• ট্রিবিউট
  • " />

     

    সাঙ্গাকে কোহলির হাতে লেখা চিঠি

    সাঙ্গাকে কোহলির হাতে লেখা চিঠি    

    রবিবারের শেষ বিকেল। কলম্বোর পি সারা ওভালে শেষ ইনিংসে ব্যাট করছেন কুমার সাঙ্গাকারা। আরেকটু সুনির্দিষ্ট করে বললে সাঙ্গাকারার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টের শেষ ইনিংস। অশ্বিনের লেন্থ বল অফ স্ট্যাম্প বরাবর পড়ে বাঁক খেয়ে বেরিয়ে যাবার মুখে সাঙ্গার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গালিতে দাঁড়ানো মুরালি বিজয়ের হাতে। যথারীতি অশ্বিনকে ঘিরে উল্লাসে মাতলো ভারতীয় দল। কিন্তু সেটা কেবল ক্ষণিকের জন্য। ফিল্ডাররা সবাই দৌড়ে গেলেন সদ্যই শেষবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আউট হয়ে যাওয়া কিংবদন্তীর দিকে। অধিনায়ক বিরাট কোহলি হাত বাড়িয়ে করমর্দন করলেন, জানালেন বিদায় সম্ভাষণ।

     

     

    সদ্য সমাপ্ত টেস্টের দু’ ইনিংসেই সাঙ্গাকারা প্রতিবার উইকেটে আসা-যাওয়ার সময় কোহলির ভারত দু’ সারিতে দাঁড়িয়ে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়েছে লঙ্কান লিজেন্ডকে। পুরো টেস্টজুড়ে তাঁকে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিদায় দিতে ভারতীয় খেলোয়াড়দের বিনীত প্রচেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো। আর তাতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ক্যারিয়ারের শুরুর ‘উদ্ধত’ বিরাটের সাথে এই কোহলিকে মেলানোটা কঠিন বলে মানছেন অনেকেই।

     

    ভারতীয় দলপতি অবশ্য এই কঠিনটুকু কাজে পরিণত করেই ক্ষান্তি দেন নি। সাঙ্গাকারার বিদায়কে আরও খানিক বর্ণিল করতেই হয়তো এবার তাঁর উদ্দেশ্যে একখানা স্মারক চিঠিও লিখেছেন বিরাট। মর্মস্পর্শী বয়ানে কোহলির হাতে লেখা চিঠিটি আজ টুইট করা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে।

     

     

    ‘প্রিয় কুমার’ সম্বোধনে চিঠির শুরুতে ‘ব্যক্তি’ সাঙ্গাকারার প্রতি ভালোলাগা জানিয়ে কোহলি লিখেন, “তোমার সুবিশাল ক্রিকেটীয় অর্জন বর্ণনার অতীত। বহু মানুষকে প্রেরণা যুগিয়েছ, পথ দেখিয়েছ। তোমার সাথে একই সময়ে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। ধন্যবাদ সবকিছুর জন্য। স্রষ্টা তোমার ও তোমার পরিবারের মঙ্গল করুন। ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অনেক শুভকামনা।”

     

    আজ খেলা শেষেও ভারতীয় দলের সব খেলোয়াড়ের স্বাক্ষর করা একটি স্মারক জার্সি সাঙ্গাকারার হাতে তুলে দেন কোহলি।

     

     

    মাঠের খেলার ফাঁকে চোখের আগুন কিংবা মুখের ভাষায় বিপক্ষ দলকে ঝলসে দেয়ার চলটা হয়তো এখন ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চেরই অংশ হয়ে গেছে। তবে এসবের ঊর্ধ্বে উঠে দিনশেষে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের পিঠ চাপড়ে দিতে পারাটাই ‘স্পোর্টসম্যানশিপ’। কারও ক্যারিয়ারের শেষ বিকেলে পোশাকি পার্থক্য ভুলে অমন ‘গার্ড অব অনার’ই বাইশ গজের উইকেটে অক্সিজেন যুগিয়ে যাবে অনাদিকাল।