কিক অফের আগে: দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে কার কী সমীকরণ?
সি গ্রপের লড়াইটা জমজমাট হবে, সেটা ধারণা করা হয়েছিল গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের পর থেকেই। শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছে সেটাই, গ্রুপের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা নিশ্চিত নয় কোনো দলেরই! লিভারপুল, নাপোলি ও পিএসজি, শেষ ষোলতে যাওয়ার জন্য গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামবে তিন ক্লাব। আজ অ্যানফিল্ডে মুখোমুখি লিভারপুল ও নাপোলি, কাল মাঠে নামবে পিএসজি। কোন দুই দল যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে? কোন ক্লাবেরই বা শেষে গিয়ে মন ভাঙবে?
বিদায়ঘন্টা বেজে যাবে লিভারপুলের?
৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সি গ্রুপের তৃতীয় স্থানে আছে লিভারপুল। ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নাপোলি, ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে পিএসজি। পরের রাউন্ডে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখতে নাপোলির বিপক্ষে জয়ের কোনো বিকল্প নেই ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের সামনে। গ্রুপপর্বের প্রথম লড়াইয়ে নাপোলির কাছে ১-০ গোলে হেরেছিল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে সেই হারের বদলাটা অবশ্যই নিতে চাইবে তাঁরা। অবশ্য শুধু নাপোলিকে হারালেই হবে না, সমীকরণের দিকেও নজর রাখতে হবে লিভারপুলকে।
লিভারপুল যদি নাপোলিকে ১-০ গোলে হারায়, তাহলেই তাদের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে কপদের। কিন্তু ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতলে আর অন্য ম্যাচে পিএসজি ড্র করলে, লিভারপুলকে অ্যাওয়ে গোলের হিসাবে বিদায় নিতে হবে। সেক্ষেত্রে নাপোলি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠে যাবে শেষ ষোলতে। নাপোলিকে যদি আজ লিভারপুল দুই অথবা বেশি গোলের ব্যবধানে হারায়, তাহলে পিএসজি নিজেদের ম্যাচে জিতলেও পরের রাউন্ড নিশ্চিত হবে লিভারপুলের, তখন বাদ পরবে নাপোলি। আর রেড স্টার বেলগ্রেডের সাথে পিএসজি হেরে গেলে যেকোনো ব্যবধানের জয়ই লিভারপুলকে নিয়ে যাবে শেষ ষোলতে। সেক্ষেত্রে বাদ পরবে পিএসজি।
যদি নাপোলির বিপক্ষে লিভারপুল জেতে ও পিএসজি ড্র করে, তিন দলের পয়েন্টই দাঁড়াবে ৯। সেক্ষেত্রে গ্রুপের শীর্ষে থেকেই দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে ৩-৪ বা ৪-৫ বা ৫-৬ ব্যবধানে না হারলে নাপোলি বাদ পড়বে, দ্বিতীয় হবে পিএসজি। নাপোলির জন্য তাই সহজ সমীকরণ হচ্ছে হার এড়ালেই নিশ্চিত শেষ ষোল।
টাই হলে অনুসরণ করা হবে যে নিয়ম
১. টাই হওয়া দলগুলোর মধ্যে হেড টু হেডে পয়েন্ট
২. টাই হওয়া দলগুলোর মধ্যে হেড টু হেডে গোল ব্যবধান
৩. টাই হওয়া দলগুলোর হেড টু হেড ম্যাচে কোন দল কতো গোল দিয়েছে
৪. টাই হওয়া দলগুলোর মাঝে হেড টু হেড ম্যাচে অ্যাওয়ে গোল
(ক্রমানুসারে)
*এক্ষেত্রে রেডস্টার বেলগ্রেড থাকবে সমীকরণের বাইরে।
মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ক্লপ বলছেন, দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হলে নাপোলির বিপক্ষে বিন্দুমাত্র ভুল করা চলবে না, ‘আমাদের আগেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে হতো, নিজেদের ভুলের জন্য সেটা হয়নি। নাপোলি খুবই শক্তিশালী দল, ইতালির অন্য দলগুলোর মতোই তাদের রক্ষণভাগ ভেদ করা কঠিন। আমরা অবশ্য কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভালো ফর্মে আছি। জয়ের কোনো বিকল্প নেই এই ম্যাচে, তাই ভুল করারও সুযোগ নেই। আশা করি জিতেই আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবো।’
নিজেদের ভাগ্যটা নিজেদের হাতেই রাখতে চান নাপোলি কোচ কার্লো আনচেলত্তি, ‘আমরা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলব। ‘বাস পার্ক’ করে খেলার ইচ্ছা আমাদের নেই, আমরা ওই নীতিতে বিশ্বাসও করি না। ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে। অ্যানফিল্ডে দারুণ কিছু স্মৃতি আছে আমার। এখানে আমি চেলসির হয়ে শিরোপা জিতেছিলাম। ম্যাচটা কঠিন হবে এটা আমাদের সবাই জানে। ঘরের মাঠে লিভারপুল ছেড়ে কথা বলবে না।’
শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় রাউন্ডের পথে এগিয়ে যাবে কে? ঘরের মাঠে কি গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ার হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে গতবারের রানার্সআপ লিভারপুলকে?
টটেনহাম-ইন্টার মিলানের শেষ ষোলর ওঠার লড়াই
বার্সেলোনার দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়েছে আগেই। ক্যাম্প ন্যুতে বার্সা তাই অনেকটা নির্ভার হয়েই মাঠে নামবে। কোচ এরনেস্তো ভালভার্দে নামাতে পারেন দ্বিতীয় সারির দলও। ঠিক এটাই যেন মনেপ্রাণে চাইবে টটেনহাম। দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জন্য তাদের যে জয়ের বিকল্প নেই! অন্যদিকে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা পিএসভি আইন্দহোভেনের মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান। পরের রাউন্ডে ওঠার জন্য জয় পেতে হবে তাদেরকেও।
৫ ম্যাচে টটেনহাম ও ইন্টার মিলান দুই দলেরই পয়েন্ট ৭। বি গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা পিএসভির বিপক্ষে সহজ জয়ের আশায় আছে ইন্টার। সেই ক্ষেত্রে পরের রাউন্ডে যেতে হলে বার্সার বিপক্ষে টটেনহামকে জিততেই হবে। ইন্টার নিজেদের ম্যাচে জিতে গেলে তখন ড্র করেও লাভ হবে না টটেনহামের। দুই দলই যদি জিতে যায়, তাহলে হেড টু হেডে পাওয়া পয়েন্ট, গোল ব্যবধান ইত্যাদি সমীকরণ সামনে আসবে। সেক্ষেত্রে এগিয়ে আছে টটেনহামই, ইন্টারের মাঠে একটি অ্যাওয়ে গোল পাওয়ায় পয়েন্ট সমান হলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে তাঁরাই।