চ্যাম্পিয়ন আবাহনী, মাঠেই দুই দলের মারামারি, রেফারির চার লালকার্ড
ফেডারেশন কাপের ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে আবাহনী লিমিটেড। বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে একটা রেকর্ডও গড়ে ফেলেছে আবাহনী, মোহামেডানকে টপকে ফেডারেশন কাপের সবচেয়ে বেশি শিরোপা এখন ধানমন্ডির ক্লাবটির (১১)। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আবাহনীর রেকর্ড গড়ার রাতে অবশ্য বাংলাদেশের ফুটবলে যগ হয়েছে আরেকটি লজ্জার অধ্যায়। খেলা শেষের আগেই দুই দলের খেলোয়াড়েরা জড়িয়ে পড়েন হাতাহাতিতে, সেই বিবাদ ঠেকাতে মাঠে পুলিশকেও ঢুকতে হয়েছিল। পরে রেফারি দুই দলের দুইজনকে, মোট ৪ টি লাল কার্ড দেখান। খেলার শেষদিকে তাই দুইদল খেলেছে ৯ জন নিয়ে।
শুরুতে পিছিয়ে পড়েও আবাহনীর শিরোপা জয়
বসুন্ধরা কিংসই শুরুটা দারুণ করেছিল। খেলার শুরুর দিকেই ড্যানিয়েল কলিনদ্রেস এগিয়ে দিতে পারতেন কিংসদের। কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড অবশ্য সে দফায় পারেননি। রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা কলিনদ্রেস এরপর ২১ মিনিটে গোল করে সেই আফসোস ভোলেন। গোল হজমের আগেই অবশ্য বড় একটা ধাক্কা খেয়েছিল আবাহনী, ১৬ মিনিটে ডিফেন্ডার তপু বর্মণ মাঠ ছাড়েন ইনজুরি নিয়ে। প্রথমার্ধে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ফেরে আবাহনী। ৫০ মিনিটে লং থ্রো থেকে সানডে চিজোবা গোল করে আবাহনীকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন। শেষদিকে ৩ মিনিটের ব্যবধানে আরও দুই গোল করে বসুন্ধরা ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় আবাহনী। ৭৯ মিনিটে সোহেল রানার বানিয়ে দেওয়া বলে গোল করে চিজোবা হয়ে যান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা। দুই মিনিট পর বেলফোর্ট করেন আবাহনীর হয়ে তৃতীয় গোল।
মারমুখী খেলোয়াড়, রেফারির চার লাল কার্ড, মাঠের ভেতর ক্লাব কর্তারা
দুইদলের ঝামেলা শুরু ৮৮ মিনিটে। বসুন্ধরার ডিফেন্ডার নাসিরুদ্দিন চিজোবাকে কনুই মেরে ফেলে দিয়েছিলেন। তাতে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়রা। এরপর মাঠের ভেতর অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকেছিল, যদিও চিজোবা পরে মাঠ ছেড়েছেন স্ট্রেচারে চেপেই। এসময় দুই ক্লাবের কর্মাকর্তাদের দুই, একজনও ঢুকে পড়েন মাঠে। চিজোবা মাঠ ছাড়ার পর অবশ্য পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়, রেফারি আবারও খেলা শুরু করেন। অ্যাডিশনাল টাইমও যোগ করা হয় ৭ মিনিট।
কিন্তু ফ্রিকিক থেকে খেলা শুরু হওয়ার পর মাঠ পরিণত হয় কুরুক্ষেত্রে। আবাহনীর জীবন আর বসুন্ধরার শুশান্ত বল দখলের সময় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর হুট করে পেছন থেকে এসে কুংফু স্টাইলে শুশান্তকে উড়ে গিয়ে লাথি মারেন আবাহনীর মামুন মিয়া। পরে বসুন্ধরার সবুজও পালটা আঘাত করেন মামুনকে। এই ঘটনার রেশ ধরে মাঠের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে পুলিশের একটি দলও ঢুকে গিয়েছিল মাঠে। যদিও রেফারির অনুরোধে পরে তারা মাঠ ছাড়েন। দুই ক্লাবের কর্তা আর খেলোয়াড়দের বিবাদ চলে প্রায় মিনিট ছয়েক। এরপর বাকিরা মাঠ ছাড়ার পর রেফারি শুশান্ত, জীবন, মামুন, সবুজদের লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। শেষে অবস্থা কিছুটা অনুকূলে আসার পর বাকি সময়ের খেলা পরিচালনা করেন রেফারি। যদিও শেষ বাঁশি বাজার পরার কড়া পাহারায় মাঠ ছাড়তে হয়েচেহ রেফারি ও তার সহকারিদের।
পরিস্থিতি অবশ্য আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ম্যাচ শেষে গ্যালারির এক অংশ দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন দর্শকেরা। ভাগ্য অবশ্য ভালো, তারাও মাঠে নেমে মারমুখী হয়ে ওঠেননি!