• লা লিগা
  • " />

     

    মেসির জোড়া ফ্রি-কিক গোলে ডার্বিতে বার্সার বড় জয়

    মেসির জোড়া ফ্রি-কিক গোলে ডার্বিতে বার্সার বড় জয়    

    ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ফ্রি-কিক থেকে গোল করতেন কম। গত কয়েক মৌসুমে সেটাও রপ্ত করেছেন ভালোভাবে। লা লিগায় এক ম্যাচে দুইবার ফ্রি-কিক থেকে গোল করা হয়নি, সেটাও করে ফেললেন এস্পানিওলের বিপক্ষে। লিওনেল মেসির জোড়া গোলে ভর করে কাতালান ডার্বিতে বার্সেলোনা জিতল ৪-০ গোলে।

    সপ্তাহের শুরুতে ব্যালন ডি'অরের সেরা খেলোয়াড়দের তালিকায় তিনেও জায়াগা হয়নি। ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী পেলেও পরে বলেছেন, মেসির কৌশল একটাই, বাম পায়ে গোল করা। এসব নিয়ে গত কয়েকদিনে কথা হয়েছে অনেক। মেসির কান পর্যন্তও কি পৌঁছেছে সেসব? এস্পানিওলের বিপক্ষে মেসির খেলার ধরন দেখে জবাবটা পেয়ে যাওয়ার কথা। যদিও দুই গোলই করেছেন বাম পায়ে। কিন্তু চেষ্টা করেছেন ডান পায়েও, দুইবার হেডেও গোল পেতে পারতেন মেসি। রক্ষণেও সাধারণত এতোটা মনোযোগী দেখা যায় না মেসিকে, এস্পানিওলের বিপক্ষে সেটাও করেছেন তিনি। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতাতেই যেন নেমেছিলেন মাঠে! 

     


    এস্পানিওলের মাঠে গোলের খাতাও খুলেছিলেন বার্সা অধিনায়ক। ১৭ মিনিটে নিজেই ফ্রি-কিক আদায় করেছিলেন ডিবক্সের খানিকটা বাইরে থেকে। এরপর স্বমহিমায় জালে বল জড়িয়েছিলেন নিখুঁত ফ্রি-কিক থেকে। মেসির প্রথম গোলের পর প্রথমার্ধ শেষের আগেই আরও দুইবার এস্পানিওল গোলরক্ষককে বল কুড়াতে হয়েছে নিজের জাল থেকে। ফিলিপ কৌতিনহো ছিলেন না একাদশে। মেসি-সুয়ারেজের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন উসমান ডেম্বেলে। তিনজনই গোল করেছেন। ২৬ মিনিটে বার্সার দ্বিতীয় গোলেও থাকল মেসির অবদান। আক্রমণের শুরুটা করেছিলেন তিনিই, এস্পানিওলের দুই-তিনজন খেলোয়াড়ের ট্যাকলের পরও পায়ে বল রেখেছিলেন। ডিবক্সের সামনে থেকে এরপর বামদিকে থাকা ডেম্বেলেকে বল দেন মেসি। ডেম্বেলে ঢুকে পড়েন ডিবক্সের ভেতর, প্রথম টাচে বল রিসিভ করে টার্ন নিয়ে, পরের শটেই করেন গোল। 

    ম্যাচে মেসির অ্যাসিস্ট ওই একটাই। তবে ৩৬ মিনিটে এস্পানিওল ডিফেন্ডারদের মাথার ওপর দিয়ে তুলে মারা মেসির বলে সুয়ারেজ ভলিটা ঠিকমতো করতে পারলে সংখ্যাটা বাড়ত আরও। বারপোস্টে বাধা পায় সুয়ারেজের সেই শট। মিনিট খানেক পর মেসিও মিস করেন সহজ সুযোগ। ইভান রাকিটিচ প্রথমে হেড করেছিলেন, সেটা গোলরক্ষক ডিয়েগো আলভেজ ঠেকিয়ে দেন সহজেই। কিন্তু বল যায় মেসির কাছে, লাফিয়ে হেড করে মেসিও পার করতে পারেননি বারপোস্ট বাধা। প্রথমার্ধ শেষের আগেই অবশ্য তৃতীয় গোল পেয়ে যায় বার্সা। ডেম্বেলের থ্রু পাস থেকে সুয়ারেজ চলে যান বারপোস্টের কোণাকুণি জায়গায়। কঠিন অ্যাঙ্গেল থেকে করেন শট। লোপেজের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল যাওয়ার সময় কিছুটা দিক পরিবর্তন করে সেই শটই গোলে পরিণত হয় পরে।  

    ডার্বি ম্যাচটা যেমন হওয়ার কথা ছিল তেমন হয়নি। এস্পানিওলকে কোনো সুযোগই দেয়নি বার্সা। বলার মতো আক্রমণও নেই তাদের। মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানকে তাই পুরো ম্যাচে একবারও ধন্ধে ফেলতে পারেনি এস্পানিওল। দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে একবার গোল করেও পরে ভিএআরের জন্য বাতিল হয় সেটা, খালি হাতেই ফেরে ঘরের দল।

    অন্যদিকে প্রথমার্ধেই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলা বার্সার আক্রমণও কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৫ মিনিটে মেসিই আবার জাগিয়ে তোলেন দলকে। এবার ফ্রি-কিক পেলেন ডিবক্সের বাম দিকটায়, আগেরবারের মতো ২৫ গজের বেশি দূর থেকে। দিক বদলালো কিন্তু ফল থাকল একই।  মিনিট পাঁচেক পর হ্যাটট্রিকটাও পেয়ে যেতে পারতেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। মাঠেই নেমেই কৌতিনহো শট করেছিলেন গোলে, রিবাউন্ডে বল পেয়েছিলেন আর্তুরো ভিদাল। তার হেড এস্পানিওল গোলরক্ষকের কাছ থেকে ফেরত আসার মেসিও করেছিলেন হেড, কিন্তু এবার আর লক্ষ্যেই গেল না সেটা। তাই হ্যাটট্রিকও পাওয়া হয়নি মেসির। তবে ১৩ ম্যাচে ১১ গোল করে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার জায়গাটা আপাতত নিজের করে নিয়েছেন তিনি। জিরোনার ক্রিশ্চিয়ান স্টুয়ানিও একই সংখ্যক গোল করে অ্যাসিস্টে পিছিয়ে থেকে আছেন দুইয়ে।

    ১৫ ম্যাচ শেষে লা লিগার শীর্ষ স্থানেও পরিবর্তন হয়নি। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে সবার ওপরে। এর আগে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বার্সাকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল দুইয়ে থাকা সেভিয়া। সুযোগ পুরোটাই কাজে লাগিয়েছে এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ৩-০ গোলে দেপোর্তিভো আলাভেসকে হারিয়ে সেভিয়ার সমান ২৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে।