নতুনদের 'সেট' করিয়ে দিতে বলছেন মাশরাফি
দুই দলেরই শেষ চার নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। কুমিল্লার শীর্ষ দুইয়ে থাকাটাও নিশ্চিত ছিল, রংপুরের সেটা নিশ্চিত করতে জিততে হতো এই ম্যাচ। তবে দুই দলই সুযোগ নিল, গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নতুন ক্রিকেটারদের একটু বাজিয়ে নেওয়ার। রংপুরে খেললেন লেগস্পিনার মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি, কুমিল্লায় খেললেন অফস্পিনার সনজিত সাহা। নতুন ক্রিকেটারদের একটা জায়গায় এনে তাদের ‘সেট’ করিয়ে দেওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।
মিনহাজুল আফ্রিদি প্রথম আলোচনায় এসেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে। নেটে তাকে দেখে সে ম্যাচে তাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন নির্বাচকরা। মাশরাফিও তাকে খেলানোর সুযোগ খুঁজছিলেন, “মনে মনে আমরা সবাই লেগ স্পিনার খুঁজছিলাম। আমিও খুঁজছি। ওকে পাওয়ার পর অনুশীলনে দেখেছিলাম। আমাদের দলে একটা জায়গা ফাঁকা ছিল, তখন আমি রেখে দিয়েছি। খেলানোর সুযোগ পাচ্ছিলাম না, আজ খেলিয়েছি।”
প্রথম দুই ওভারে ৮ রান দিয়েছিলেন আফ্রিদি, শেষ স্পেলে এসে আউট করেছেন সনজিতকেই। মাশরাফি মতে, বয়স কম হলেও তাকে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে, “প্রথম তো, একেবারে বাচ্চা ছেলে, ১৭-১৮ বছর বয়স। আমার কাছে মনে হয় যেভাবে ও বোলিং করেছে, বিশেষ করে দ্বিতীয় স্পেলে এসে দুইটা বল করেছে সে, দেখে মনে হয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী। প্রথম দিকে কিছু হাফভলি, ফুলটস দিয়েছে। পরে যেই দুইটা বল করেছে সেগুলো জায়গা মত ছিল।
“এদেরকে আসলে একটু সাহস বা ‘গাইডেন্স’ দিলে, আমাদের যেই দুর্বল জায়গাটা আছে, স্পেশালি বাংলাদেশ ক্রিকেটে, লেগ স্পিনারের ক্ষেত্রে, এমন কিছু পেলে যদি ব্যাক আপ করা যায়, তাহলে হয়তো আমাদের জন্য ভালো হবে।”
রংপুর শুরু থেকেই নতুনদের খেলানোর ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে বলেও মত তার, “চেষ্টা করেছি আমরা যত তরুণ ক্রিকেটার ছিল তাদের তুলে করার। শহিদুলকে (ইসলাম) আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ থেকে আমরা খেলিয়েছি। বিশেষ করে চট্টগ্রামের মতো জায়গায়, তাকে আমরা কঠিন বা সহজ পরিস্থিতি বলে, সবখানে তাকে চেষ্টা করেছি। সে খুব ভালো করেছেও। সব থেকে ভালো লেগেছে আমার, সে কিছুতেই ভয় পায় না। ‘ওপেন মাইন্ডে’ বল করে।
“একটা ক্রিকেটারের সবথেকে বড় শক্তি হচ্ছে সামনে কী হচ্ছে না ভেবে আমি কি করব সেটা ভাবা। সে খুব আত্মবিশ্বাসী, এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। এমন কিছু ক্রিকেটার আছে, যারা সবার চোখের সামনে নাই, এদের যদি একটু ঘষামাজা করা যায়, একটু গাইডেন্সের ভেতর আনা যায়, তাহলে এরা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ভালো জায়গা নিয়ে যেতে পারবে। বিশেষ করে এদের বয়স তো একেবারেই কম।”
“কয়েকজনের কথা বললেন, যেমন আফ্রিদি, আমার কাছে সত্যিই মনে হয়ে অনেকের মধ্যে সে আলাদা কিছু। নেটে দেখেছি, আজ খেলিয়েছি। আরেকটা ছেলে আছে, অনি, ও আমার এলাকারই ছেলে। আমার একাডেমির। খুবই তরুণ, ওর একটু সময় লাগবে। এই ছেলেগুলো ভালো। অন্যান্য দলেও আছে দুই একজন।
“এদের ঢাকা লিগ, দীর্ঘ সংস্করণের ম্যাচে বা অন্যান্য জায়গায় যদি ব্যাক আপ করা যায়, তুলে ধরা যায়, তাহলে এরা কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক অবদান রাখতে পারবে বলে বিশ্বাস করি। অন্যান্য দেশে তাকান, এরাই কিন্তু বিশ্বমানের ক্রিকেটার হয়ে যায়। আমাদের দেশে এরা একটা পর্যায়ে গিয়ে হারিয়ে যায়। আমাদের উচিত এখন থেকে একটা জায়গা আনা ও সেট করা। আমরা খুব তাড়াতাড়ি করি যাকে করি, সেটা না করে বছর পাঁচেক পর ভালো অবস্থানে আসার পর সুযোগ দেওয়া (উচিৎ), যেন ওরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিতে পারে (দেশকে)।”