মাশরাফির যে পরামর্শে ফাইনালে এমন বিধ্বংসী তামিম...
কিছু কিছু ইনিংস থাকে, স্বপ্নে পাওয়ার মতো মনে হয়। কিছু কিছু দিন আসে, যখন সবকিছু আপনার যা চাওয়া সেরকম হয়ে যায়। তামিম ইকবালের আজ ছিল সেরকম দিন। তিনি যা চেয়েছেন, তা-ই হয়েছে। যেসব শট খেলতে চেয়েছেন, সব খেলতে পেরেছেন। এমনকি একটা সুযোগ দিয়েছিলেন, সেটাও বোধ হয় আউট হতে চাননি বলেই হননি। বিশেষ করে এমন ফাইনালের আগে তামিম কৃতিত্ব দিচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। তাঁর কথাটাই আজ মনে রেখেছিলেন ফাইনালের আগে।
তামিমের জন্য একদিন দিয়ে ফাইনালটা অন্যরকমই। আগে কখনো এই টুর্নামেন্ট জেতা দূরে থাক, ফাইনালেও খেলা হয়নি। অথচ আজ মাঠে নামার আগে তামিম নিজেই শতভাগ নিশ্চিত ছিলেন, জিতছেন। সেই জয়ের মন্ত্রটা পেয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছ থেকে, ‘সত্যি কথা, আমি খুব টেন্সড ছিলাম। মাশরাফি ভাইয়ের একটা কৌশল কাজে লাগিয়েছি। আমি জানি না, উনার মনে কী থাকে। কিন্তু উনি সবসময় বলে আমি জিতব, আমি জিতব, আমি জিতব। আমি শুধু সেটাই মনে রেখেছি। প্রথম দিন থেকে বলে সেছি, যাই হোক, আমরা জিতব। চাপে থাকলেও আমি ইতিবাচক বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
কিন্তু এমন রুদ্রমূর্তিতে থাকার রহস্য তো ভাঙল না। এই টুর্নামেন্টে নিজের ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো টানা দুই ম্যাচে ডাক মেরেছেন। একটা ৭৩ রানের ইনিংস ছাড়া খুব বড় কিছুও করতে পারেননি। কিন্তু এরকম একটা ইনিংস খেলা, তাও আবার ফাইনালে- সেটি ছাড়িয়ে যায় সব কল্পনাকেই। তামিম নিজেই যেন আছেন ঘোরের মধ্যে, ‘সত্যি কথা হচ্ছে, আমি এখনো ঘোরে আছি। আমি এখনো জানি না, কীভাবে ব্যাট করেছি। আমি রুমে গিয়ে হাইলাইটস দেখব। একটা সময় বিজয় আউট হয়ে যাওয়ার সময় মেজাজ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। নিজেকে এরপর শান্ত করতে হয়। হাইলাইটস দেখলে হয়তো বলতে পারব কীভাবে কী হয়েছে।’
তামিম অবশ্য নিজের পরিকল্পনার কথাটা জানালেন, ‘আমি কখনোই চিন্তা করি নাই, এরকম ইনিংস খেলব। আমি একটাই কথাই বলব, আমি পুরো জিনিসটা দারুণ পরিকল্পনা করেছি। আমি বার বার বলছিলাম, সাকিব-নারাইনক উইকেট দেব না। আমার মনে হয় না, একটা ছয় ছাড়া নারাইনকে নিয়ে কোনো রিস্ক নিয়েছি। আপনি দেখেন, ওদের জয়ের পেছনে সাকিব-নারাইনের বড় অবদান ছিল।’
নারাইনকে যা হয় দেখে খেলেছেন, একটা ছয় ছাড়া তেমন কোনো ঝুঁকিও নেয়নি। তবে রাসেলকে দিয়ে সেটা পুষিয়ে দেবেন, সেটাই বা কে ভেবেছিল? তামিম বললেন, রাসেলকে বরাবরই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেন,’ আমি আমার শুরু করলাম রুবেলের ওভার থেকে। ওটার পরেই মনে হলো, আমাকে চালিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি দেখেন, নারাইনের একটা ওভার ছিল। রাসেলকে মারার পরেও। এরকম চিন্তা করলাম, আমাকে চালিয়ে যেতে হবে। আমি নরমালি ওকে ভালো খেলি। আর কিছু দিনে সবকিছুই হয়, যা চাই।’