ম্যালকমের হাসি কেড়ে নিলেন ইকার্দি
লিওনেল মেসি দলের সঙ্গে মিলানে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচে শেষ মুহুর্তে আর তাকে রাখা হয়নি দলে। সান সিরোতে বার্সার খেলাতেও সেই প্রভাব পড়ল অল্পই। কিন্তু গোল আর বার্সার মাঝে পার্থক্য হয়ে দাঁড়ালেন ইন্টারের গোলরক্ষক সামির হান্দানোভিচ। ৮৩ মিনিটে বদলি ম্যালকমের গোলে স্বস্তি ফিরেছিল বার্সায়। বার্সেলোনায় যোগ দিয়ে মাঠে নামারই সুযোগ পাচ্ছিলেন না ম্যালকল। ইন্টারের বিপক্ষেই নিজের জাত চেনালেন গোল করে। কিন্তু তার হাসিটা শেষ পর্যন্ত ম্লান হয়ে গেছে মাউরো ইকার্দির কাছে। ৮৭ মিনিটে গোল করে বার্সেলোনাকে জিততে দেননি ইকার্দি। তবে ড্র করেও দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে ফেলেছে বার্সা।
শেষ ১০ ম্যাচের ৯ টিতেই জিতে ইন্টার ছিল দারুণ ছন্দে। খেলাও নিজেদের মাঠে, তাই বার্সার জন্য কাজটা কঠিনই। ৩৩ সেকেন্ডেই মাতিয়াস ভেসিনো শট করে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানকে সান সিরোতে আমন্ত্রণটা জানিয়ে রাখেন। যদিও স্টেগানের জন্য সেই শট সেভক করা খুব কষ্টের কিছু হয়নি। বরং এরপর বাকি সময়ে অন্যপাশের গোলরক্ষকই কাটালেন ব্যস্ত সময়। মিনিট খানেক পরই উসমান ডেম্বলে হান্দানোভিচের পরীক্ষাটা নিয়ে নিলেন দূর থেকে শট করে। ১২ মিনিটে ডিবক্সের ঠিক বাইরে থেকে শট করে লুইস সুয়ারেজ অবশ্য হান্দানোভিচ পর্যন্ত যেতে পারেননি, মেরেছেন অনেক বাইরে দিয়ে। কিন্তু বার্সার আক্রমণের মূল নেতৃত্বটা দিয়েছেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারই। ম্যাচের আধ ঘন্টার না যেতেই আরও তিনবার ইন্টারকে প্রায় বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন সুয়ারেজ।
এর আগে অবশ্য ইন্টারের আসামোয়াও দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বাম দিক থেকে আসা ক্রসের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শট করতে পারেননি ডিবক্সের ভেতর থেকে। প্রথমার্ধে ইন্টারকে পিছিয়ে পড়তে হয়নি হান্দানোভিচের জন্যই। ৩৭ মিনিটে ফিলিপ কৌতিনহো আর ৪১ মিনিটে সুয়ারেজের শটে দারুণ দুইটি সেভ করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধেও হান্দানোভিচকে অবসরের সময় দেননি দুইজনের কেউই। সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন ডেম্বেলে, রাকিটিচরাও। পুরো ম্যাচে মোট ২৬ টি সুযোগ তৈরি করেছিল বার্সা। ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর প্রতিপক্ষের মাঠে কোনো দলের আক্রমণের সংখ্যার হিসেবে এটাই সর্বোচ্চ। পরে উপায় না দেখে ৮১ মিনিটে ম্যালকমকে নামিয়ে দেন বার্সা ম্যানেজার এর্নেস্তো ভালভার্দে। বাকি সবাই যখন ধুঁকছিলেন সেখানে ম্যালকম মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যেই ভেঙে দেন হান্দানোভিচের প্রতিরোধ।
ফিলিপ কৌতিনহো পাস থেকে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে দুইজন ইন্টার ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে বার্সাকে এগিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। জয়ের পাল্লা তখন অনেকটাই নুয়ে পড়েছিল বার্সার দিকে। দ্বিতীয়ার্ধে ইন্টার ছিল তুলনামূলক রক্ষণাত্মকই। কাউন্টার অ্যাটাকে প্রথমার্ধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেও, দ্বিতীয়ার্ধে অল্পই সুযোগ পেয়েছিল ইন্টার। মাতেও পলিটানো সুবর্ণ একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন, ভেসিনোও হাফ চান্স কাজে লাগাতে পারেননি বার্সার রক্ষণের ভুল থেকে।
ইন্টারের ভাগ্য ফেরে আরও একবার সেই ইকার্দিতেই। ৮১ মিনিটে বদলি হয়ে মাঠে নেমেছিলেন আন্তোনিও কান্দ্রেভাও। তিনিই শট করেছিলেন ডিবক্সের ভেতর থেকে, বার্সা ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে পারেননি সেই বল। পরে ইকার্দি পেয়ে যান সিক্স ইয়ার্ডের বক্সে। কম্পোসার বজায় রেখে এরপর বাকি কাজটা সারেন ইকার্দি দৃঢ়তার সঙ্গেই। চ্যাম্পিয়নস লিগে চার ম্যাচ খেলে ইকার্দি গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩। ইন্টারও ভর করছে তার কাঁধেই। তিনে থাকা টটেনহাম হটস্পারের চেয়ে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে ইন্টারের দ্বিতীয় রাউন্ড যাত্রাটাই বেশি সম্ভাব্য মনে হচ্ছে এখন।