• বিপিএল ২০১৯
  • " />

     

    পেরেরা-বাধা পেরিয়ে যেতে পারলো না ঢাকা

    পেরেরা-বাধা পেরিয়ে যেতে পারলো না ঢাকা    

    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৫৩/৮, ২০ ওভার (শামসুর ৪৮, তামিম ৩৪, পেরেরা ২৬, সাকিব ৩/২৪, রুবেল ২/২৬) 
    ঢাকা ডায়নামাইটস ১৪৬/৯, ২০ ওভার (রাসেল ৪৬, নারাইন ২০, পেরেরা ৩/১৪, আফ্রিদি ২/১৮) 
    কুমিল্লা ৭ রানে জয়ী 

     

     

    ম্যাচটা এদিক-ওদিক করেছে বেশ কয়েকবার। শুরুতে থিসারা পেরেরার ১২ বলে ২৬ রানের ক্যামিও, কুমিল্লার ১৫০ পেরিয়ে যাওয়া। উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ ছিল না, কুমিল্লার সম্বলটা ছিল তাই লড়াইয়ের মতো। তবে রানতাড়ায় বারকয়েক পিছিয়ে পড়েও আন্দ্রে রাসেলের ঝড় ঢাকাকে ম্যাচে ফিরিয়েছিল দারুণভাবে। আবারও দৃশ্যপটে হাজির হলেন থিসারা পেরেরা, রাসেলকে ফিরিয়ে এবার ঢাকাকে ছিটকে দেওয়ার কাজটা করলেন দারুণভাবে। সেটাও যদি যথেষ্ট না হয়, তাহলে? শেষ ২ ওভারে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ২০, মোহাম্মদ নাঈম ও রুবেল হোসেন দেখাচ্ছিলেন মিরাকলের স্বপ্ন। ১৯তম ওভারে পেরেরা এসে দিলেন ১, ঠুকলেন শেষ পেরেকটা। কুমিল্লা জিতল ৭ রানে, পয়েন্ট টেবিলে এখন তিন দলের সমান ১০ পয়েন্ট। রানরেটের হেরফেরে তিনে থাকা কুমিল্লার ওপরে আছে ঢাকা ও চিটাগং। 

     

    ১৫৩ রানের সম্বল নিয়ে দ্রুত উইকেট দরকার ছিল কুমিল্লার, প্রথম ওভারেই সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন হজরতউল্লাহ জাজাই। পঞ্চম ওভারে রিয়াজ এসে ফিরিয়েছেন রনিকে, অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে তিনি হয়েছেন কট-বিহাইন্ড। নারাইন হয়েছেন রান-আউট। এর আগে পাওয়ারপ্লেতে ২৮ রান তুলতে পেরেছিল ঢাকা।  

    ৮ম ওভারে মেহেদিকে দুই ছয় মারলেন রাসুলি, সে ওভারেই বিশাল এজের পরও আম্পায়ার রানমোরে মার্টিনেজের দেওয়া ওয়াইড বিতর্কেরও জন্ম দিল। সেটা অবশ্য পরে পার্থক্য গড়তে পারেনি, তবে ম্যাচের পরিস্থিতি বলছিল, বিতর্কটা ম্যাচশেষে বাড়লেও বাড়তে পারে! রাসুলি ফিরলেন আফ্রিদির টসড-আপ ডেলিভারিতে তুলে মারতে গিয়ে, ১৫ বলে ১৯ করে খাড়া ক্যাচ তুলে। 

    এরপরের গল্পটা আন্দ্রে রাসেলের। 

    রাসেল নামার সময় ঢাকার প্রয়োজন ছিল ৬৩ বলে ১০২ রান। মুখোমুখি হওয়া প্রথম ১১ বলে রাসেল করেছিলেন ১০ রান। ডওসনকে কাউ কর্নার দিয়ে ছয় মেরে শুরুটা করলেন। এরপর যেন নিজের সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন, কোন ছয় কোনটার চেয়ে বড় হবে! মারলেন আরো ৪টি ছয়, যার শেষটি পেরেরার বলে। তবে ঠিক তার পরের বলেই স্লোয়ারটা পুল করতে গিয়ে ধরা পড়লেন ডিপ-মিডউইকেটে। কুমিল্লা হালে পানি পেল যেন। ১৬তম ওভারে আফ্রিদি দিলেন ৫ রান, এর চেয়েও বড় কথা, ফেরালেন সাকিবকে। এরপর ফিরলেন পেরেরা, ফেরালেন শুভাগত ও নুরুলকে, তিন বলের ব্যবধানে। দুই উইকেটের স্যান্ডউইচে একটি চার মেরেছিলেন নুরুল। সে পর্যন্তই। 

    এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল কুমিল্লা। রাসেলের শর্ট বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন এনামুল, রুবেলকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে বোল্ড ইমরুল। এর আগে নারাইনকে অবশ্য একটি ছয় মেরেছিলেন তিনি। তবে উইকেট হারানোয় চাপে পড়েছিল কুমিল্লা, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম ওভারে আসেনি কোনও বাউন্ডারি। 

    গিয়ার বদলানোর চেষ্টা করছিলেন তামিম, ১১তম ওভারের শেষ বলে মোহর শেখের ফুললেংথ বলে টেনে ছয় মেরেছিলেন লং-অন দিয়ে। তবে পরের ওভারে সাকিবকে টেনে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন রনি তালুকদারের হাতে, যেটা তিনি ধরেছেন দ্বিতীয় দফায়। এর আগে রনি মিস করেছিলেন ইমরুলের ক্যাচ, শর্ট থার্ডম্যানে। ফিল্ডিংয়ে বেশ পিচ্ছিল একটা দিন কাটিয়েছেন তিনি, দুইটি ক্যাচ মিস করেছেন, যে দুইটি ধরেছেন, সেগুলো দ্বিতীয়বারের চেষ্টায়। 

    এর আগে শামসুর-তামিম মিলে ৭ ওভারে তুলেছিলেন ৫১ রান। তামিমের উইকেটের পর শামসুরকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছেন আফ্রিদি, নারাইনকে চার-ছয়ও মারলেন। তবে সাকিবের হাতে বধ হলেন, হোল্ড করা বলে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এক বল পর আবারও সাকিবের আঘাত, এবার ৪৮ রান করা শামসুর দিয়েছেন কাভারে ক্যাচ।

    কুমিল্লার উড়ানের ভার ছিল এরপর পেরেরা-ডওসনদের ওপর। তবে পরেরজন ধুঁকলেন আজ, ১৪ বলে ৬ রান করা তাকে মুক্তি দিয়েছেন রাসেল, যে ক্যাচ রনি ধরেছেন দ্বিতীয়দফায়, ওভারের শুরুতে একটি মিস করেছিলেন। পেরেরা এর আগে শুভাগত ও রুবেলকে মেরেছেন তিন ছয়, তবে শেষ ওভারের প্রথম বলে রান-আউট হয়ে শেষ ঝড়টা তোলা হয়নি তার। 

    তাতে কী! তার আগে যে ঝড় তুলেছিলেন, বোলিংয়ে যে ঝলক দেখালেন, কুমিল্লার জন্য যথেষ্ট হলো তো সেটাই!