রাশিয়ায় লোপেতিগির রিয়ালের হার
রাশিয়া থেকে বিশ্বকাপের একদিন আগে বরখাস্ত হয়ে ফিরেছিলেন হুলেন লোপেতেগির। রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হয়ে রাশিয়াযাত্রাটাও সুখকর হল না তার। সিএসকেএ মস্কোর কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। গোল করাই যেন ভুলে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। লা লিগায় সেভিয়া, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পর চ্যাম্পিয়নস লিগের আরও এক ম্যাচও রিয়ালের গেছে গোলশূন্য থেকে। ২০০৭ সালের পর এবারই প্রথম টানা ৩ ম্যাচে গোলশূন্য থাকল রিয়াল।
মস্কোতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই গোল হজম করে বসেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের বয়স তখন মিনিট পেরিয়েছে কেবল। টনি ক্রুসের একটা ব্যাকপাসই কাল হয়ে দাঁড়াল। ক্রুস দিয়েছিলেন সতীর্থের উদ্দেশ্যে, কিন্তু ডিবক্সের ভেতর সেটা পেয়ে গেলেন নিকোলা ভ্লাসিচ। কেইলর নাভাসকে কোনো সুযোগ না দিয়েই রিয়ালকে ভুলের শাস্তিটা দিয়ে দিলেন। ৬৫ সেকেন্ডের ওই গোলেই পরে নির্ধারিত হল খেলার ভাগ্য।
অথচ এরপরও প্রায় পুরোটা সময় পড়েই ছিল রিয়ালের ফেরার জন্য। ম্যাচে বলের দখল, আক্রমণ সবকিছুতেই রিয়াল এগিয়ে থাকলেও গোলটাই কেবল পেল না। আধ ঘন্টা পেরুনোর পর রিয়ালের ২৪১ পাসের বিপরীতে সিএসকেএর পাস ছিল মাত্র ৭৮ টি। প্রথমার্ধেই দুইবার বারপোস্টে লেগে ফিরল রিয়ালের শট, তবু গোলটাই পেল না তারা। ২৮ মিনিটে কাসেমিরোর ৩০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট ফেরত আসে বারপোস্ট থেকে। এর কিছুক্ষণ পর করিম বেনজেমার গোলমুখী হেডের পরিণতিও হয় একই, এবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওপরের পোস্টে। ৪৩ মিনিটে ইনজুরি নিয়ে দানি কারভাহাল মাঠ ছাড়লে সমস্যা আরও বাড়ে লোপেতিগির রিয়ালের।
দ্বিতীয়ার্ধেও অবশ্য কাঙ্ক্ষিত সেই গোলের পথেই ছিল রিয়াল। ৫০ মিনিটে মার্কো আসেনসিও চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ইগর আকিনফেভের সেভে গোল পাওয়া হয়নি তারও। উপায় না দেখে ৫৮ মিনিটেই আরও দুইটি বদলি করান রিয়াল ম্যানেজার। লুকা মদ্রিচের সঙ্গে তিনি নামিয়ে দেন মারিয়ানো ডিয়াজকেও। রিয়ালের নাম্বার সেভেনই আরেকটু হলে ম্যাচটা বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও বাধা পেয়েছেন সেই বারপোস্টেই। ৯০ মিনিটে ডিয়াজের দারুণ হেড বারে লেগে ফেরত আসলে বেঁচে যায় সিএসকেএ। অবশ্য এর আগেই দানি সেবায়োসের শট ঠেকিয়ে দিয়ে আকিনফেভ ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন দলকে।
সিএসকেএর ঐতিহাসিক জয়টা অবশ্য মাঠ থেকে উদযাপন করা হয়নি অধিনায়কের। ৯৫ মিনিটে ম্যাচে ফেরার সুবর্ন সুযোগ এসেছিলেন রিয়ালের। ডান দিক থেকে আসা ক্রস থেকে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি রাফায়েল ভারান। বল তাই অল্পের জন্য গোলে না ঢুকে চলে যায় বাইরে দিয়ে। আকিনফেভ রেফারির কাছে ফাউলের অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু রেফারির পছন্দ হয়নি সেই আচরণ। ভারানের হেড বাইরে দিয়ে গেলেও আকিনফেভের রেহাই মেলেনি। প্রথমে হলুদ কার্ড দেখিয়েও, সেকেন্ডের ব্যবধানে আবার লাল কার্ড দেখিয়ে সিএসকেএ গোলরক্ষককে মাঠ থেকে বের করে দেন তিনি। ম্যাচের তখন ৯৭ মিনিট, সেই অবস্থাতেই মাঠে নামতে হয় রিজার্ভ গোলরক্ষক গিওর্গি কাইরান্টাসকে। ২০ বছর বয়সী গোলরক্ষককে বাজিয়ে দেখার সময়টাও অবশ্য এরপর আর পায়নি রিয়াল। ৯৮ মিনিটে গিয়ে খেলা থামলেও, তাই হারটা এড়ানো হয়নি তাদের।