কিক অফের আগে : ইতিহাদে লিভারপুলই ফেভারিট, কিন্তু...
গত বছর জানুয়ারিতেও মুখোমুখি হয়েছিল দুইদল। তখন সমীকরণ ছিল উলটো। প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষে থেকে অ্যানফিল্ডে খেলতে গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ওই মাঠেই শেষ হয়েছিল সিটিজেনদের অপরাজেয় যাত্রা। এবার সিটির জায়গায় লিভারপুল, ভেন্যু ইতিহাদ স্টেডিয়াম। লিভারপুলের চেয়ে ৭ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়ে এখন সিটিকে এখন সেই কাজটাই করতে হবে, যেটা লিভারপুল করেছিল এক বছর আগে।
ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত দুইদল খেলছিল একই ধারায়। কিন্তু উৎসবের মৌসুম আসতেই সিটীজেনরা রঙ হারিয়েছে অনেকটা। চেলসির কাছে হারের পর টানা দুই ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেস আর লেস্টার সিটির কাছে হেরে চাপে পড়ে গেছে পেপ গার্দিওলার দল। গার্দিওলা ভালো করেই জানেন, এই ম্যাচ হারলে শিরোপার আশা একরকম শেষই হয়ে যাবে তাদের দলের।
শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচ?
টটেনহাম হটস্পার আছে প্রিমিয়ার লিগের দুই নম্বরে। কিন্তু স্পার্সের ফর্ম ও অতীতের বিবেচনায় তাদেরকে ঠিক সেই অর্থে শিরোপার দাবিদার বলা যাচ্ছে না এখনও। সেক্ষেত্রে সিটি-লিভারপুলের মধ্যেই লড়াইটা হওয়ার কথা। ইতিহাদে লিভারপুল জিতে গেলে তখন দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান দাঁড়াবে ১০। তাতে অনেকখানিই শেষ হয়ে যাবে সিটির শিরোপা সম্ভাবনা। সিটি মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভাও ম্যাচের আগেই বলেছেন এই কথাই। ম্যাচ ড্র হলে মাসটা এখনও জানুয়ারি আর প্রিমিয়ার লিগের ধরনের কারণেই লড়াইয়ে টিকে থাকবে সিটি। আর সিটির জয়ে দুই দলের পয়েন্ট ব্যবধান দাঁড়াবে ৪, তাতে আরও জমজমাট হবে শিরোপার লড়াই।
সিটির সমস্যা অনেক...
সিটির ব্যাকলাইনের বেহাল দশা ইতিহাদের ম্যাচে এগিয়ে রাখছে না তাদের। ক্লিনশিট সোনার হরিণই হয়ে গেছে সিটির জন্য। বল পায়ে নিখুঁত মনে হলেও, বল হারালেই দিশেহারা সিটির রক্ষণ। শেষ ম্যাচেও নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছে থাকলেও, হুট করেই সুর কেটেছে রক্ষণে। সিটির দুর্বলতা খুঁজে ওই ম্যাচে গোল করেছে সাউদাম্পটনও। লিভারপুলের বিপক্ষে রাতারাতি সিটির রক্ষণ দুর্গে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আছে ইনজুরি আর লাল কার্ডের সমস্যাও। বেঞ্জামিন মেন্ডি নেই, ফাবিয়ান ডেলফও নেই আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখে। লেফটব্যাক পজিশনে খেলতে পারেন আইমেরিক লাপোর্তে।
সিটির রঙ হারানোর পেছনে দায়ী ইনজুরিও। ফার্নান্দিনহো এক সুতোয় গাথেন পুরো দলকে। তার অনুপস্থিতি ভুগিয়েছে দলকে। ফার্নানদিনহো দলে ফিরলেও কেভিন ডি ব্রুইনকে নিয়ে আছে সংশয়। ৩১ বছর বয়সী সিটির আগের ম্যাচে দলে ছিলেন না। লিভারপুলের বিপক্ষেও একাদশে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবে ফিট সার্জিও আগুয়েরোর কিছুটা আশা দেখাচ্ছেন গার্দিওলাকে।
লিভারপুলই ফেভারিট, কিন্তু...
ইয়ুর্গেন ক্লপের দল বাছাইয়ে তেমন অসুবিধা নেই। সেরা দলটাই পাচ্ছেন বড় ম্যাচের আগে। কিন্তু লিভারপুল ম্যানেজার কোন কৌশল অনুসরণ করবেন সেটাই বড় প্রশ্ন। ক্লপ জানেন হার এড়াতে পারলেই স্বপ্নের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে তার দল। সিটির বিপক্ষে তাই খানিকটা রক্ষণাত্মক মেজাজে খেলতে নামলে সুবিধাই পেতে পারে লিভারপুল। কিন্তু তাতে আবার দলের ভারসাম্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। প্রভাব পড়তে পারে মানসিকতার ওপরও। আর নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাটা চালিয়ে গেলে প্রতিপক্ষের মাঠে হারার সম্ভাবনাটাও বাড়ে। তারওপর কয়েকদিন আগে গার্দিওলা ক্লপের লিভারপুলকে বলেছেন বিশ্বের সেরা দল। সবমিলিয়ে ক্লপ এবার রয়েছেন অন্যরকম এক চাপে। অবশ্য এই মৌসুমে লিভারপুলের রক্ষণে ভার্জিল ভ্যান ডাইকের পারফরম্যান্স ভরসাই যোগানোর কথা লিভারপুলকে। আক্রমণেও সালাহ-ফিরমিনো-মানেরা কয়েকদিন আগেই আর্সেনালকে বিধ্বস্ত করেছে। ছন্দ পতন চাইবেন কেন ক্লপ? শেষ পর্যন্ত হয়ত তার ওপরই নির্ভর করতে পারে ম্যাচের ফল।