দুর্দান্ত পগবা, উজ্জ্বল ইউনাইটেড
নতুন ম্যানেজার ওলে গানার সোলশায়ারের অধীনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জয়যাত্রা চলছেই। প্রথম ম্যাচে ৩, দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ গোল করার পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে বোর্নমাউথের বিপক্ষে ইউনাইটেড করল ৪ গোল। আগের ম্যাচের মতো আবারও জোড়া গোল করেছেন পল পগবা। বোর্নমাউথ হেরেছে ৪-১ গোলে।
অথচ হোসে মরিনহো বরখাস্ত হওয়ার আগে একাদশে জায়গাই পাচ্ছিলেন না পগবা। মরিনহোর বিদায়ের পর যেমন নতুন চেহারায় ফিরেছে ইউনাইটেড, তার চেয়েও যেন আরও বেশি উজ্জ্বল ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার। নতুন কোচের অধীনে তার গোল সংখ্যা ৪, আর অ্যাসিস্ট তিন। রোলার কোস্টার মৌসুমের ধাক্কা সামলে তাই সোলশায়ারের অধীনে বছরটা স্বস্তিতেই শেষ করেছে ইউনাইটেড। ২০ ম্যাচ শেষে ৫ থাকা আর্সেনালের চেয়ে এখন ইউনাইটেডে আছে তিন পয়েন্ট দূরত্বে।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইউনাইটেডের দুরন্ত সূচনার মূল কারিগর ছিলেন মার্কাস র্যাশফোর্ড। ডান প্রান্ত দিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের ভেতর ক্রস করেছিলেন র্যাশফোর্ড, পগবা এরপর স্লাইড করে বল ঢুকিয়ে দিয়েছেন বোর্নমাউথের জালে। ৫ মিনিটে পগবার ওই গোলেই ওল্ড ট্রাফোর্ডের উৎসবের শুরু।
৩৩ মিনিটে আরও একবার ডানপ্রান্তই ইউনাইটেডের গোলের উৎসব। গোলদাতা সেই পগবাই। এবার ইয়াং-হেরেরা কাজ করলেন রাইট উইংয়ে, ক্রসটা করলেন অ্যান্ডার হেরেরা। ডিবক্সের ভেতর লেট রান নিয়ে ঢুকে হেডে পগবাও ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেললেন সেই ক্রস থেকেই। প্রথমার্ধটা যখন ২-০ তেই শেষ হবে বলে মনে হচ্ছিল, তখনই দুই দল করলো আরও দুই গোল। র্যাশফোর্ড শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছিলেন, একটা গোল তার প্রাপ্যই ছিল। ৪৫ মিনিটে অ্যান্থনি মার্শিয়ালের ক্রস থেকে প্রাপ্যটাই তুলে নিলেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
ইউনাইটেডের তুলনায় বোর্নমাউথের আক্রমণে ধার না থাকলেও ২৫ মিনিটে কর্নার থেকে একবার গোলটা প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল তারা। নাথান একের হেড তখন সোজা গিয়ে লেগেছিল ডেভিড ডি গিয়ার গায়ে। বিরতির ঠিক আগে কর্নার থেকেই আরও একবার হেড করলেন এক, এবার আর সোজাসুজি করলেন না। তাই গোলটাও পেয়ে গেলেন তিনি, গোল পেল বোর্নমাউথও। কিন্তু সেটা সান্ত্বনাই হয়ে রইল শেষ পর্যন্ত।
দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত ইউনাইটেডের সামনে আর দাঁড়াতেই পারেনি এডি হাউয়ের দল। ৬৬ মিনিটে র্যাশফোর্ড ওয়ান অন ওয়ানে পেয়ে গিয়েছিলেন আসমির বেগোভিচকে। লড়াইয়ে জিতেছেন বোর্নমাউথ গোলরক্ষকই, নইলে জোড়া গোল পেয়ে যেতে পারতেন র্যাশফোর্ডও। এর কিছুক্ষণ পরই রোমেলু লুকাকুর বদলি হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। সোলশায়ার সোজা জানিয়ে দিয়েছিলেন লুকাকু-সানচেজদের নিজেদের প্রমাণ করেই দলে ঢুকতে হবে। লুকাকু প্রথম সুযোগই সেটা করে ফেলেছেন। মাঠে নামার কিছুক্ষণ পরই পগবার কাছ থেকে বল পেয়ে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ডান পায়ের ফিনিশে গোল করেন লুকাকু।
৭৫ মিনিটে পগবা হ্যাটট্রিকটাও পেয়ে যেতে পারতেন। ডিবক্সের বাইরে থেকে শট করে বারপোস্টে বাঁধা পেয়ে আর হ্যাটট্রিক পাওয়া হয়নি পগবার। হ্যাটট্রিকের আক্ষেপটা থাকতেই পারে পগবার। তবে পগবার দারুণ পারফরম্যান্সে সমর্থকদের মনে স্বস্তিই ফেরার কথা। ওল্ড ট্রাফোর্ডের চমৎকার রাতটা শুধু ভালো যায়নি একজন রেড ডেভিলেরই। দুই পায়ে ট্যাকল করে ম্যাচের শেষদিকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এরিক বায়ি।
ম্যাচ শেষে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের মুখে চওড়া হাসিটাই ৯০ মিনিটের প্রতিফলন হয়ে থাকল। দম আটকে আসতে থাকা ওল্ড ট্রাফোর্ডে এখন বইছে স্বস্তির বাতাস।