• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    দিবালার গোলে ওল্ড ট্রাফোর্ডে জয় জুভেন্টাসের

    দিবালার গোলে ওল্ড ট্রাফোর্ডে জয় জুভেন্টাসের    

    সঠিক সময়ে ছিলেন সঠিক জায়গাতেই, তাতেই গোল পেয়ে গিয়েছিলেন পাউলো দিবালা। ম্যাচের বয়স তখন মাত্র ১৭ মিনিট। যে ধারায় খেলা চলছিল তাতে ওটাই ম্যাচের শেষ গোল হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু হয়েছে শেষ পর্যন্ত তাই। ওল্ড ট্রাফোর্ডে মৌসুমের চতুর্থ হারটি এড়াতে পারেনি হোসে মরিনহোর দল। গ্রুপ এইচের ম্যাচে জুভেন্টাসের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। 

    ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফেরার দিন অনুমিতভাবেই সব আলো ছিল তার ওপর। ইউনাইটেড ছাড়ার পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে নিজের দ্বিতীয় যাত্রায় অবশ্য গোল পাননি তিনি। কিন্তু ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মুহুর্তে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল। ম্যাচের শুরু থেকে জুভেন্টাসকে সামলাতে থাকা ইউনাইটেডের রক্ষণ তখন কোনঠাসাই। ১৭ মিনিটে ডানদিক থেকে রোনালদো করলেন ক্রস, উদ্দেশ্য ছিলেন হুয়ান কুয়াদ্রাদো। কলম্বিয়ান উইঙ্গারের পায়ে বল যেতে না দেওয়ার পুরো কাজটাই ঠিক ঠাক করলেন ক্রিস স্মলিং। কিন্তু ভাগ্য আর ফিরে তাকালো না তার দিকে, সেই বল পেলেন থেকে দৌড়ে আসতে থাকা দিবালা। কেবল প্লেসমেন্টের দরকার ছিল, বাম পায়ে দিবালা করলেন মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের চতুর্থ গোল। ম্যাচের প্রথম সুযোগটাও তিনিই পেয়েছিলেন, কিন্তু উচ্চতার কারণে ১৩ মিনিটে কুয়াদ্রাদোর ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। আর ইউনাইটেড পুরো ম্যাচেই পিছিয়ে থাকলেও প্রথম অন টার্গেটে করা আক্রমণ ছিল তাদেরই। সেট পিস থেকে কঠিন হেড করতে হত পগবাকে, লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি, তবে ১৬ মিনিটে লক্ষ্যে হেড করতে পেয়েছিলেন তিনি।



    এরপর ম্যাচের আধঘন্টা পর্যন্তও জুভেন্টাসের প্রবল প্রতাপ সহ্য করে কিছু সময়ের জন্য ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল ইউনাইটেড। তবে সেটাও মিনিট পাঁচেকের জন্য, আক্রমণে উঠে সেখান থেকেও গোল হজমের দশা হয়েছিল মরিনহোর দলের। ভিক্টর লিন্ডেলফ সে দফায় দিবালার ক্রস আটকে দলের বিপদ বাড়তে দেননি। দলের বিপদ বাড়তে না দেওয়ায় অবদান রেখেছিলেন ডেভিড ডি গিয়াও। ৩৮ মিনিটে রোনালদোর ফ্রি কি থেকে নেওয়া আগুনে শট ঠেকিয়ে দেন, এরপর ফিরতি বলে মাতুইদিকেও গোলবঞ্চিত করেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক। জুভেন্টাসময় প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের গল্পটাও প্রায় একইরকম। ৫০ মিনিটে মাতুইদি নিশ্চিতভাবেই গোলের দিকে এগুচ্ছিলেন, রোনালদোকে পাসটা দিলেই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় জুভেন্টাস, লিন্ডেলফ বাধা হয়ে দাঁড়ালেন তখন।  দুই মিনিট পর ডি গিয়া আবারও গোলবঞ্চিত করেন রোনালদোকে।

    জুভেটাসের প্রায় সবগুলো আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন রোনালদোই। দিবালার সঙ্গে তার লিংক আপ প্লে বারবার ইউনাইটেডকে ভুগিয়েছে ম্যাচে। রোনালদো সেভাবে গোলের সুযোগ না পেলেও, দিবালা একাই ইউনাইটেডকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলতে পারতেন। এই ব্যাপারটাই ছিল না ইউনাইটেডের ভেতর। রোমেলু লুকাকু প্রায় একাই পড়ে থাকলেন। তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কিছু করতে পারেননি মাতা, মার্শিয়াল, র‍্যাশফোর্ডরা। দুই দলের পার্থক্যটা ভালোমতোই টের পাওয়া গেছে প্রথমার্ধেই, ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের ৭০ ভাগ বল দখলের বিপরীতে ইউনাইটেডে পেয়েছিল মাত্র ৩০ শতাংশ বল। ইউনাইটেডের হয়ে সেরা চেষ্টাটা করেছিলেন সাবেক এক জুভেন্টাস খেলোয়াড়, ডিবক্সের বাইরে থেকে বাম পায়ের শটে চমকে গিয়েছিলেন তিনি জুভেন্টাসকে। সেই শট বারপোস্টে লেগে অল্পের জন্য ইউনাইটেডকে ম্যাচে ফেরাতে পারেনি। টানা তিন ম্যাচে তাই ফিরে আসাও হয়নি ইউনাইটেডের।

     

    ইয়াং বয়েজের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল ভ্যালেন্সিয়া। তুরিনে জুভেন্টাসের সঙ্গে আরেকবার খেলার আগ পর্যন্তও তাই গ্রুপের দুইয়েই থাকল ইউনাইটেড। তিন ম্যাচে এক জয়, এক ড্র ও এক হারে তাদের পয়েন্ট ৪। আর তিন ম্যাচে তিন জয় নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রস্তুতিটা এখন থেকেই শুরু দিতে পারে মাসসিমিলিয়ানো আলেগ্রি।