• বিপিএল ২০১৯
  • " />

     

    রঙ বদলানোর ম্যাচে রঙিন কুমিল্লাই

    রঙ বদলানোর ম্যাচে রঙিন কুমিল্লাই    

    খুলনা  টাইটান্স ১৮১/৭, ২০ ওভার (জুনাইদ ৭০, আল-আমিন ৩২, মালান ২৯, আফ্রিদি ৩/৩৫, রিয়াজ ২/৩৪) 
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৮৬/৭, ১৯.৪ ওভার (তামিম ৭৩, বিজয় ৪০, ইমরুল ২৮, জুনাইদ ৪/৩২, মালিঙ্গা ১/২২) 
    কুমিল্লা ৩ উইকেটে জয়ী 


    ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে খুলনাকে হারিয়ে নিজেদের চতুর্থ জয় পেয়েছে কুমিল্লা। জুনাইদ-আল-আমিনের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পাওয়া খুলনাকে একসময় উঁকি দিচ্ছিল ২০০, তবে অসময়ে উইকেট হারানো কাল হয়েছে তাদের। অসময়ে উইকেট চাপে ফেলেছিল কুমিল্লাকেও, ইমরুল-ঝড় ঠিক পথে এনেছে আবার তাদের। 

    টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল খুলনা।  জহুরুল প্রথম ওভারে ফিরেছিলেন, তবে বিপিএলের  এবারের মৌসুমে প্রথমবার খেলতে নামা আল-আমিনকে নিয়ে খুলনা দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন জুনাইদ সিদ্দিক। পাওয়ারপ্লেতে উঠলো ৬৫ রান, ৯ ওভারে ৯৩। আফ্রিদি লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেছিলেন, প্রথমে ১৯ বলে ৩২ করা আল-আমিন ও মাহমুদউল্লাহকে বোল্ড করে। জুনাইদ-মালানের জুটি অবশ্য বড় সংগ্রহের পথেই রেখেছিল খুলনাকে, ১৬ ওভারে উঠেছিল ১৫০ রান। তবে পরপর দুই ওভারে জুনাইদ-মালানের উইকেটে একটু থিতিয়ে পড়লো খুলনা, অফ-টাচে থাকা দুই ‘হিটার’ ব্রাথওয়েট ও আরিফুল মিলে শেষ পর্যন্ত খুলনাকে নিতে পারলেন ১৮১ পর্যন্ত। 

    রানতাড়ায় শুরুটা দারুণ ছিল কুমিল্লার, তামিম-বিজয়ের ওপেনিং জুটিতেই পেরিয়ে গিয়েছিল ১০০। ৪২ বলে ৭৩ করে তামিম ডিপ  মিডউইকেটে ধরা পড়লেন মালিঙ্গার স্লোয়ারে, মাহমুদউল্লাহর বলে ক্যাচ দিলেন এনামুল। ব্রাথওয়েটের ডিরেক্ট থ্রোতে রান-আউট শামসুর। এরপর শুরু হলো ইমরুল ঝড়, তবে সেটা থামালেন জুনাইদ। পরপর দুই বলে আউট লিয়াম ডওসন ও ইমরুল। বেশ কয়েকবার বড় শটের চেষ্টায় থাকা আফ্রিদি মালিঙ্গাকে চারের পর জুনাইদকে ছয় মারলেও ফিরেছেন সে ওভারে, হুক করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে।   

    এরপর জিয়াউরও ফিরলেন শুন্যতে, তবে শেষ ওভারে পেরেরার চার ছয়ে সব আশঙ্কা দূর করলো কুমিল্লা। আর টুর্নামেন্টে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোর গড়ার পরও খুলনা পুড়লো আর কয়েকটা রানের আফসোসে। 

