• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    লেস্টারে আটকালো লিভারপুল, বোর্নমাউথে বিধ্বস্ত চেলসি

    লেস্টারে আটকালো লিভারপুল, বোর্নমাউথে বিধ্বস্ত চেলসি    

    টেবিলের শীর্ষে তাদের লিডটা ছিল ৪ পয়েন্টের। গতকাল নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের কাছে ম্যানচেস্টার সিটি হেরে যাওয়ায় আজ লিভারপুলের সামনে সুযোগ এসেছিল ব্যবধানটা ৭-এ নিয়ে যেতে। কিন্তু সিটির হারের সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। অ্যানফিল্ডে লেস্টার সিটির সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে লিভারপুল। ২৪ ম্যাচে ৬১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল 'অল রেড'রা, সমান সংখ্যক ম্যাচে সিটির সংগ্রহ ৫৬ পয়েন্ট। লিভারপুল ড্র করলেও বোর্নমাউথের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে গেছে চেলসি। ভাইটালিটি স্টেডিয়ামে গঞ্জালো হিগুয়াইনের অভিষেকে ৪-০ গোলে হেরেছে মরিজিও সারির দল।

    সিটির হারে পয়েন্টের ব্যবধান বাড়ানোর ম্যাচে অ্যানফিল্ডে আজ পূর্ণশক্তির দলই নামিয়েছিলেন ক্লপ। মোহামেদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনো সবাই-ই ছিলেন মূল একাদশে। তবে ম্যাচের শুরুতেই লিভারপুলকে লিড এনে দেন সাদিও মানে। ৩ মিনিটে সালাহর সাথে 'ওয়ান টু' করে ডানপায়ের বাঁকানো শটে লেস্টার গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মেইকেলকে পরাস্ত করেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড। ৬ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতেন ফিরমিনো। কিন্তু এবার দুর্দান্ত এক সেভে তাকে গোলবঞ্চিত করেন স্মেইকেল। ম্যাচের শুরুতে গোল খেয়ে গেলেও বাকিটা সময় দুর্দান্ত খেলেছেন ডেনিশ গোলরক্ষক। লেস্টারও থেমে থাকেনি। তবে ভাগ্যও যেন সহায় ছিল না তাদের। ৮ মিনিটে লেস্টারের জেমস ম্যাডিসনকে ডিবক্সে ফেলে দেন ভার্জিল ভ্যান ডাইক। লেস্টার ফুটবলারদের জোর আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। লিড নিলেও প্রথমার্ধের বেশিরভাগ সময় আক্রমণে ছিল লেস্টারই।

     

     

    ২৫ মিনিটে লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন ম্যাডিসন। ৩২ মিনিটে আবারও পেনাল্টির আবেদন লেস্টারের, জেমি ভার্ডিকে বক্সে ফেলে দেন জোয়েল মাতিপ। কিন্তু এবারও বাঁশি দেননি রেফারি। লেস্টারের মত রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে পেনাল্টি বঞ্চিত হয়েছে লিভারপুলও। ৩৮ মিনিটে হ্যারি ম্যাগুয়ের সালাহকে ডিবক্সে ফেলে দিলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। তবে প্রথমার্ধের বাকি সময় লেগে থাকার পুরষ্কার ঠিকই পায় লেস্টার। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ম্যাগুয়েরের গোলে সমতায় ফেরে 'ফক্স'রা।

     

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধেও লিভারপুলকে চেপে ধরেছিল লেস্টার। ৫০ মিনিটে ম্যাডিসনের জোরাল শট ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন। এর মিনিট পাঁচেক পর আবারও দুর্দান্ত এক সেভে লেস্টার গোলদাতা ম্যাগুয়েরকে খালি হাতে ফেরান ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। অ্যালিসনের দক্ষতার সামনেও দমে যায়নি লেস্টার। বরং একের পর এক প্রচেষ্টা দিয়ে অ্যালিসনকে পরীক্ষায় ফেলছিলেন ভার্ডিরা। ৬৪ মিনিটে ডেমারি গ্রে'র বাঁকানো শট দক্ষহাতে ফিরিয়ে দেন অ্যালিসন। দ্বিতীয়ার্ধের অনেকটা সময় নিজের ছায়া হয়ে থাকলেও ৭০ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সালাহ। কিন্তু অ্যালিসনের মতই দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন স্মেইকেল। ৮৪ মিনিটে সালাহর মতই ফিরমিনোকে খালি হাতে ফেরান স্মেইকেল। দুই গোলরক্ষকের বীরত্বে শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই ফিরতে হয়েছে ক্লপ এবং ক্লদ পুয়েলের দলকে। 
     

    বোর্নমাউথে বিধ্বস্ত চেলসি

     

    বোর্নমাউথের বিপক্ষে আজ শুরু থেকেই মূল একাদশে ছিলেন হিগুয়াইন। প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময় 'চেরি'দের চেপে ধরেছিল চেলসি। এডেন হ্যাজার্ডকে সামলাতেই রীতিমত হিমশিম খাচ্ছিল এডি হাওয়ের দল। কিন্তু গোলরক্ষক আর্তুর বোরুচের দক্ষতায় লিড নিতে পারেনি 'ব্লুজ'রা। প্রথমার্ধে পজেশন, গোলের সুযোগ তৈরি- সব দিক দিয়েই এগিয়ে ছিল চেলসি। কিন্তু লিড আর নেওয়া হয়নি তাদের। শেষ পর্যন্ত লিড নিতে না পারাই কাল হয়ে দাঁড়ায় সারির দলের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ডেভিড ব্রুকসের মাইনাস থেকে দলকে লিড এনে দেন জশুয়া কিং। গোল খাওয়ার পর থেকে বোর্নমাউথের সামনে যেন তাসের ঘরের মতই ভেঙ্গে পড়ে চেলসি।

    ৬৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রুকস। মিনিট দশেক পর 'চেরি'দের জয় নিশ্চিত করেন কিং। জুনিয়র স্ট্যানিসলারের মাইনাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন নরওয়ের স্ট্রাইকার। এবং দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের শেষদিকে চেলসির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন চার্লি ড্যানিয়েলস। বড় ব্যবধানে হারায় অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না হিগুয়াইন, নিজেও ছিলেন একেবারেই গড়পড়তা। পুরো ম্যাচে চেলসি ৭বার লক্ষ্যে শট নিলেও গোলে হিগুয়াইন শট নিতে পারেননি একবারও। ১৯৯৬ সালে লিভারপুলের পর এবারই প্রিমিয়ার লিগে কোনও দল চেলসির জালে ৪বার বল পাঠাল।