• " />

     

    ক্রিকেটকে বিদায় বললেন নিয়াল ও'ব্রায়েন

    ক্রিকেটকে বিদায় বললেন নিয়াল ও'ব্রায়েন    


    আন্তর্জাতিক ও পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের ঐতিহাসিক নাম- নিয়াল ও’ব্রায়েন। 

    কখনও কখনও একটা ইনিংস হয়ে ওঠে একজন ক্রিকেটারের পরিচায়ক। নিয়াল ও’ব্রায়েনের ৭২ রানের ইনিংসটি যেমন। ২০০৭ বিশ্বকাপে সেন্ট প্যাট্রিকস ডে’তে স্যাবাইনা পার্কে পাকিস্তানকে হারানোর সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে ও’ব্রায়েন খেলেছিলেন সেই ইনিংস। ক্রিকেট বিশ্বে আয়ারল্যান্ডের আবির্ভাবের আগমনী বার্তা ছিল সেই জয়। 

    ২০০৬ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল ও’ব্রায়েনের, সঙ্গে ছিলেন উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ও এওইন মরগান। আয়ারল্যান্ড তখন আইসিসির সহযোগী সদস্য। পোর্টারফিল্ড এখন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক, মরগান অধিনায়ক ইংল্যান্ডের। কম সময় যায়নি, ২০০৭ সালের সেই সহযোগী দেশ এখন আইসিসির পূর্ণ সদস্য, খেলে ফেলেছে নিজেদের প্রথম টেস্টও। এবার নিজের সময়টা শেষ বলে ভাবলেন ও’ব্রায়েন। 

    ১০৩ ওয়ানডে খেলেছেন, আয়ারল্যান্ডের হয়ে শতাধিক ওয়ানডে খেলা চারজন ক্রিকেটারের একজন তিনি। সব মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ২১৬ বার। ২৪১ ডিসমিসাল নিয়ে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে সফল উইকেটকিপারও তিনি। উইকেটের পেছনে ক্রমাগত আওয়াজ করে নিজের উপস্থিতি জানান দিতেন প্রায় সবসময়ই। 

    কদিন পরই ৩৭ পূর্ণ হবে তার। ক্রিকেটকে উপভোগ করে যাওয়া ও’ব্রায়েন সঠিক সময় মনে করছেন এটিই, “ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আন্তর্জাতিক ও পেশাদার ক্রিকেট থেকে আমি অবসর ঘোষণা করছি। ১৬ বছর নিজ দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার, অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী আমি। সেসবের দিকে তাকালে আমার মুখে শুধু হাসিই থাকে।” 

    ক্রিকেটকেও সবসময়ই হাসিমুখেই নিয়েছেন তিনি, “আমি সবসময়ই মুখে হাসি নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি, উপভোগ করেছি। যাতে করে দর্শকরাও উপভোগ করতে পারে, আমার বা আমার প্রতিপক্ষের খেলা দেখে। আমার পারফরম্যান্সের পেছনে কঠোর পরিশ্রম ছিল, আমার ক্যারিয়ারের পরের ধাপে সেটিই করে যেতে চাই। গত দুই বছর ধরেই খেলার পাশাপাশি আমি স্পোর্টস এজেন্সির ব্যবসা শুরু করেছি।” 

    “ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের সবাইকেই ধন্যবাদ, ১৬ বছর শ্যামরক পরার সুযোগ দেওয়ার জন্য। অনেক প্রিয় স্মৃতি আছে আসলে। আমি শুধু এই দলকে শুভকামনা জানাই, এই সংস্থাকে শুভকামনা জানাই। আমি আগ্রহভরে তাদের খেলা দেখব।

    “ছোট ছোট ম্যাচ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতা, প্রথম টেস্ট খেলার অর্থ হলো, আমি আমার কল্পনার চেয়েও বেশি কিছু অর্জন করেছি। পেছন ফিরে তাকালে সবই সুখস্মৃতি।” 

    আয়ারল্যান্ড ছাড়াও ও’ব্রায়েন দীর্ঘ সময় খেলেছেন ইংলিশ কাউন্টি কেন্ট, নর্দাম্পটনশায়ার ও লেস্টারশায়ারে। বিদায়বেলায় দীর্ঘদিনের সতীর্থকে অভিবাদন জানিয়েছেন পোর্টারফিল্ড, “এমন একটা দারুণ ক্যারিয়ার যার, তাকে বিদায় বলাটা সবসময়ই কঠিন। আইরিশ ক্রিকেটের উত্থানে তার অনেক বড় অবদান। এড জয়েস, নিয়ালরা দেখিয়েছে, তরুণ আইরিশ ক্রিকেটারদের পক্ষে কী কী সম্ভব। কাউন্টিতেও তাদের ক্যারিয়ার দারুণ।” 

    ট্রেন্ট জনস্টন, উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, এড জয়েস, নিয়াল ও’ব্রায়েনের সঙ্গে তার ভাই কেভিন ও’ব্রায়েন- আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের দারুণ পথচলায় একেকটা ভিত গড়েছেন তারা। জনস্টন, জয়েসের পর এবার বিদায় বললেন নিয়াল। 

    আর তার ভাষায় রেখে গেলেন, “অনেক সুখস্মৃতি”। আইরিশ ক্রিকেটে, বিশ্ব ক্রিকেটে।