• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লেস্টারের কাছে হেরে তিনে নেমে গেল ম্যান সিটি

    লেস্টারের কাছে হেরে তিনে নেমে গেল ম্যান সিটি    

    প্রিমিয়ার লিগে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারল ম্যানচেস্টার সিটি। ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে ঘরের মাঠে হারের তিনদিন পর এবার পেপ গার্দিওলার দল হেরেছে লেস্টার সিটির কাছে। প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা এই নিয়ে লিগের শেষ ৪ ম্যাচের চারটিতেই হারল। লেস্টারের কাছে ২-১ গোলে হেরে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছে গার্দিওলার দল। টটেনহাম হটস্পারের কাছে হারিয়েছে দ্বিতীয় স্থানটাও। রাতে লিভারপুল নিউক্যাসেলকে হারিয়েছে বড় ব্যবধানে, শীর্ষে আছে তারাই।

    ক্রিস্টাল প্যালেসের মতো এই মৌসুমে ধুঁকছিল লেস্টার সিটিও। কিন্তু চ্যাম্পিয়নদের পেয়ে তারাও যে তেঁতে উঠবে তা কে জানত! কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগে গার্দিওলা বলেছিলেন এই ম্যাচটা জিততেই হবে তার। সেটা যে শুধু বলার জন্য বলা না সেটা তার দল নির্বাচনেও বোঝা গেল। ম্যানেজারের কথার দামও দিয়েছিলেন সিটি খেলোয়াড়েরা। একাদশে ফিরে সার্জিও আগুয়েরো দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন বের্নার্দো সিলভাকে। পর্তুগিজ মিডফিল্ডারও সদ্বব্যবহার করলেন সেই পাসের। ১৪ মিনিটে সিলভার গোলেই এগিয়ে যায় সিটি।  কিন্তু তাতে দমে যায়নি লেস্টার সিটি। অন্যপ্রান্তের স্ট্রাইকার জেইমি ভার্ডিও করলেন আগুয়েরোর কাজটা। ভার্ডি ক্রস করলেন বাম দিক থেকে, কোণাকুণি হেডে গোল করে অলব্রাইটন মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানেই সমতা ফিরিয়ে আনেন ম্যাচে ।

    প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা ম্যান সিটির দুর্বলতাগুলো আরও চোখে পড়তে থাকে এরপরই। অবশ্য আগুয়েরো সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট না করলে হয়ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ফেলতে পারত ম্যান সিটি। দাবিটা করতে পারে লেস্টার সিটিও। প্রথমার্ধে তাদের আক্রমণের ধারে অনেকটাই কোণঠাসাই হয়ে পড়েছিল ম্যাচ সিটি। প্রথমার্ধে ম্যান সিটি আর সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও এডারসনকে অন্যপ্রান্তে ব্যস্তই রেখছিল ফক্সরা। ৩৯ মিনিটে সিলভার ব্যক পাস থেকেও বিপদ হতে পারত ম্যান সিটির। কিন্তু এডারসন সে দফায় বাঁচিয়ে দেন দলকে। এরপর প্রথমার্ধের বাকিটা সময়ও ব্যস্তই থাকতে হয়েছে তাকে। বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত হামজা চৌধুরী দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন। অলব্রাইটনও এরপর যোগ দেন তার দলে।

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই অবশ্য ম্যাচে ফিরেছিল সিটি। কিন্তু মিডফিল্ডে ফার্নান্দিনহোর অভাবটা লেস্টারের বিপক্ষেও টের পেয়েছে তারা। ডেভিড সিলভা ফিট নন, কেভিন ডি ব্রুইন শুরু থেকে থাকলেও তিনিও তেমন সুবিধা করতে পারলেন না। পরে ৭০ মিনিটে মাঠ ছাড়লেন সিলভার বদলি হয়ে। নেমেই লিরয় সানেকে দারুণ একটা পাস দিয়েছিলেন সিলভা, কিন্তু লেস্টারের নির্ভুল ডিফেন্ডিংয়ে সেখান থেকে আর গোল পায়নি সিটি। এর আগে আগুয়েরোরের পাস থেকেও গোলের সামনে থেকে খালি হাতেই ফিরেছিলেন সানে।

    ম্যাচ শেষের ৯ মিনিট বাকি থাকতে বড়দিনের সবচেয়ে বড় উপহারটা পেয়ে যায় লেস্টার সিটি। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার করেছিল সানে, সেই বল গিয়ে পড়ে ডিবক্সের ঠিক বাইরে। রিকার্ডো পেরেইরা ছিলেন সেখানে, বুলেট গতির শটে এডারসনকে সুযোগ না দিয়েই টপ কর্নারে বল জড়ান তিনি। সিটির হারের তিক্ততা আরও বাড়ে ম্যাচের শেষদিকে, পেরেইরাকেই ফাউল করে ফাবিয়ান ডেলফ দেখেন লাল কার্ড। ১০ জনের দল নিয়ে ম্যাচ শেষ করে ম্যান সিটি।

    সিটির ওপর  তাই বছর শেষের ভূতটা ভালভাবেই চেপে বসেছে। টটেনহাম, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল- সব বড় দল একই সময়ে বড় জয় পেলেও তাই তাদের ভাগ্যে জুটল উল্টোটা। আর চেলসিকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে হারানোর কয়েকদিন পর ম্যান সিটিকেও ঘরের মাঠে হারিয়ে দিয়ে দুই মৌসুম আগের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের বড়দিন এর চেয়ে ভালো আর হতে পারত না।