নাসিরের ফেরার লড়াই
২০১১ সালের আগস্টে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক একদিনের আন্তর্জাতিকেই অর্ধশতক পেয়েছিলেন। মোটামুটি ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে হয়ে উঠছিলেন বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ। ৩৬টি ওডিআই ইনিংসে ১টি শতক ও ৬টি অর্ধশতক, ৩৪.৮০ গড়ে রান করেছেন এক হাজারের কিছু বেশী। ডানহাতি অফব্রেক স্পিনার হিসেবে মাঝেমধ্যে বলও হাতে নিয়েছেন। তিনি নাসির হোসেন।
কিন্তু সোয়া তিন বছরের ক্যারিয়ারটা ভালো যাচ্ছে না অনেকদিন। ওয়ানডেতে রানের খাতায় সর্বশেষ ৫০ পেরিয়েছিলেন দেড় বছর আগে, ওই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই! এরপরের ১৪ ইনিংসে একের পর এক ব্যর্থতায় ঘরের মাঠের শেষ সিরিজে স্কোয়াড থেকেই বাদ পরে গেলেন! নাসিরের লড়াইটা এখন আসন্ন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত স্কোয়াডে যাওয়া পাওয়ার।
ফর্মহীনতার পুরো সময়টায় তাঁকে নিয়ে কম সমালোচনা হয় নি। সম্ভাবনাময় নির্ভরতার প্রতীক একজন ক্রিকেটারের এতো দ্রুত দলে ব্রাত্য হয়ে পড়াটা মেনে নেওয়া বেশ কঠিনই ছিল। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে সামর্থ্যের প্রমাণ না দেখাতে পারলে টিকে থাকার তো কোন বিকল্প উপায় নেই! নাসির হোসেন যে ফুরিয়ে যান নি সেটাই চলতি ঘরোয়া লিগে সম্ভব সামর্থ্যে প্রমাণের প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন তেইশ বছরের তরুণ।
চলতি প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে গ্রুপ পর্বের এগারো ম্যাচে করেছিলেন ২৬৯ রান, বল হাতে নেন ১১ উইকেট। আর আজ থেকে শুরু হওয়া সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীকে অনেকটা একাই জিতিয়েছেন। ৬৯ বলে অপরাজিত ৮২ রানের পথে খেলেছেন ৫টি করে চার ও ছয়ের মার। নীল-হলুদদের ৩ উইকেটের জয়ে ম্যাচসেরাও তিনিই।
আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ৩০ সদস্যের প্রাথমিক বাংলাদেশ দলে ঠাই মিলেছে নাসিরের। চূড়ান্ত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডেও হয়তো জায়গা মিলে যাবে। তবে মূল একাদশে নিয়মিত হওয়াটা খুব সহজ হবে না এ কথা বলাই বাহুল্য।
ব্যাটিং লাইন আপে ৭ নম্বরে নাসিরের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্বির রহমান । জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অভিষেক একদিনের আন্তর্জাতিকে করেন ক্যারিয়ারসেরা অপরাজিত ৪৪ রান। পরের চার ম্যাচে পারফরম্যান্স খুব আশা জাগানিয়া না হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে চলতি মৌসুমে কলাবাগানের হয়ে এ পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ৩২২। সুপার লিগের আজকের ম্যাচে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ৫৩ বলে ৭৫ রান।
শেষ পর্যন্ত নাসিরকে হয়তো তাই দলে জায়গা নিতে লড়তে হবে সাব্বিরের সাথেই। তবে অভিজ্ঞতা আর পরিপক্কতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিলে সম্ভবত নাসিরকেই এগিয়ে রাখতে হবে।