অবামেয়াং-লাকাজেতে শেষ হাসি আর্সেনালের
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের খেলা চলছে। জুনিয়র হয়লেটের ফ্রিকিক থেকে মরিসনের হেডে ডিবক্সে বল পেলেন গ্যারি ম্যাডিন। বল ধরতে এগিয়ে আসলেন আর্সেনাল গোলরক্ষক পিটার চেক, নাগাল পেলেন না। ম্যাডিন আবারও ক্রস করলেন মরিসনের দিকে। কিন্তু লাফিয়ে উঠে ফাঁকা গোলপোস্টে হেড রাখতে পারেননি মরিসন। মাথাগ হাত ধরে পড়ে থাকলেন কার্ডিফের ডিফেন্ডার। দুবার সমতায় ফিরলেও শেষবার আর ফেরা হল না 'ব্লু বার্ড'দের। লিড নেওয়া, সমতায় ফেরার নাটকীয়তায় ঠাসা দুর্দান্ত এক ম্যাচে কার্ডিফকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল।
নিজেদের মাঠে আর্সেনালের বিপক্ষে শুরু থেকেই প্রেসিং ফুটবলের দিকে ঝুঁকেছিল কার্ডিফ। 'গানার'দের রক্ষণ থেকে ছোট ছোট পাসে এগুনোর ট্যাকটিক্সটাই গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন কার্ডিফ ম্যানেজার নিল ওয়ারনক। ম্যাচের ৬ মিনিটেই সেই সাফল্য পেয়েই গিয়েছিল 'ব্লু বার্ডস'রা। মাতেও গুয়েন্দুজির দিকে পাস বাড়ান আর্সেনাল গোলরক্ষক পিটার চেক। কিন্তু ফ্রাঞ্চ মিডফিল্ডারের আগেই ডিবক্সের কিছুটা বাইরে বল দখলে নেন কার্ডিফ মিডফিল্ডার হ্যারি আর্টার। কিন্তু ইংলিশ মিডফিল্ডারের বাঁকানো শট চলে যায় আর্সেনাল গোলের উপর দিয়ে। প্রথমার্ধে এরকম আরও কয়েকবার ভুল পাসে কার্ডিফকে সুযোগ দিয়েছিল আর্সেনাল। কিন্তু তেমন বিওয়াকে পড়তে হয়নি। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে ম্যাচের ১১ মিনিটেই লিড নেয় তারা। গ্রানিত শাকার কর্ণারে বুলেটগতির এক হেডে আর্সেনালকে লিড এনে দেন স্কোদরান মুস্তাফি। অবামেয়াং-ওজিল-লাকাজেতদের ঠেকাতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল কার্ডিফকে। কিন্তু সময়ের সাথে গোছানো পাসিংয়ে আর্সেনালকে বিপাকে ফেলতে থাকে কার্ডিফ। হয়লেট-কামারাসাদের গতির সামনে বেশ অসহায়ই মনে হয়েছে আর্সেনালকে।
মাঝমাঠের লড়াইয়ে ঘুরপাক খেতে থাকা ম্যাচটিতে তেমন সুযোগই তৈরি করতে পারেনি কার্ডিফ। ওদিকে ৩৩ মিনিটে লাকাজেতের শট বারপোস্টে প্রতিহত না হলে তখনই ব্যবধান দ্বিগুণ করত আর্সেনাল। কার্ডিফ তেমন সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও আর্সেনালের রক্ষণভাগের ভুলে বেশ কয়েকবার ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিল ওয়ারনকের দল। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আর্সেনালের ভুলেই সমতায় ফেরে কার্ডিফ। শাকার ভুল পাসে বল পান হয়লেট। পাস বাড়ান বেনেটকে। তার ক্রস নিয়ন্ত্রণে এনে চেককে পরাস্ত করেন কামারাসা। পিছিয়ে পড়েও মনোবল না হারিয়ে থাকার পুরষ্কারটা প্রাপ্র্যই ছিল ইপিএল-এর নবাগত দলটির।
প্রথমার্ধের শেষদিকে লিড হারালেও মনোবল হারায়নি আর্সেনাল। উল্টো দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে কার্ডিফকে আবারও চেপে ধরে আর্সেনাল। কিন্তু অবামেয়াংদের সামনে রীতিমত এক দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে উঠেন গোলরক্ষক নিল এথেরিজ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল অসামান্য দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়েছেন ফিলিপাইনের গোলরক্ষক। কিন্তু ৬২ মিনিটে আর শেষরক্ষা হয়নি এথেরিজের। লাকাজেতের চকিত পাস থেকে চমৎকার এক বাঁকানো শটে আর্সেনালের লিড পুনরোদ্ধার করেন অবামেয়াং। প্রিমিয়ার লিগে তার অভিষেকের পর কেবল মোহাম্মাদ সালাহর গোলই (১৫) বেশি অবামেয়াংয়ের থেকে। কিন্তু এবারও চির ধরেনি কার্ডিফের। ৭০ মিনিটে ওয়ার্ডের গোলে আবারও সমতায় ফিরে তারা। ফ্রিকিক থেকে মরিসনের হেডে বল পেয়ে চেককে পরাস্ত করেন ওয়ার্ড।
লিড হারানো, সমতায় ফেরার ম্যাচে নাটকীয়তার বাকি ছিল তখনও। ৮১ মিনিটে লুকাস তোরেইরার পাস থেকে ডিবক্সে বল পান লাকাজেত। কার্ডিফের রক্ষণভাগ কিছু বুঝে উঠার আগেই ডানপায়ের আগুনে শটে আর্সেনালকে আবারও লিড এনে দেন লাকাজেত। ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৯ নম্বরে উঠে আসল উনাই এমেরির দল।