেছিলেন টপ কর্নারে। যেমন শট, তার চেয়েও দুর্দান্ত সেভ। প্যাট্রিসিওর সেভটা মৌসুম শেষের সেরাদের তালিকায় এখনই ঢুকিয়ে দেওয়া যায়। বারপোস্ট আর গোলরক্ষকে বাঁধা পেয়ে গোলবঞ্চিত হয়েছে সিটি, প্রথমার্ধে সহজ সুযোগও নষ্ট করেছেন আগুয়েরো। ৪০ মিনিটে বেঞ্জামিন মেন্ডির ক্রস থেকে আগেই আগুয়েরো গোলটা করে ফেলতে পারলে হয়ত গল্পটা আলাদাই হত।

    ম্যাচের সময় ঘন্টা পেরুনোর আগেই সিটি পিছিয়ে পড়ায় অবশ্য একটা লাভও হয়েছিল তাদের। পেপ গার্দিওলার দল ম্যাচে ফেরার যথেষ্ট সময়ই পেয়েছে হাতে। গোল হজমের পরের মিনিটেই একটা পেনাল্টি পেতে পারত সিটিজেনরা। ডেভিড সিলভাকে বক্সের ভেতর ফেলে দিয়েছিলেন নেভেস। সেই ডাকেও সিটি সাড়া পায়নি রেফারির। ৭০ মিনিটেও একই ঘটনা। এবার আগুয়েরোকে ফেলে দিয়েছিলেন হোয়াও মটিনহো। অ্যাটকিনসনের চোখের সামনেই ঘটেছে ঘটনা, সেই দফায়ও পেনাল্টিবঞ্চিত সিটি। তবে এই দুই পেনাল্টি আবেদনের আগেই ম্যাচে ফিরে আসে সিটি। ইলকে গুন্ডোয়ানের বুলেট গতির ফ্রি কিকে হেড করে গোল করেন আইমেরিক লাপোর্তে।

    সমতায় থাকা ম্যাচে প্যাট্রিসিও আরেকটি দারুণ সেভ না করলে এগিয়ে যেত সিটি। গ্যাব্রিয়েল হেসুস মাঠে নেমেছিলেন দল পিছিয়ে যাওয়ার পর। ৭৭ মিনিটে তাকেও খুঁজে পেয়েছিলেন মেন্ডি। বাঁ প্রান্ত থেকে তার ক্রসে হেডও করেছিলেন হেসুস, কিন্তু সেটা সরাসরি প্যাট্রিসিও বরাবরই মেরেছিলেন। তাই গোলের দেখা পাননি। সিটির মতো ওলভসের বদলি খেলোয়াড়ও ম্যাচে প্রভাব রেখেছেন ভালোই। আদামা ট্রায়োরে শেষদিকে মেন্ডিকে বিপদেই ফেলে দিয়েছিলেন। দুইবার মেন্ডিকে কাটিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে করেছিলেন ক্রস, দুটো থেকেই গোল পেয়ে যেতে পারত ওলভস। একবার কোম্পানি বিপদ হওয়ার আগেই বল ক্লিয়ার করেছেন, তার এক মিনিট আগে জোতা বল পেয়ে মেরেছিলেন ওপর দিয়ে।

    ম্যাচের শেষদিকে সিটির দুর্ভাগ্যটা জেঁকে বসে আরেকবার। ইনজুরির টাইমের শেষ মিনিটে আগুয়েরোর ফ্রিকিক বারপোস্টের মাথায় লেগে ফেরত আসে। প্যাট্রিসিও বোকা বানালেও, ভাগ্যকে আর পক্ষে আনা হয়নি সিটির। ওলভসের মাঠ থেকে তাই পয়েন্ট হারিয়েই ফিরতে হয়েছে তাদের।