• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    দেড় যুগে ইউনাইটেডের সবচেয়ে বাজে শুরু

    দেড় যুগে ইউনাইটেডের সবচেয়ে বাজে শুরু    

    শেষ ১৯ দেখায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে মাত্র একবার জয়ের মুখ দেখেছিল ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড। তবে ২০১৮-১৯ মৌসুমের শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতে থাকা ইউনাইটেডকে আবারও হারানোর মোক্ষম সময় ছিল আজই। খুব সম্ভবত সাম্প্রতিক সময়ে ‘রেড ডেভিল’দের হারানোর সবচেয়ে দারুণ সুযোগটা হাতছাড়া করল না ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দল। লন্ডন স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে হোসে মরিনিয়োর দলকে হারিয়েছে ‘হ্যামার্স’রা। ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর আবারও লিগে শুরুটা এত বাজে হল ইউনাইটেডের। ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত টেবিলের দশ নম্বরে নেমে গেল তারা। ইউনাইটেডের হারের দিনে জয় পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি এবং টটেনহাম হটস্পার্স। ব্রাইটনকে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে -০ গোলে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার সিটি। আর হাডার্সফিল্ডের মাঠে স্পার্দের জয়টা -০ ব্যবধানের।

    লন্ডন স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই ইউনাইটেডকে চেপে ধরে ওয়স্ট হ্যাম। ফেলিপে অ্যান্ডারসন, মার্কো আর্নাউটোভিচ এবং আন্দ্রেই ইয়ারমোলেঙ্কো ত্রয়ীর সামনে দাঁড়াতেই পারেননি ক্রিস স্মলিংরা। ম্যাচের ৫ মিনিটেই দলকে লিড এনে দেন অ্যান্ডারসন। মাঝমাঠ থেকে রাইটব্যাক পাবলো জাবালেতাকে পাস বাড়ান ওয়েস্ট হ্যাম অধিনায়ক মার্ক নোবেল। জাবালেতার ক্রসে ডানপায়ের চমৎকার ফ্লিকে ডেভিড ডি গেয়াকে পরাস্ত করেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। গত মৌসুমের প্রথম ৭ ম্যাচে ৬টি ক্লিনশীট রেখেছিলেন ডি গেয়া। এই মৌসুমের প্রথম ৭ ম্যাচ শেষে রাখলেন কেবল একটি। শুরুতেই গোল খেয়ে একেবারেই খেই হারিয়ে ফেলে ইউনাইটেড। মাঝমাঠের সাথে ফরোয়ার্ডদের বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল সুস্পষ্ট। পল পগবা, রোমেলু লুকাকুদের কেউই জ্বলে উঠতে পারেননি দলের প্রয়োজনে। ওয়েস্ট হ্যাম ডিফেন্ডার বালবুয়েনা এবং ডিওপরা রীতিমত পকেটবন্দি করে রেখেছিলেন মরিনিয়োর ফরোয়ার্ডদের। তবে সমতায় ফেরার সুযোগ ঠিকই পেয়েছিল ইউনাইটেড। পুরো ম্যাচ দারুণ খেলা বালবুয়েনার ভুলে অ্যাশলি ইয়ংয়ের ক্রস থেকে ডিবক্সে বেশ খানিকটা জায়গা পেয়ে যান লুকাকু। কিন্তু বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের শট প্রতিহত হয় বারপোস্টে। প্রথমার্ধে বলার মত এই একটি সুযোগই তৈরি করেছিল ইউনাইটেড। পেলেগ্রিনির পাসিং ফুটবল দর্শনে দিষ্ট ‘হ্যামার্স’রা পজেশন ধরে রেখে মূহূর্মূহূ কাঁপিয়ে দিচ্ছিল ইউনাইটেডের রক্ষণভাগকে। ৪২ মিনিটে ইউনাইটেড ডিফেন্ডার ভিক্টর লিন্ডেলফের আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ওয়েস্ট হ্যাম।

     

     

    পাঁচজন ডিফেন্ডার নামিয়েও দুই গোল হজম করে বসা ইউনাইটেড দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে থাকে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে। নতুন ফর্মেশনে কিছুটা গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে ইউনাইটেড। ম্যাচের ফেরার দারুণ এক সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু ৫৩ মিনিটে মারুয়ান ফেলাইনির হেড দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক লুকাস ফ্যাবিয়ান্সকি। এরপর থেকে পজেশন ধরে ওয়েস্ট হ্যামকে চাপে ফেলতে থাকে ইউনাইটেড। ৭১ মিনিটে দলকে ম্যাচে ফেরান বদলি ফরোয়ার্ড মার্কাস রাশফোর্ড। তবে ইউনাইটেডের সে আশায় গুড়েবালি করে দেন আর্নাউটোভিচ। ৭৪ মিনিটে ডি গেয়াকে একা পেয়ে ভুল করেননি অস্ট্রিয়ান ফরোয়ার্ড। শেষ পর্যন্ত ফ্যাবিয়ান্সকিকে আর বিপাকে ফেলতে না পারা ইউনাইটেড মাঠ ছেড়েছে ৩-১ গোলের হারেই।

    ইউনাইটেড হারলেও ব্রাইটনের বিপক্ষে রীতিমত হেসেখেলেই জিতেছে সিটি। প্রায় পূর্ণশক্তির সিটির বিপক্ষে তেমন পাত্তাই পায়নি ব্রাইটন। তবে আগামী সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচের কথা চিন্তা করেই হয়ত কিছুটা গা বাঁচিয়েই খেলেছে সিটি। কিন্তু তারপরও জিততে সমস্যা হয়নি তাদের। ম্যাচের ২৯ মিনিটে লিরয় সানের পাস থেকে দলকে লিড এনে দেন রহিম স্টার্লিং। পিছিয়ে পড়ার পর থেকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি ব্রাইটনকে। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৫ মিনিটে সার্জিও আগুয়েরোর গোলে পয়েন্ট নিশ্চিত করে সিটি। এই জয়ে ক্ষণিকের জন্য হলেও টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল সিটি।

     

     

    এমিরেটসেও একই ব্যবধানে ওয়াটফোর্ডকে হারিয়েছে আর্সেনাল। ম্যাচের শুরু থেকেই ওয়াটফোর্ডকে চেপে ধরে আর্সেনাল। কিন্তু ফরোয়ার্ডের মিসের মহড়ায় লিডটা আর নেওয়া হয়নি আর্সেনালের। তবে দ্বিতীয়ার্ধে অ্যালেক্স ইওবি বদলি হিসেবে নামার পর থেকেই স্বরূপে ফিরতে থাকে ‘গানার’রা। ৮১ মিনিটে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ডের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজেদের জালে ঠেলে দেন ক্রেইগ ক্যাথকার্ট। এর মিনিট দুয়েক পর ৮৩ মিনিটে অ্যালেকজান্ডার লাকাজেতের ক্রস থেকে ওয়াটফোর্ডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মেসুত ওজিল।

     

     

    হাডার্সফিল্ডের মাঠে গত মৌসুমে জোড়া গোল করেছিলেন। জন স্মিথ স্টেডিয়ামে এবারও সেই রেকর্ড বজায় রাখলেন হ্যারি কেইন। প্রথমার্ধের ২৫ এবং ৩৪ মিনিটে ইংলিশ স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে ‘টেরিয়ার্স’দের হারিয়েছে স্পার্স। আজকের জয়ে টেবিলের চার নম্বরে উঠে আসল মরিসিও পচেত্তিনোর দল।