"মিডিয়ায় সমালোচনা তরুণ ক্রিকেটারদের ধ্বংসের কারণ"
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট মানেই একঝাঁক তরুণের কাছে রোশনাই ভরা এক প্লাটফর্ম। সংবাদমাধ্যমের বাড়তি নজর, সঙ্গে টেলিভিশন ব্রডকাস্টিংয়ের প্রভাব তো থাকেই। বিপিএল অবশ্য অন্য টুর্নামেন্টগুলোর চেয়ে একটু আলাদাই, বাংলাদেশের একমাত্র ঘরোয়া টুর্নামেন্ট যা টেলিভিশনে দেখতে পান দর্শকরা। উঠতি ক্রিকেটারদের কাছে বিপিএল তাই ধরা দেয় একটু আলাদাভাবেই। তবে দেশের ক্রিকেটের এই ‘ভবিষ্যত’-দের একটু দেখেশুনে রাখতে বলছেন পাকিস্তান অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। তার মতে, এই উঠতি ক্রিকেটারদের অঙ্কুরে বিনষ্ট হওয়ার মূল কারণ মিডিয়ায় সমালোচনা।
“বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব হচ্ছে তরুণদের জন্য সুযোগ তৈরি করা। আমার মতে, আমি অনেক ভাল ক্রিকেটার দেখেছি, যারা দলের হয়ে ভাল করছে (বাংলাদেশে)। একজন-দুইজনের কথা বললে বাকিদের প্রতি অবিচার করা হবে যারা সবাই ভাল ও মেধাবি। আমার মনে হয়, আপনাদের দেশ ও ক্রিকেটাররা একটু ভুগলেই বলা হয় যে তারা দেশের হয়ে ভাল করতে পারেন না। তবে লক্ষ্য থাকা উচিত, তাদেরকে সমর্থন দেওয়া, সমালোচনা করা নয়”, সিলেট সিক্সারসের বিপক্ষে ম্যাচের পর বলেছেন মালিক।
এদিন আলো ছড়িয়েছেন তরুণ ওপেনার আফিফ হোসেন। ২৮ বলে ৪৫ রান করেছেন, ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে গড়েছেন ৭১ রানের জুটি। আফিফদের মতো ক্রিকেটারদের বেড়ে ওঠার পেছনে মিডিয়ার প্রভাব সম্পর্কে অভিজ্ঞ মালিক বলছেন, “দেখুন, উপমহাদেশে আমাদের এমন সব ব্যাপার আছে, যা থেকে মিডিয়া কিছু একটা তৈরি করে ফেলে। এরপর শুরু হয় সমালোচনা। এই সমালোচনা মূলত নিজেদের দেশ ধ্বংসেরই কারণ। আপনারা সবাই মশলা পছন্দ করেন, আমরা সবাই মশলাদার খবর ভালবাসি। আমার মনে হয়, একটা পর্যায়ে গিয়ে আপনাদের ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ।”
ঘরোয়া ক্রিকেটারদের ব্যাপারে মুশফিকুর রহিম অবশ্য দিচ্ছেন একটু ভিন্ন ব্যাখ্যা। তার মতে, টি-টোয়েন্টিতে এই একটা ফরম্যাট যথেষ্ট নয় তাদের জন্য, “যারা জাতীয় দলের বাইরে আছে তাদের ভালো করাটা কঠিন। সারা বছর কিন্তু এই একটা টুর্নামেন্টই তারা খেলে। এমনকি অনুশীলন ম্যাচও খেলে না। এসেই ক্লিক করাটা তাদের জন্য একটু কঠিন হয়ে যায় তাই। আমরা যারা জাতীয় দলে খেলি আমাদের সঙ্গে তুলনা করলে তো বটেই, আমরা সারা বছরই তিনটা ফরম্যাটে খেলি। এমনকি বাংলাদেশেও খেলি। আমাদের জন্য তুলনামূলক সহজ।”
“এরপরও যারা এসেই ভালো খেলছে তারা আউটস্ট্যান্ডিং, ‘হ্যাটস অফ টু দেম’। আমরাও তাদের কাছ থেকে শিখতে পারি, তারা কীভাবে খেলছে। হয়ত কারো কারো হারানোরও কিছু থাকে না। আমরা অনেককে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়। আমার মনে হয় যত দিন যাবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও আরও বড় বড় ইনিংস খেলবে এবং তারাই লিড দেবে।”
এর আগেও বিপিএলের বাইরে আলাদা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কথা বলা হয়েছিল বিসিবির পক্ষ থেকে। সেটা হয়নি অবশ্য। মুশফিক আজ আবারও জানালেন সেটার প্রয়োজনীয়তা, “আমার মনে হয় এটার (বিপিএল) বাইরেও যদি কোন টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়। এরকম একটা স্লট করা যায়, যারা বাইরে তাদের জন্যই না আমাদের জন্যও কাজে দেবে। ঠাসা সূচির কারণে হয়ত কঠিন। কিন্তু যারা বাইরে আছে তাদের নিয়ে একটা টুর্নামেন্ট করলে যেকোন একটা দল করতেও সহজ হয়। আমার মনে হয় এটা নিয়ে তারা চিন্তা করছেন।”
“আমাদের একটা প্রস্তাবও ছিল, নিজেদের মধ্যেও কথা হচ্ছিল। মনে হয় মল্লিক ভাইও (ইসমাইল হায়দার মল্লিক, বিপিএলের গভর্নিং বডির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) বলছিলেন প্রিমিয়ার লিগের সেরা ছয় বা আট দল নিয়ে যদি একটা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে পারি তাহলে অবশ্যই ক্রিকেটের জন্য অনেক লাভবান হবে।”