    অনেক দিনের পর 

    ২০১২ সালে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে করেছিলেন ৫১ বলে ৮৯। বিপিএলে দ্বিতীয় ফিফটি জুনাইদ সিদ্দিক পেয়েছিলেন ২০১৫ সালে সিলেট সুপারস্টারসের হয়ে। তৃতীয় ফিফটি পেলেন ২০১৯ সংস্করণে এসে, খুলনা টাইটানসের হয়ে। শুরুতেই ওপেনিং সঙ্গী জহুরুল ইসলামকে হারিয়ে ফেললেও জুনাইদ ছিলেন আগ্রাসী মুডে। চারটি চারের সঙ্গে মেরেছেন চারটি ছয়ও- এর মাঝে আফ্রিদিকেই এক ওভারে দুইটি। শামসুরকে ছয় মেরে পূর্ণ করেছেন ফিফটি। শেষটা অবশ্য জুনাইদের হয়েছে রান-আউটে, টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর গড়ে। 

    মাহমুদউল্লাহর মিশ্র দিন 

    নিজের প্রথম বলেই ব্রেকথ্রু দেওয়া আফ্রিদিকে পাত্তা দিলেন না, ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে ইনসাইড-আউটে মারলেন ছয়। এরপর ৭ রানে রিয়াজের বলে জীবন পেলেন, উইকেটের পেছনে খুব ভাল একটা দিন না কাটানো বিজয়ের কাছে। তবে সেটা খুব বেশি কাজে লাগাতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। সে ওভারে রিয়াজকে হুক করে ছয় মারলেন, তবে পরের ওভারে আফ্রিদির গুগলি পড়তে না পেরে হলেন বোল্ড। বোলিংয়ে প্রথম ওভারে দুই ধরনের অভিজ্ঞতা হলো তার। স্লিংগিং অ্যাকশনে রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করলেন, সেটা হলো ওয়াইড। এরপর পপিং ক্রিজের বাইরে থেকে করলেন, ওয়াইড হলো সেটাও। এরপর তিনি করলেন আরও ৩ ওভার, শেষ পর্যন্ত ১ উইকেট নিয়েছেন ৩৬ রানে। 

    বোলার শামসুর, প্রথমবার 

    ৬ টেস্ট ও ১০ ওয়ানডের ক্যারিয়ারে শামসুর রহমান করেছেন এক ওভার করে বোলিং। প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট ‘এ’-তে বোলিংটা অবশ্য একেবারে নতুন নয় তার কাছে, যথাক্রমে ২০ ও ১৬টি করে উইকেটও আছে তার। তবে এর আগের ৪২ টি-টোয়েন্টিতে একটি বলও করেননি তিনি। সেই শামসুরকেই ১২তম ওভারে আনলেন ইমরুল, সে ওভারে শামসুর গুণলেন ১৪ রান। 

    স্বরুপে তামিম 

    ৩৫, ৪, ২১, ০, ০- তামিম ইকবাল যেন ঠিক খুঁজে পাচ্ছিলেন না বিপিএলে। খুলনার সঙ্গে জ্বলে উঠলেন ঠিকই। লাসিথ মালিঙ্গার অফস্টাম্পের বাইরের স্লোয়ারে চার মেরে ইঙ্গিতটা দিয়ে রেখেছিলেন। এরপর জুনাইদের এক ওভারে ছয়-চার-চার। ব্রাথওয়েটকে এক ওভারে চার চার, এর মধ্যে টানা তিনটি। আল-আমিনের এক ওভারেও চারের হ্যাটট্রিক। সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ করলেন টি-টোয়েন্টির ৩২তম ফিফটি। মালিঙ্গার স্লোয়ারেই অবশ্য শেষটা হলো তার, স্লগ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন মিড-উইকেটে। 

    হঠাৎ ইমরুল ঝড় 

    মাহমুদউল্লাহকে ছয় দিয়ে শুরু। সে ওভারের শুরুতে ৪২ বলে ৬৩ প্রয়োজন ছিল খুলনার। সে ওভারে এনামুল ফিরলেন, তবে ইমরুল থামলেন না। পরের ওভারে ব্রাথওয়েটকে মারলেন টানা দুই ছয়, এরপর মাহমুদউল্লাহকে চার। ১০ বলে ২৮ রানে পৌঁছে গেলেন ইমরুল, খুলনার প্রয়োজনীয়তাটা নেমে এলো ২৪ বলে ২৯ রানে। ডওসনের উইকেটও শান্ত করতে পারলো না তাকে, জুনাইদকে তুলে মারতে গিয়ে অবশ্য শান্ত হতেই হলো তাকে।