• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    শ এর জন্য শুভকামনা

    শ এর জন্য শুভকামনা    

    গত মৌসুমে দলবদলের অন্যতম বড় নামই ছিলেন তিনি। সে সময়ের সবচেয়ে দামী টিন-এজ প্লেয়ার। ৮ বছর বয়স থেকেই সাউদাম্পটনের একাডেমীতে বেড়ে ওঠা। এখান থেকেই শুরু হয়েছিলো গ্যারেথ বেলেরও। সে সময়ের লেফট ব্যাক বেল এখন ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়। অনেকেই তাঁর মাঝে খুঁজে পান বেলের ছায়া। বেলের মতো তাঁর ট্রান্সফার নিয়ে পাতার পর পাতা লেখা না হলেও, ১৮ বছর বয়সী এক ডিফেন্ডারের গায়ে ৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের ট্যাগটা যে খুব বেমানান ছিল না তাঁর প্রমাণই রাখছিলেন এই মৌসুমে !

     

     


    লন্ডনের বাসিন্দা হওয়ায় চেলসির প্রতি একটা টানও ছিলো। অথচ সেই চেলসির বদলে যোগ দিলেন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। ডেনিস আরউইন, প্যাট্রিস এভরাদের অনুসরণ করেই নাকি ঐতিহ্য বজায় রাখতে গায়ে চড়ালেন ৩ নাম্বার জার্সি। ইঞ্জুরিতে প্রায় প্রথম মৌসুমটার অর্ধেকেই কেটে গেলো। ইঞ্জুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ভালো কিছু করার। এ মৌসুমেই জার্সি বদলে ২৩ নিয়েছিলেন। সেই জার্সিতেও কাটিয়ে ওঠা গেলো না দুর্ভাগ্য। প্রতিপক্ষের আক্রমণ নয়, শত্রু ছিলো ইঞ্জুরি। তাতেই কপাল পুড়লো আবার। গতকাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের "বি" গ্রুপের ম্যাচে ফিলিপস স্টাডিওতে ভয়ানক এক ইঞ্জুরি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লুক শ কে। সেই ইঞ্জুরিই এ মৌসুমে ইউনাইটেডের হয়ে প্রতিটি ম্যাচেই মাঠে নামা ডিফেন্ডারকে মাঠ থেকে ছিটকে দিলো অন্তত ৬ মাসের জন্য।

     

     


    খেলার ১৫ মিনিটের মাথায় পিএসভির সীমানায় বল নিয়ে আক্রমণের সময় প্রতিপক্ষের মরেনোর সাথে সংঘর্ষে ডান পায়ে মারাত্মক আঘাত পান শ। প্রায় ৯ মিনিট খেলা বন্ধ রেখে প্রাথমিক পরিচর্যা চলছিলো মাঠেই। টিভি রিপ্লেতে দেখেও ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করা যাচ্ছিল। স্টেডিয়াম ছাড়তে হয়েছে অক্সিজেন মাস্কে নিয়েই। পরে মেডিকেল পরীক্ষায় নিশ্চিত ডাক্তাররা নিশ্চিত করেন, লুক শ’এর পায়ের এক জায়গায় নয়, ভেঙ্গেছে দুই জায়গায়। পরবর্তী সার্জারির জন্য তাই হল্যান্ডেই থেকে যেতে হচ্ছে এই ২০ বছর বয়সী এই তরুণকে।

     

     


    নিজের এই দুঃসময়ে অবশ্য পুরো দলকে পাশে পাচ্ছেন তিনি। ডিপাই, স্মলিং, হেরেরা- সবাই নিজ নিজ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুভকামনা জানিয়েছেন এই ইংলিশকে। শুভকামনা জানাতে ভোলেনি তাঁর সাবেক ক্লাব সাউদাম্পটনও। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়ার সময় দাঁড়িয়ে এই তরুণকে সম্মান জানাতে ভোলেনি স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৩৫ হাজার দর্শক।

     

     


    মাঠেই নিজ প্লেয়ারের খোঁজ নিয়েছিলেন লুই ভ্যান গাল। ২-১ গোলের হারের সাথে লুক শ কে হারানোয় কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বাড়লো ডাচ ম্যানেজারের। বিশেষ করে এই মৌসুমের শুরু থেকেই অসাধারণ ফর্মে থাকা লুক শ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠছিলেন। এই সময়ে এমন একটি দুর্ঘটনা নিজের ক্যারিয়ারেও বিপর্যয় ডেকে আনলো। আগামী ইউরোতে জায়গা করে নিতে তাই ইঞ্জুরি থেকে ফিরেই আবার ফর্মে ফেরার যুদ্ধে নামতে হবে শ’কে।

     

     

     

    যার সাথে আঘাত লেগে এই দশা, সেই হেক্টোর মরেনো দেখিয়েছেন স্পোর্টসম্যানশিপের আরেক নিদর্শন। ঐ ঘটনার ঠিক পর পরই মরেনোর প্রতিক্রিয়াই বলে দিচ্ছিলো সব। দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া অবশ্য তেমন কিছুই আর করার নেই তাঁর এই মুহূর্তে।       

     

     

    সব মিলিয়ে কঠিন এক সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ইংলিশ এই ডিফেন্ডারকে। ৬ মাসের বিরতি দীর্ঘায়িত হলে সেটা আরও বাড়বে। সব বাধা জয় করে মাঠে আবারো ফিরে আসবেন তিনি, খেলবেন ফুটবল, লেফট উইং থেকে আবারো আক্রমণে ঢুকবেন ডি-বক্সে, স্লাইড ট্যাকেলে গোল বাঁচাবেন আবারো - এমন চাওয়া সব ফুটবল অনুরাগীরই।  

         

    লুক শ’র এর জন্য থাকলো শুভকামনা।