৬৮ রানে গুটিয়ে গিয়ে কুমিল্লার কাছে পিষ্ট সিলেট
সিলেট সিক্সারস ৬৮ অল-আউট, ১৪.৫ ওভার (কাপালি ৩৩*, মেহেদি ৪/২২, রিয়াজ ৩/১৫)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ৬৯/২, ১১.১ ওভার (শামসুর ৩৪*, ইমরুল ৩০*, তানভীর ১/১০)
কুমিল্লা ৮ উইকেটে জয়ী
গতবার বিপিএল শুরু হয়েছিল সিলেটে, শুরুটাও ঘরের দলের জন্য হয়েছিল দুর্দান্ত। প্রথম তিন ম্যাচই জিতেছিল তারা। এবার মিরপুর থেকে সিলেট গেল বিপিএল, প্রথম তিন ম্যাচে এক জয় নিয়ে সিক্সার্স গেল সেখানে, নতুন শুরুর আশায়। তবে নিজেদের দলের খেলা দেখতে এসে প্রথমদিন শুধু হতাশই হলেন সিলেট-দর্শকরা, সিলেট যে মেহেদি হাসানের বোলিং তোপে প্রথমে ব্যাটিং করে গুটিয়ে গেল ৬৮ রানেই! শুরুতে ২ উইকেট হারালেও সে লক্ষ্য পেরুতে ঝামেলা হয়নি কুমিল্লার, ৫৩ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জিতেছে তারা। পঞ্চম ম্যাচে এটি কুমিল্লার তৃতীয় জয়।
সিলেটের উইকেট ধীরগতির, সেটা বুঝা গেছে রাজশাহী-খুলনার প্রথম ম্যাচেই। তবে সন্ধ্যার পর সেটার রুপ বদলালো একটু, ধরলো স্পিন। বড় বড় টার্নের সঙ্গে স্কিড করা বলে সিলেট ব্যাটসম্যানদের জীবন হয়ে উঠলো দুর্বিষহ। এক অলক কাপালি ছাড়া সিলেটের বাকি ব্যাটসম্যানদের স্কোরকার্ড যেন চা-দানার মতো, এখানে ওখানে ছড়িয়ে থাকলো এক অঙ্কের স্কোরগুলো। ২২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে একসময় বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটাকেও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল সিলেট, অলক কাপালির ৩১ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে সেটা হয়নি অবশ্য।
সাইফউদ্দিনের করা প্রথম ওভার ছিল মেইডেন, এরপর আসলেন মেহেদি। ১-০-৫-৩! তার প্রথম ওভারটা ছিল স্বপ্নালু, আর সিলেটের জন্য বিভৎস! এক ওভারেই ফিরলেন আন্দ্রে ফ্লেচার, ডেভিড ওয়ার্নার ও আফিফ হোসেন। পরের দুইজন তো আউট হলেন পরপর দুই বলে। ক্ল্যাসিক অফস্পিনে বোল্ড ফ্লেচার, ওয়ার্নার নাগালই পেলেন না আর্ম বলটার। আফিফ ব্যাট নামিয়েছিলেন, তবে সময়মতো পারেননি, হয়েছেন এলবিডব্লিউ। পরের ওভারে সাইফউদ্দিনের বলে পেছনের পায়ে লেগে এলবিডব্লিউ হয়েছেন নিকোলাস পুরান, তবে বল পড়েছিল লেগস্টাম্পের বাইরে। এদিন ডিআরএস ছিল না বিপিএলে, থাকলে বাঁচতে পারতেন পুরান।
তবে স্বপ্নালু প্রথম ওভারের পরও মেহেদিকে তখন আর আনেননি ইমরুল কায়েস, ৫ম ওভারে অবশ্য সফলতা ঠিকই পেয়েছেন তারা। লিয়াম ডওসনের বলে চেক শট খেলেও কাভারে ধরা পড়েছেন লিটন, সামনের ক্যাচটা নিচু হয়ে নিয়েছেন রিয়াজ। ডওসন পরের ওভারে ফিরিয়েছেন সাব্বিরকে, সুইপ করতে গিয়ে মিস করে তিনি হয়েছেন এলবিডব্লিউ। অবশ্য সাব্বির খুশি হতে পারেননি মোটেও, ডিআরএসের অভাব আরেকবার টের পেয়েছে সিলেট।
৮ম ওভারে বোলিংয়ে ফিরেছেন মেহেদি, সিলেট হারিয়েছে ৭ম উইকেট। বিপিএলের সর্বনিম্ন স্কোর উঁকি দিচ্ছে তখন, ২০১৬ সালে রংপুরের বিপক্ষে ৪৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল খুলনা। এরপর এলবিডব্লিউ সোহেল তানভীর, তিনি অবশ্য ছিলেন প্লাম্বই। ১৩তম ওভারে রিয়াজ করছেন জোড়া আঘাত, নাবিল সামাদ ও আল-আমিন হোসেন হয়েছেন বোল্ড, ৪৭ রানে সিলেট হারিয়েছে ৯ম উইকেট।
অলক কাপালি বিরুদ্ধস্রোতে দাঁড়িয়ে গেলেন। একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁলেন দুই অঙ্ক। শেষ উইকেটে ২১ রান, ইনিংসে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এই রানের সম্বল নিয়ে সিলেটকে ঘটাতে হতো মিরাকল। প্রথম ওভারে এনামুল হকের আত্মহত্যা একটু হলেও উল্লাসে ভাসিয়েছিল তাদের। বল ঠেলেই দৌড় শুরু করেছিলেন তিনি, যেখানে কোনও রানই ছিল না। পরের ওভারে তানভীরের বলে এলবিডব্লিউ হলেন তামিম ইকবাল। যাওয়ার সময় একচোট কথা চালাচালিও হয়ে গেল ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে। ওই শেষ। এ ম্যাচে আর উত্তেজনার রেশ পাওয়া গেল না। শামসুর রহমান ৩৭ বলে ৩৪ ও ইমরুল কায়েস ২২ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থেকেই নিশ্চিত করলেন কুমিল্লার জয়।