এইবারে তিন গোল হজম করে হারল সোলারির রিয়াল
শুররু দিকে দায়িত্বটা পেয়েছিলেন ৪ ম্যাচের জন্য। ভাঙাচোরা এক রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে জিতেছিলেন প্রতিটি ম্যাচই। পুরষ্কারস্বরূপ রিয়ালের হটসিটটা ৩ বছরের স্থায়ী চুক্তি পেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কাছ থেকে। এইবারের বিপক্ষে তাই ফেভারিট ছিল ফর্মে থাকা রিয়ালই। ইউরোপের চ্যাম্পিয়নদের লা লিগায় কখনও হারায়নি এইবার। কিন্তু ইপুরুয়া স্টেডিয়ামে আজ যা হল, তা হয়ত প্রত্যাশা করেননি খোদ এইবারের কট্টর সমর্থকেরাও। রিয়ালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে এইবার। দায়িত্বটা পাকাপাকিভাবে পাওয়ার প্রথম ম্যাচেই বড় হার বরণ করে নিতে হল সোলারিকে।
৩-০ গোলে হারলেও ব্যবধানটা হতে পারত আরও বড়। পুরো ম্যাচ রিয়ালকে দমিয়ে রাখা এইবার বেশকিছু সুযোগও হাতছাড়া করেছে। রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াও ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। ইপুরুয়াতে আজ রিয়ালের মূল একাদশে ফিরেছিলেন রাফায়েল ভারান, মার্সেলো , মার্কো আসেন্সিও এবং দানি সেবায়োস। নিজেদের মাঠে ভাগ্য সহায় হলে ম্যাচের ৩ মিনিটেই লিড নিতে পারত তারা। কিন্তু গোলের প্রায় ৩০ গজ থেকে কিকে গার্সিয়ার দুর্দান্ত ভলি কর্তোয়াকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় রিয়ালের ক্রসবারে। এর মিনিট দুয়েক পর গ্যারেথ বেল এইবারের জালে বল পাঠালেও অফসাইডে বাতিল হয় গোলটি। ম্যাচের ১০ মিনিটে আবারও গোলবঞ্চিত হতে হয় রিয়ালকে। আসেন্সিওর ক্রস থেকে করিম বেনজেমার শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন এইবার ডিফেন্ডার হোসে ভালদেজ। তবে ১৭ মিনিটে আর দমিয়ে রাখা যায়নি এইবারকে। দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণ থেকে কিকোকে ফিরিয়ে দেন কর্তোয়া। কিন্তু ফিরতি বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি গঞ্জালো এস্কালান্তে। প্রথমে অফসাইডের ঘোষণা দিলেও ভিডিও রেফারির সিদ্ধান্তে ঠিকই গোলের বাঁশি দেন মূল রেফারি।
মাঝমাঠে কাসেমিরোর অভাবটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে রিয়াল। তার বদলি নামা সেবায়োসকে রীতিমত পুরোটা ম্যাচই নাচিয়ে ছেড়েছে এইবারের ফুটবলাররা। ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর এবারই প্রথম লা লিগায় টানা ১১ ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচে গোল হজম করল রিয়াল। প্রথমার্ধের বাকি সময় রিয়াল চেষ্টা করেছে ঠিকই, কিন্তু এইবারের রক্ষণভাগকে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি একেবারেই। উলটো প্রতি-আক্রমণে এইবারকেও মনে হচ্ছিল ভয়ঙ্কর। প্রথমার্ধে মাত্র পাঁচবার শট নিয়েছিল রিয়াল, যা সোলারির অধীনে যেকোনো অর্ধে তাদের সর্বনিম্ন টালি।
প্রথমার্ধে এইবারের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। বার্সেলোনা থেকে ধারে আসায় আজকের ম্যাচটা একটু বেশিই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল মার্ক কুকুরেয়ার জন্য। প্রথম গোল এসেছিল তার পাস থেকেই। ৫১ মিনিটে আলভারো ওদ্রিওজোলা থেকে বল কেড়ে নিয়ে সার্জি এনরিককে পাস বাড়ান তিনি। ডানপায়ের জোরাল শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে ভুল করেননি এনরিক। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া রিয়ালের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন গার্সিয়াই। ৫৮ মিনিটে আবারও প্রতি-আক্রমণে বাঁ-প্রান্তে বল পান কুকুরেয়া। আবারও তার ক্রস ঠেকাতে ভুল করেন রামোস, ভারান। গোলের সামনে থেকে ডানপায়ের আলতো টোকায় বল জালে পাঠান গার্সিয়া। ব্যবধান ৩-০ হওয়ার পর ম্যাচে ফেরার ক্ষীণ সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায় রিয়ালের। ম্যাচে বাঁচাতে ইস্কোকে নামিয়েও লাভ হয়নি সোলারির। উলটো কুকুরেয়া, ওরিয়ানাদের ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে রিয়ালের রক্ষণভাগকে। সোলারির ‘তুরুপের তাস’ ভিনিসিয়াস জুনিয়রও পারেননি অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে। শেষ পর্যন্ত আবারও এক অপ্রত্যাশিত হারে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হল রিয়ালকে।