• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    বিষণ্ণতায় আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন ইনিয়েস্তা

    বিষণ্ণতায় আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলেন ইনিয়েস্তা    

    স্পেনের হয়ে ইউরো জয়, বার্সেলোনার হয়ে ইতিহাস গড়া ট্রেবল মৌসুম কাটানোর পরও বিষণ্ণতা ঘিরে ধরতে পারে কাউকে? আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার সেক্সটা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাতকার আরও একবার মনে করিয়ে দিচ্ছে, বিষণ্ণতা জেঁকে বসার সঙ্গে আসলে জীবনের সাফল্য-ব্যর্থতার সম্পর্ক থাকে না সবসময়।

    বার্সেলোনা ছেড়ে ইনিয়েস্তা এখন খেলছেন জাপানের ক্লাব ভিসেল কোবের হয়ে। ২০১৬ সালে নিজের বই, 'দ্য আর্টিস্ট : বিয়িং ইনিয়েস্তা' বইতে জানিয়েছিলেন, ড্যানিয়েল জর্কের মৃত্যু তাঁর জীবনের কতোখানি প্রভাব ফেলেছে। বিষণ্ণতার সঙ্গে বন্ধুর হুট করে চলে যাওয়ার পর জীবনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন বলে জানিয়েছেন ইনিয়েস্তা। এমন কী আত্মহত্যার কথাও মাথায় ঘুরছিল তাঁর।  

    "হ্যাঁ, আত্মহত্যার কথাও ভেবেছিলাম আমি। জীবনের সবচেয়ে বাজে দিনগুলোর কথা বলছি আমরা। তখন আপনি আর আপনি থাকবেন না, নিজেকেই চিনতে পারবেন না।

    "মানসিকভাবে নড়বড়ে হয়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ থাকে না জীবনের ওপর। মুহুর্তগুলোও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আর ওইসব মুহুর্তে আপনার মাথায় এসব চিন্তাই ঘুরবে। সবকিছুর একটাই কারণ, আপনি আসলে ভালো নেই।"

    "বার্সার মনোবিদের সঙ্গে আমার একটা সময় নির্ধারণ করা ছিল। আমার কাউন্সিলিং​য়ের সময় ছিল বিকাল চারটা। আমি কখনোই সময়টা ভুলতাম না। এমনকি চারটার আগে গিয়েই সেখানে উপস্থিত হতাম।

    "সবকিছুর শুরু বার্সার হয়ে ট্রেবল জেতার পর থেকেই। চেলসির বিপক্ষে সেমিফাইনালে গোল করলাম, এরপর চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলাম, মৌসুম শেষে তিন শিরোপা জিতলাম- অবিশ্বাস্য একটা বছর গেলো। এরপর গ্রীষ্ম এলো, আর আমার হুট করেই খারাপ লাগতে শুরু করল।

    "কিছু একটা ঠিক ছিল না, সেটা কী তা আমিও জানতাম না। শারীরিক পরীক্ষা করালাম, তাতে দেখা গেল শরীর সুস্থ্যই আছে। কিন্তু আমি তো আসলে ভালো নেই। এরপর আপনি একটা চক্রের ভেতর পরে গেলাম।  কেমন একটা শূন্যতা কাজ করত। এরপর ডানি জর্কের সেই ঘটনা।

    ইনিয়েস্তার বন্ধু জর্ক এস্পানিওলের অধিনায়ক ছিলেন সেসময়য়। হুট করেই মারা যান তিনি। পরের বছর বিশ্বকাপ জেতানো গোল করে  ইনিয়েস্তা সেটা উৎসর্গও করেছিলেন বন্ধুকে। কিন্তু তাঁর আগে ইনিয়েস্তাকে পাড়ি দিতে হয়েছে লম্বা পথ। সেই লড়াইয়ের কথাই জানাচ্ছেন তিনি, "আমার মনে আছে, প্রাক মৌসুম শেষে একদিন বাড়ি ফিরেছি আমি। ফিরেই আমার ডাক্তার পূর্নাকে ফোন দিলাম। তাঁকে বললাম, তখনই আমার সঙ্গে দেখা করতে। সেদিন উনি দেখা না করলে আমি কী করে বসতাম তা আমি নিজেও জানিনা। আমি আর আমি ছিলাম না।

    "ওইদিনই আবার বিকেলে ট্রেনিংয়ে গিয়ে আমি তাঁকে বলেছিলাম, আমার সাহায্য লাগবে। আমার কিছু একটা লাগত নইলে ওই দুঃসহ সময় আমি কাটিয়ে উঠতে পারতাম না।"