বড় মঞ্চে এসে আত্মপ্রকাশ
কয়েক ঘণ্টা আগেই জ্বরের ঘোরে সারা রাত ছটফট করেছেন। সকালে অধিনায়কের কাছে গিয়ে বললেন কিছুক্ষণ পর শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটা তিনি মনে হয় খেলতে পারবেন না। অধিনায়কের প্রত্যুত্তরটা ছিল এরকম, “অন্য কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করোনা, তুমি শুধু ভাবো কিভাবে এই ম্যাচটা তুমি খেলবে।" ম্যাচটা ছিল একটা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল। জ্বরগ্রস্ত সেই তরুণ খেলোয়াড় ম্যাচটি খেলেছিলেন, আর হাত থেকে প্রায় বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচটি জিতিয়ে প্রথমবারের মত দলকে তুলেছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনালে।
আলোচ্য ব্যক্তির নাম ইনজামাম উল হক। আর অধিনায়ক হলেন ইমরান খান। নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন কোন ম্যাচটির কথা বলা হচ্ছে। হ্যাঁ, ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ছিল সেটি।
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সেদিন প্রথমে ব্যাট করে অধিনায়ক মার্টিন ক্রোর ৯১ রানে ভর করে পাকিস্তানকে ২৬৩ রানের লক্ষ্য দেয় নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৩৫তম ওভারে গিয়ে ‘ইন-ফর্ম’ রমিজ রাজা ও ইমরান খান সহ চার ব্যাটসম্যানকে হারানো পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় মাত্র ১৪০। শেষ ১৫ ওভারে জিততে হলে ১২৩ রান করতে হত তাঁদের, এখন থেকে ২৩ বছর আগে যেটাকে একরকম অসম্ভবই ধরে নেয়া হত। এই সময় উইকেটে আসেন ২২ বছর বয়সী ইনজামাম, যিনি এর আগে একটা ম্যাচেও করতে পারেননি বলার মত কোন পারফরমেন্স।
উইকেট, বোলার পর্যবেক্ষণ, কিংবা কোনরকম থিতু হওয়া- এসব নিয়ে থোড়াই চিন্তা করে ‘এখনকার টি-টুয়েন্টি’ খেলতে শুরু করলেন ইনজি। বড় ঝড়টা গেছে তরুণ ক্রিস হ্যারিস আর অফ-স্পিনার দীপক প্যাটেলের উপর দিয়ে। একটা উদাহরণ তাঁর খুনে মানসিকতাটা কিছুটা তুলে ধরবে। ইনজামাম নামার আগে প্যাটেলের ফিগার ছিল এরকম ৮-১-২৮-১, যেটা শেষে এরকম রূপ নেয় ১০-১-৫০-১।
৭ চার ও ১ ছয়ে ৩৭ বলে ৬০ করে রান আউট হয়ে তিনি যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরছেন, পাকিস্তান তখন জয়ের বন্দরের খুব কাছাকাছি।