• ট্রিবিউট
  • " />

     

    শেষবেলায় ফুটলো যে ফুল!

    শেষবেলায় ফুটলো যে ফুল!    

    যখন শেষবারের মতো নামলেন ব্যাটিংয়ে, গার্ড অব অনার পেলেন না। শেষবারের মতো মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় অবশ্য পেলেন। সতীর্থদের কাছে। তাতেই তিনি আপ্লুত। তিনি খুশী, তাঁর অধিনায়কের শেষ টেস্টে খেলতে পেরেই! 

     

    এক টেস্ট খেলা ক্লাবের সদস্য হতে পারতেন ক্রিস রজার্স। ২০০৮ সালে অভিষেকেটা ঠিক রঙিন ছিল না তাঁর। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৯ রান, স্বপ্নের ব্যাগি গ্রিনটা হাতে পেয়েও তুলে রাখতে হলো ওই টেস্টের পরই!

     

    দলে ফিরলেন পাঁচ বছর পর! রিকি পন্টিং ও মাইক হাসির অবসরের পর সুযোগ পেলেন আবার। ৩৬ বছর বয়স্ক এক ক্রিকেটারের জন্য আর কী চাই! দীর্ঘদিনের কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতার দাম পেলেন, ইংল্যান্ডগামী অ্যাশেজ দলে সুযোগ পেয়ে। প্রথম সেঞ্চুরিটাও পেলেন সেখানেই। তবে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেল অস্ট্রেলিয়া।

     

    পরের অ্যাশেজেই ৫-০ এর স্বাদ পেলেন। এই অ্যাশেজেরই ১৫টি টেস্ট খেলেছেন রজার্স, ২৫ টেস্টের ‘ছোট্ট’ ক্যারিয়ারে। আসলেই কি ছোট! সবকিছুই কি সংখ্যা দিয়েই বিচার্য! অন্তত ক্রিস রজার্স এর বিরোধিতা করবেন, নিশ্চিত।

     

    ওভাল টেস্টের পর পুরস্কার বিতরনী মঞ্চে উঠলেন, অস্ট্রেলিয়ার সিরিজসেরা হয়ে। এরকম মঞ্চে ওঠা তাঁর জন্য প্রথম। একবারও যে ম্যাচ বা সিরিজসেরা হননি তিনি এর আগে! শেষবেলায় পেলেন ‘বড়-সড়’ এক পুরস্কার। যে তিনটি অ্যাশেজ খেলেছেন, সবক'টি ম্যাচ মিলিয়ে তিনিই সর্বোচ্চ রান-সংগ্রাহক (মোট ১৩১০ রান; এই তিন সিরিজে যথাক্রমে ৩৬৭, ৪৬৩ আর ৪৮০ রান)। 

     

     

    ‘সাধনা করে যেতে হবে, তাহলেই মিলবে ফল, ক্রিস রজার্সের ক্যারিয়ার দেখে হয়তো মানুষ শিখবে আরেকবার’- মাইকেল আথারটনের এমন কথার জবাবে একটা কঠিন সত্যই বললেন তিনি, ‘ মানুষ আমাকে এই প্রশ্নটা প্রায়ই করে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমি ক্রিকেট খেলি জীবিকার জন্য। এবং সেটা উপভোগ করি। সুতরাং কাজটা কঠিন নয়!’

     

    হ্যাঁ, কুমার সাঙ্গাকারার এত এত রেকর্ড, মাইকেল ক্লার্কের ক্যারিশমার মাঝে ২৫ টেস্টে ৪২.৮৭ গড়ে ২০১৫ রান করা কোন ব্যাটসম্যানের বিদায় যে নিভৃতেই হবে, আশ্চর্য কী! ক্রিকেট খেলেন কতজন! সবাই তো আর সাঙ্গাকারা বা ক্লার্ক হন না! বিদায়টাও হয়না তাঁদের মতো করে।

     

    তবে ক্রিস রজার্সদের অস্বীকার করার উপায় নেই। ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসার যদি কোনো মাপকাঠি থাকতো, তাহলে হয়তো অনেক উঁচুতেই থাকতো রজার্সদের মতো ক্রিকেটারদের নাম! আরও অনেক কিংবদন্তির সঙ্গে।

     

    পৃথিবী অদ্ভূত।

    ক্রিকেট তো পৃথিবীরই অংশ!

     

    গুডবাই, বাকি। আপনার সন্তান, বংশধররা একদিন গর্ব করে নিশ্চয়ই বলবে, আপনি অস্ট্রেলিয়ার জন্য কী করেছিলেন। তাঁরা মনে রাখবে, নিশ্চিত। আর বেশী কিছু কি চাওয়ার আছে আপনার!

     

    নেই। আমরা জানি। আপনারা যে এমনই!