সিটিজেনদের চুরমার করে ক্রিস্টাল প্যালেসের চমক
কয়েকবছর আগে লিভারপুলকে হারিয়ে ম্যানচেস্টার সিটিকে প্রিমিয়ার লিগ জিততে সাহায্য করেছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। এবার লিভারপুলকে বোধ হয় সেটাই ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল তারা। সিটিজেনদের চুরমার করে মৌসুমের সবচেয়ে বড় চমকটাই দেখাল প্যালেস। ইতিহাদে মৌসুমের প্রথম হারে দুইয়ে থাকা ম্যান সিটি শীর্ষ স্থান থেকে পিছিয়ে পড়েছে ৪ পয়েন্টে। আগের রাতে ওলভসকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের কাজটা আগেই এগিয়ে রেখেছিল শীর্ষে থাকা লিভারপুল। সিটির হারের রাতে ঘরের মাঠে হেরেছে চেলসিও। জেইমি ভার্ডির একমাত্র গোলে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ থেকে জয় নিয়ে ফিরেছে লেস্টার সিটি।
ইতিহাদে আগের ৯ ম্যাচে গড়ে ৩টি করে গোল করেছিল পেপ গার্দিওলার দল। সেই দুর্গ যখন ভাঙল, সেটা চুরমারই হয়ে গেল ক্রিস্টালের মতো। রয় হজসনের প্যালেস ইতিহাদে ম্যাচ জিতল ২৮ বছর পর। অবশ্য ম্যাচের শুরুতে এমন কোনো আভাসই পাওয়া যায়নি প্যালেসের খেলায়। অনুমিতভাবে সিটিজেনরাই আক্রমণে এগিয়ে ছিল। প্রথম গোলটাও তাদেরই করা। ২৭ মিনিটে ফাবিয়ান ডেলফের ক্রস থেকে হেডে গোল করে নিয়মমাফিক সিটিকে এগিয়েও দিয়েছিলেন ইলকে গুন্ডোয়ান। এরপরই চিত্রনাট্যে প্যালেস। তাতেই লন্ডভন্ড হয়ে গেল সিটিজেনরা।
৩৩ মিনিটে শুলপের গোলে সমতায় ফেরে প্যালেস। সেই চমক মিনিট দুই এক পর মিলিয়ে গেল আরেক চমকে। চোখ ছানাবড়া করার মতোই এক গোল করলেন আন্ড্রুস টাউনসেন্ড। ৩০ গজ দূর থেকে করা ভলিতে প্যালেসকে এগিয়ে নেন তিনি। এডারসন মোরায়েস ঝাপ দিয়েও পারেননি সেই শট আটকাতে।
দ্বিতীয়ার্ধে পিছিয়ে থেকে শুরুটা ভালোই করেছিল সিটি। এর আগে ঘরের মাঠে মাত্র দুই ম্যাচ হেরেছিলেন গার্দিওলা। বিরতির পরই তাই সার্জিও আগুয়েরোকে নামিয়ে দেন সিটি ম্যানেজার। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ হয়নি কিছু। উলটো সিটিকে আরও এক ধাপ পিছিয়ে পড়তে হয় ৫১ মিনিটে। প্রতিআক্রমণ থেকে টাউনসেন্ডের হেড লাগে বারপোস্টে। পরে ওই আক্রমণ থেকেই ম্যাক্স মেয়েরকে ডিবক্সের ফাউল করে কাইল ওয়াকার দলের বিপদ বাড়িয়ে দেন দ্বিগুণ। পেনাল্টি থেকে মিকি মিলিভোয়িচও ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেন।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও অবশ্য সিটি সমর্থকেরা হাল ছাড়েননি। দলের ফিরে আসার লড়াইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ক্রিস্টাল প্যালেসের সুবিন্যস্ত রক্ষণ ভেঙে অভাবনীয় ফিরে আসার গল্প দেখা হয়নি তাদের। লিরয় সানে অবশ্য ৭৫ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বারপোস্টের কারণে গোলবঞ্চিত হন। অবশেষে ৮৫ মিনিটে বদলি কেভিন ডি ব্রুইনের গোলে আবারও ম্যাচে ফেরে সিটি। কিন্তু লড়াইটা শুরু করতে বোধ হয় একটু দেরিই করে ফেলেছিল ঘরের দল। শেষদিকে গ্যাব্রিয়েল হেসুসের হেড ওপর দিয়ে গেলে সব আশাই শেষ হয়ে যায় সিটিজেনদের।
বড়দিনের আগে এর চেয়ে বড় উপহার আর কী বা হতে পারত লিভারপুলের জন্য! সেটা অবশ্য ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের জন্য একটা চ্যালেঞ্জও হয়ে দাঁড়াল। বড়দিনের আগে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থেকে গত দশ বছরে মাত্র দুইবার সেই দল শিরোপা জিততে পারেনি। দুইবারই কাজটা করেছি লিভারপুলই!