• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    অনেক 'প্রথম'-এর দিনে স্পার্সকে হারাল আর্সেনাল

    অনেক 'প্রথম'-এর দিনে স্পার্সকে হারাল আর্সেনাল    

    পুরোটা মৌসুমেই প্রথমার্ধে বাজে খেলাটা যেন ‘রুটিন’ই বানিয়ে ফেলেছিল তারা। শুধুমাত্র প্রথমার্ধে পাওয়া পয়েন্ট হিসেব কজরলে টেবিলের ১৯ নম্বরে থাকত উনাই এমেরির দল। আজও নিজেদের মাঠ এমিরেটসে লিড নিয়েও পিছিয়ে পড়া আর্সেনালকে চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছিল টটেনহাম হটস্পার্সের বিপক্ষে আরও এক হার। কিন্তু এই মৌসুমে প্রথমার্ধে যতটা বিবর্ণ ছিল তারা, দ্বিতীয়ার্ধে ছিল ঠিক ততটাই উজ্জ্বল। স্পার্সের বিপক্ষে আবারও প্রমাণ হল এমনটা। গোল করে দলকে জেতানোর জন্যই দলে ভেড়ানো হয়েছিল তাকে, নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে ঠিক তা-ই করলেন পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াং। পিছিয়ে পড়েও গ্যাবন স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে টটেনহামকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল। নিজের প্রথম ‘নর্থ লন্ডন ডার্বি’তেই জয়ের দেখা পেলেন উনাই এমেরি।

    এমিরেটস স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর আগেই এক ধাক্কা খায় আর্সেনাল। পিঠের ইনজুরিতে পড়ায় ম্যাচের কিছুক্ষণ আগে ছিটকে যান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিল। মাঝমাঠের প্রাণভোমরাকে ম্যাচের আগে হারিয়ে কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাসে টান পড়ে আর্সেনালের। তবে ৮ মিনিটে লিড নেওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ করে দেন স্পার্স ডিফেন্ডার ইয়ান ভার্টনহেন। আর্সেনাল অধিনায়ক গ্রানিত শাকার কর্ণার ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল হাতে লাগান তিনি। পেনাল্টি পায় আর্সেনাল। ১২ গজ থেকে হুগো লরিসকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি অবামেয়াং। এরপর থেকেই মূলত ম্যাচে ছড়ি ঘোরাতে থাকে আর্সেনাল। ১৯ মিনিটে ব্যবধানটা আরেকটু হলেই দ্বিগুন করত ‘গানার’রা। তবে সেড কোলাসিনাচের মাইনাস থেকে অ্যালেক্স ইওবির শট দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন লরিস। শুরুরু দিকে আর্সেনালের আক্রমণজোয়াড় সামলে ম্যাচে ফিরতে থাকে স্পার্স।

     

     

    সমতায় ফিরতেও খুব একটা দেরি করেনি তারা। তবে এজন্য আর্সেনাল গোলরক্ষক বার্নড লেনোকে ধন্যবাদ জানাতেই পারে স্পার্স। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের ফ্রিকিকে থেকে এরিক ডায়ারের নিরীহদর্শন হেড তার হাত ফসকে জড়ায় আর্সেনালের জালে। গোলের পর ডায়ারের উদযাপনকে ঘিরে প্রচন্ড বাগবিতণ্ডা এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’দলের ফুটবলাররা। মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসতে হয় স্পার্স ম্যানেজার মরিসিও পচেত্তিনোকেও। সমতায় ফিরেই থেমে থাকেনি স্পার্স, মিনিট চারেক পর লিডটাও নিয়েছে তারা। ৩৪ মিনিটে হিউঙ-মিন সনকে ডিবক্সে ফাউল করে স্পার্সকে পেনাল্টি উপহার দেন আর্সেনাল ডিফেন্ডার রব হোল্ডিং। ১২ গজ থেকে দলকে লিড এনে দেন হ্যারি কেইন। এমানুয়েল আদেবায়োরের সাথে প্রিমিয়ার লিগের নর্থ লন্ডন ডার্বির সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে গেলেন রাশিয়া বিশ্বকাপের ‘গোল্ডেন বুট’ জেতা কেইন (৮)।

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অ্যারন রামসি এবং আলেকজান্ডার লাকাজেতকে নামিয়ে দেন এমেরি। ফলাফলটাও আসে হাতেনাতে। ৫৬ মিনিটে রামসির পাসে ডিবক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক বাঁকান শটে দলকে সমতায় ফেরান অবামেয়াং। সমতায় ফেরার মিনিট চারেক পর আরেকটু হলেই আবারও লিড নিত আর্সেনাল। ৬০ মিনিটে স্কোদরান মুস্তাফির শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ড্যালে আলি। সমতায় ফেরার পর সমর্থকদের জোরাল অনুপ্রেরণার জোরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি আর্সেনালকে।

    লিড হারিয়ে আর ম্যাচেও ফেরা হয়নি স্পার্সের। ৭৪ মিনিটে ডিবক্সের বাইরে থেকে বাঁ-পায়ের শটে আর্সেনালকে লিড এনে দেন লাকাজেত। গোলের পর বুনো উল্লাসে ফেটে পড়ে সমগ্র এমিরেটস স্টেডিয়াম। পুরোটা ম্যাচ মাঝমাঠে রীতিমত অপ্রতিরোধ্য ছিলেন তিনি। প্রায় একাই আটকে দিয়েছেন এরিকসেন, আলি, সনদের। ৭৭ মিনিটে আর্সেনালের জয় নিশ্চিত করেন সেই লুকাস তোরেইরাই। নিজের প্রথম ডার্বিতে গোল করেছেন, হয়েছেন ম্যাচসেরা। দ্বিতীয়ার্ধে বলতে গেলে কিছুই করতে পারেননি কেইনরা। লুকাস মউরা, হ্যারি উইঙ্কসদের নামিয়েও কাজ হয়নি পচেত্তিনোর। উলটো ৮৫ মিনিটে মড়ার ওপর কাঁড়ার ঘা হয়ে আসে ভার্টনহেনের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া। শেষ পর্যন্ত মর্যাদার লড়াইয়ে জিতেই ফিরেছে আর্সেনাল, উঠে এসেছে নিজেদের চিরপরিচিত টেবিলের চার নম্বরে।