• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    লিভারপুলের টানা জয়ের রেকর্ড ভেঙে দিল নাপোলি

    লিভারপুলের টানা জয়ের রেকর্ড ভেঙে দিল নাপোলি    

    বারপোস্ট, ক্রসবার, অ্যালিসনের বেকারের দুর্দান্ত সব সেভ, ডিফেন্ডারদের লাইন থেকে বল ফেরানো- নাপোলির প্রতিপক্ষ যেন আজ কেবল লিভারপুল নয়; ছিল ভাগ্যও। একাধিকবার গোলের দ্বারপ্রান্ত থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছিল কার্লো আঞ্চেলত্তির দলকে। কিন্তু তারপরও দমে যায়নি নেপলসের দলটি। শেষ পর্যন্ত হাল না ছাড়ার পুরষ্কারটা ঠিকই পেয়েছে নাপোলি। ম্যাচের মিনিটখানেক বাকি থাকতে লরেঞ্জো ইনসিনিয়ের গোলে এই মৌসুমে ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে প্রথম হারের স্বাদ দিল নাপোলি। লিভারপুলকে হারিয়ে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে 'সি' গ্রুপের শীর্ষেও উঠে গেছে আঞ্চেলত্তির দল।

    শেষ মুহূর্তে বিজয়ের হাসি হাসলেও নাপোলির জন্য পুরোটা ম্যাচই ছিল হতাশার চাদরে মোড়া। গোলের একেবারে কাছে এসেও বারবার ফিরতে হচ্ছিল খালি হাতে। অবশ্য কিছুটা খর্বশক্তির আক্রমণভাগ নামানোর কারণে এদিক দিয়ে কিছুটা সমালোচনা হতেই পারে আঞ্চেলত্তির। মৌসুমের অন্যতম বড় ম্যাচে মার্টেন্সের মত একজনকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছিলেন ইতালিয়ান ম্যানেজার। আর্কাদিউজ মিলিক, কায়েহনের সাথে নাপোলির আক্রমণে নেমেছিলেন ইনসনিয়ে। পিএসজিকে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকা লিভারপুল নামিয়েছিল পূর্ণশক্তির দলই। কিন্তু প্রথমার্ধে নাবি কেইটা ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়লে লিভারপুলের খেলায় প্রভাব পড়ে অনেকটাই। কেইটাকে হারিয়ে মাঝমাঠে খেই হারিয়ে ফেলা লিভারপুলকে চেপে ধরে নাপোলি।

     

     

    কেইটা মাঠ ছাড়ার আগেই অবশ্য লিড নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল নাপোলি। ১১ মিনিটে মিলিকের পাস থেকে লিভারপুল বক্সের বাঁ-প্রান্তে বল পান ইনসিনিয়ে। কিন্তু তার জোরাল শট দক্ষহাতে ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন। প্রথমার্ধে কেইটাকে হারিয়ে আক্রমণের চেয়ে রক্ষণের দিকেই মনোযোগী হয় লিভারপুল। কিন্তু কায়েহনদের ঠেকাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছিল ভ্যান ডাইকদের। কম যায়নি নাপোলির রক্ষণভাগও। সালাহ-মানে-ফিরমিনোদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি প্রথমার্ধে। কুলিবালি-আলবিওল জুটি রীতিমত পকেটবন্দিই করে রেখেছিলেন লিভারপুলের দুর্দান্ত ফরোয়ার্ডদের।

    প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময়ই বল নিজেদের দখলে রাখা, আক্রমণ গড়ে তোলা- সব দিক দিয়েই এগিয়ে ছিল নাপোলি। কিন্তু গোলের সামনে কায়েহনদের ব্যর্থতায় ফিরতে হচ্ছিল খালি হাতে। দ্বিতীয়ার্ধেও সব দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও গোলটাই পাচ্ছিল না তারা। তার ওপর যোগ হয় দুর্ভাগ্য। দ্বিতীয়ার্ধে কায়েহন এবং অ্যালানের দুটি শট প্রতিহত হয়েছে বারপোস্টে। শট লক্ষ্যে রেখেও অবশ্য স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলতে পারেনি নাপোলি। অ্যালিসন বেকার হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এক দুর্গ। ৫০ মিনিটে ইনসিনিয়ের শট অসামান্য দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন ব্রাজিলের 'নাম্বার ওয়ান'। এর মিনিট চারেক পর মারেক হামসিকের শটও ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন।

     

     

    গোলের জন্য সম্ভবপর সব করেও লিড নিতে না পারায় ডাগআউটে আঞ্চেলত্তির হতাশা ছিল সুস্পষ্ট। দ্বিতীয়ার্ধে ৬২ মিনিটে অ্যালানের পাস থেকে হামসিকের শটও ফিরিয়ে দিয়েছেন দারুণভাবে। নাপোলির আক্রমণজোয়ারে ভেসে যাওয়া লিভারপুল দ্বিতীয়ার্ধে কেবল ডিফেন্সই করে গেছে। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের ছায়া হয়েছিলেন সালাহরা। এতটাই নিষ্প্রভ ছিলেন আজ, পুরো ম্যাচে লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি একবারও। গোলের আশায় হন্যে হয়ে ছোটা আঞ্চেলত্তির দ্বিতীয়ার্ধে নামিয়ে দেন মার্টেন্সকে। ৭৫ মিনিটে আরেকটু হলেই তার শট থেকেই এগিয়ে যেতে পারত নাপোলি। কিন্তু আবারও অ্যালিসনের দক্ষতায় গোলবঞ্চিত হয় নাপোলি। পুরোটা ম্যাচ গোল দিতে না পারলেও হাল ছাড়েনি নাপোলি। ৮৯ মিনিটে জয়সূচক গোলের উৎস বদলি ফুটবলার মার্টেন্সের পাস থেকেই। ডান প্রান্ত থেকে পাস দিয়েছিলেন কালেয়হনকে, তার ক্রস থেকে স্লাইড করে অবশেষে লিভারপুলের জালে বল পাঠান ইনসিনিয়ে।