• লা লিগা
  • " />

     

    মেসিকে নিয়ে রোনালদো চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন বাকিদের

    মেসিকে নিয়ে রোনালদো চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখলেন বাকিদের    

    ফ্রান্স ফুটবলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে অনেকটা চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ব্যালন ডির জয়ীদের তালিকায় এবারও আছে রোনালদোর নাম, তার সঙ্গে আছেন আরও অনেকে। কিন্তু রোনালদো মনে করেন পুরস্কারটা তারই প্রাপ্য। আর বাকিরা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে একই ধারায় খেলে যেতে পারবেন কী না তা নিয়েও সংশয় আছে রোনালদোর। 

    রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন রোনালদো এই গ্রীষ্মেই। ইতালিতে গিয়েও আছেন দারুণ ফর্মে। সিরি আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। বিশ্বকাপে নিজে দুর্দান্ত খেললেও দলকে অবশ্য দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা পার করিয়ে নিতে পারেননি। আগের মৌসুমে ৪৪ গোল করে রিয়াল মাদ্রিদকে জিতিয়েছেন টানা তৃতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। ব্যালন ডি'অরের সবচেয়ে বড় দাবিদার তাই রোনালদো। 

    "একই নামগুলো থাকবে। তবে আমার মনে হয় না এবার মেসি মঞ্চে উঠবে। ধরুন, সালাহ, মদ্রিচ, এমবাপ্পে, ভারান, গ্রিযমানদের কথাই- ফ্রেঞ্চরা বেশি থাকবে কারণ তারা বিশ্বকাপ জিতেছে। কিন্তু আমি আসলে দেখতে চাই আসলেই এই খেলোয়াড়েরা ১০ বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে শীর্ষে থেকে খেলে যেতে পারে কী না। যেমনটা মেসি আর আমি করেছি, এবং এখনও করে যাচ্ছি, আমরা সবসময়ই ছিলাম। গত ১০ বছর  ধরে আমরাই মঞ্চে ছিলাম। 

    "মানুষ আসলে ভাবছে একটা যুগের সমাপ্তি হবে। হয়ত অনেকে এটা পছন্দও করবে। কিন্তু ব্যাপারটা এরকম না। আমি ওখানেই থাকবই, আমার পুরস্কারটা প্রাপ্য। আমার পারফরম্যান্স আমার পক্ষে কথা বলছে, আমাকে বাদ দেবেন না যেন‍!"- ব্যালন ডিঅরের ৩০ জনের তালিকায় থাকা রোনালদো বলছেন নিজের যোগ্যতার কারণেই তার পুরস্কারটা জেতা উচিত।

     




    এবার ব্যালন ডি'অর জিতলে রোনালদো হবেন ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি এ শিরোপা জয়ী খেলোয়াড়।ডিসেম্বরের ৩ তারিখ প্যারিসে দেওয়া হবে এবারের ব্যালন ডি'অর পুরস্কার।

    "আমি অনেকবার বলেছি ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জেতার স্বপ্নে আমি আচ্ছন্ন হয়ে নেই। আমি জানি, আমি ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। অবশ্যই আমি ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জিততে চাই। সেটা অস্বীকার করলে মিথ্যা বলা হবে,''  বলছেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা।

    ৩৩ বছর বয়সে রোনালদো পাড়ি জমিয়েছেন জুভেন্টাসে। এই বয়সেও শীর্ষ পর্যায়ে টিকে থাকার পেছনে কারণ হিসেবে নিজের পরিশ্রমের কথাই বলছেন রোনালদো, "খেলার সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার এটাই, শীর্ষ পর্যায়ে টিকে থাকা। জিমে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা শরীর ঠিক রাখাটাও অতো কঠিন কিছু না। কঠিন হচ্ছে শীর্ষ পর্যায়ে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করতে চাওয়ার মানসিকতা, নিজের মান বজায় রাখা। এটা আসলেই কঠিন। ব্যাপারটা আরও কঠিন আপনি যখন ১২ বছর ধরে একটানা একই কাজ করে যাবেন, আপনাকে প্রতি মৌসুমেই শিরোপা জিততে হবে। 

    "আপনি কি জানেন ১০ বছর ধরে শীর্ষ পর্যায়ে একই ধারায় ফুটবল খেলেছে এমন লোকের সংখ্যা কত? এটা সহজেই গোণা যায়। আমি বলছি আপনাকে, জবাব হচ্ছে দুইজন। আমি আর মেসি।  এইজন্যেই সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত থাকতে হয়। কিছু পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। সবকিছুই আমার দরকার ছিল, এ কারণেই আমি সেরা খেলোয়াড়দের বইয়ে একটা নতুন পাতা যোগ করতে পেরেছি।"

    "৩৩ বছর বয়সে কেউ এক শীর্ষ ক্লাব থেকে অন্য শীর্ষ ক্লাবে ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে যায় না।এটা একটা পাগলামি! আমার বয়সী খেলোয়াড়েরা চীনে যায়, আরব আমিরাতে যায়, ভারতে যায়- তাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি আমি কথাগুলো। ওখানে গিয়েই তাদের ক্যারিয়ার শেষ হয়। তারা নিজেদের মান ধরে রাখতে চায় না। আমি আসলে গর্বিত যে আমি এভাবে চিন্তা করিনি, আমি আলাদা মানের, আলাদা অ্যাথলেট-বাকিদের ভিন্ন। আমি বলছি না আমি তাদের চেয়ে ভালো, শুধু বলতে চাই আমি আলাদা। হয়ত ১২ বছর একই ধারায় খেলে যেতে পারছি সে কারণেই।" 

    তাহলে বয়স কি কেবলই একটা সংখ্যা রোনালদোর কাছে? নিজেকে ২৩ বছর বয়সী মনে হয় কি? সেই প্রশ্নের জবাবে রোনালদো বলছেন, "হ্যাঁ, আপনার মানসিকতাই আসলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। বয়সের কথাও মাথায় আসে। কিন্তু সেটাই আমাকে আরও শীর্ষে যেতে পরিশ্রম করায়। আমি জানি সবকিছু একদিন শেষ হবে, আজ থেকে চার, পাঁচ বাঁ ছয় বছর পর...কে জানে! কিন্তু আমার ধরনই আমাকে আলাদা করে দেবে বাকিদের চেয়ে।"

    তবে শরীরের শক্তিও যে ফুরিয়ে আসছে সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন, তবে পরিসংখ্যানের ওপরই ভরসা রাখছেন রোনালদো, "কিছু দিক দিয়ে তো অবশ্যই কমে আসছে। তবে আপনি পরিসংখ্যান দেখুন। সেটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমি এখনও অসাধারণ খেলে যাচ্ছি। সংখ্যা তো আর মিথ্যা বলে না!"