'সেঞ্চুরি'র দিনে পথেই থাকল সিটি
গতকাল পা হড়কানোর দ্বারপ্রান্ত থেকে জয় নিয়ে ফিরেছিল লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগ জিততে হলে এই সময়ে এসে পয়েন্ট হারানো যাবে না, জানা ছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির। লিভারপুলের মতো নাটকীয় নয়, সিটিজেনরা আজ জিতল চ্যাম্পিয়নদের মতই। হাডার্সফিল্ডকে জন স্মিথ স্টেডিয়ামে ৩-০ গোলে হারিয়ে লিভারপুলের সাথে পয়েন্টের ব্যবধানটা ৪-এ নামিয়ে আনল গার্দিওলার দল। জয়ের সাথে আজ ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে এই মৌসুমে গোলের ‘সেঞ্চুরি’ পূরণ করল সিটি।
হাডার্সফিল্ডের মাঠে সিটি যে প্রতিপক্ষকে বিন্দুমাত্র সুযোগ দেবে না, ম্যাচের শুরু থেকে তা স্পষ্ট ছিল তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলেই। ম্যাচের ৩ মিনিটেই লিরয় সানের সাথে দারুণ এক ‘ওয়ান টু’ করে সার্জিও আগুয়েরোর শট আরেকটু হলেই পরাস্ত করত ‘টেরিয়ার্স’ গোলরক্ষক ইয়োনাস লোসেলকে। ৮ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়েছিলেন আগুয়েরো, কিন্তু এবার বাধা হয়ে দাঁড়ান হাডার্সফিল্ডের জার্মান গোলরক্ষক। ম্যাচের শুরুতেই গোলের দুটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেও একেবারেই মনোবল হারায়নি সিটি। ১৬ মিনিটেই লিড নেয় তাঁরা। অবশ্য এজন্য প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ক্রিস্টফ শিন্ডলারকে ধন্যবাদ জানাতেই পারে তাঁরা। ডিবক্সের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে দানিলোর জোরাল শট তার মাথায় লেগেই জড়ায় হাডার্সফিল্ডের জালে।
লিড নেওয়ার পর যেন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সিটি। ইনজুরি কাটিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ফেরা কেভিন ডি ব্রুইন আজ ছিলেন দারুণ ফর্মে। জেসন পানচন, ক্রিস লো-রা মিলেও ডি ব্রুইনকে আটকাতে হিমশিম খেয়েছেন। বল দখল, গোলের সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে থাকলেও হাডার্সফিল্ডের ‘বাস পার্ক’ ট্যাকটিক্সের বিপক্ষে প্রথমার্ধে আর গোল পায়নি সিটি। তবে প্রায় ৮২ ভাগ বল পজেশন এবং গোলে ৮টি শটই প্রমাণ করে, প্রথমার্ধে ঠিক কতটা দুর্দান্ত ছিল সিটি।
দারুণ পারফরম্যান্সের পরও মাত্র এক গোলের লিড থাকায় দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণের জন্য উঠেপড়ে লাগে সিটি। এজন্য খুব একটা সময় নেয়নি তাঁরা। ডি ব্রুইনের চমৎকার থ্রু পাস থেকে ৫৪ মিনিটে বাঁ-প্রান্তে বল পান সানে। জার্মান উইঙ্গারের দারুণ ক্রস থেকে নিখুঁত হেডে বল জালে জড়ান রহিম স্টার্লিং। ‘বাস পার্ক’ করেও খুব একটা লাভ হবে না জেনে রক্ষণাত্মক খোলস ছেড়ে আক্রমণে উঠে হাডার্সফিল্ড। এতে অবশ্য আবারও কপাল পোড়ে তাদের।
৫৬ মিনিটে আগুয়েরোর পাস থেকে ব্যবধান ৩-০ করেন সানে। জয় নিশ্চিত জেনে ম্যাচের বাকিটা সময় কিছুটা গা বাঁচিয়েই খেলেছে সিটি। আক্রমণের চেয়ে মাঝমাঠেই বল দখলে রেখে পাসিংয়েই ব্যস্ত ছিলেন ফার্নান্দিনহোরা। কিছুটা নির্বিষ সিটির বিপক্ষে আক্রমণে উঠেও তেমন সুবিধা করতে পারেনি ‘টেরিয়ার্স’রা। উলটো গা বাঁচিয়ে খেলেও গোলের সুযোগ পেয়েছিল সিটি, কিন্তু আগুয়েরো-সানেদের মিসের মহড়ায় ব্যবধান আর বাড়ান হয়নি তাদের। শেষ পর্যন্ত ৩ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে গার্দিওলার দল।