"মোস্তাফিজ পারলে আমি কেন পারব না"
কাইরন পোলার্ড। আন্দ্রে রাসেল। ঢাকার অনেক বড় আশা হয়ে ছিলেন দুই ক্যারিবিয়ান ‘হার্ডহিটার’। প্রথমজনকে আউট করলেও পরের জনকে আউট করা হয়নি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের, তবে শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে সামনে রেখেও ১২ রানের সম্বল নিয়ে জিতিয়েছেন কুমিল্লাকে। ডেথ ওভারে দুই ওভারে ১১ রান, সঙ্গে ৩ উইকেট। ডেথ ওভারে সাফল্যের ক্ষেত্রে সাইফউদ্দিন বলছেন, জাতীয় দলে তার ‘সমবয়সী’ মোস্তাফিজুর রহমান পারলে তিনিও পারবেন- এমন বিশ্বাস ছিল তার। আর সাহস জোগানোর জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন তামিম ইকবালকেও।
শেষ ২৪ বলে ঢাকার প্রয়োজন ছিল ৩৮ রান। ১৭তম ওভার করতে এসে সাইফউদ্দিন পরপর দুই বলে ফিরিয়েছেন পোলার্ড ও নুরুল হাসানকে। সে ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১ রান। তবে পরের দুই ওভারে ঢাকা তুলেছিল ২৫ রান, শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। প্রথম বলেই সাইফউদ্দিনের বলে এলবিডব্লিউ রুবেল, তবে পঞ্চম বলে তার অফস্টাম্পের বাইরের ফুললেংথের বলে টেনে ছয় মেরেছিলেন রাসেল। সাইফউদ্দিন অবশ্য সাহস রেখেছিলেন ঠিকই, শেষ বলটি করেছেন ইয়র্কার। এই পেসার বলছেন, পরিকল্পনা ছিল এমনই, “সবাই পরিকল্পনা নিয়ে এগোয়। আমার পরিকল্পনা ছিল ‘ওয়াইড ইয়র্কার’। তবে রাসেল পাওয়ার হিটার, সে ভালো ছয় মেরে দিয়েছে। যেহেতু ওয়াইড ইয়র্কার হয়নি তাই শেষ বলটা ‘শতভাগ ইয়র্কার’ করেছি।
“সবচেয়ে বড় কথা হল, মোস্তাফিজ একই রকম একটা ম্যাচ জিতিয়েছিল রংপুরের বিপক্ষে। আমি এগুলো অনুভব করছিলাম। সে আমার বয়সী। ও পারলে আমি কেন পারব না। এই জিনিসটা মাথায় রেখে আমি বোলিং করে সফল হয়েছি।”
সাইফউদ্দিনের সাফল্যগাঁথা অবশ্যই এতে শেষ নয়। ১৮তম ওভারে ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেয়ে বাইরে চলে গিয়েছিলেন, মুখভঙ্গী বলছিল, ব্যথার পরিমাণ ছিল ভালই। বাঁহাতে ব্যান্ডেজ নিয়েই এসেছিলেন শেষ ওভারে বোলিং করতে। পুরস্কার বিতরণীতে সাইফউদ্দিন বলেছেন, এ প্রেরণা তিনি পেয়েছেন শহিদ আফ্রিদির কাছে, “উনি দাঁড়াতেই পারছিলেন না। তবুও দলের হয়ে বোলিং করেছেন। এটা আমাকে প্রেরণা দিয়েছে।”
আর কুমিল্লাকে ‘ঘর’ মেনে সাইফউদ্দিন তাদের প্রতি জানাচ্ছেন কৃতজ্ঞতা, “কুমিল্লা আমার ঘরের মতই। আমাকে যখন কেউ চিনত না অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে, তখন ওরা আমাকে নিয়েছে। সুযোগ দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। শুরুতে ভালো করিনি তবুও ম্যাচের পর ম্যাচ সুযোগ দিয়েছে। আজ আমি সাইফউদ্দিন বিপিএলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। এই জন্য সামান্য ব্যথা পেলেও টিমের জন্য পারফর্ম করার। সামনে সুযোগ হলে আবার করব।”
সাইফউদ্দিনের দৃষ্টিতে আছে বিশ্বকাপও, “সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুইটা হিটার ছিল উইকেটে। এর আগেও আমি ওর বিপক্ষে বল করেছিলাম, ছয় খেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিল আমি পারব। আর তামিম ভাইকে ধন্যবাদ, তিনি প্রতিটি বলে সাহস দিচ্ছিল। সবচেয়ে বড় কথা হল, সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই আমার চেষ্টা অন্য কিছু করার। যেহেতু ওয়ানডে দলে জায়গা ধরে রাখা খুব চ্যালেঞ্জিং। শুরু থেকেই আমি চেষ্টা করছি কিছু একটা করতে হবে, সেই চেষ্টাই করছি।”