হুট করে অধিনায়ক বদলের ব্যাপার 'কুৎসিত' হয়ে উঠেছিল কুমিল্লার
বিপিএলের গত আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল, এবারও হওয়ার কথা ছিল তারই। তবে শেষ মুহুর্তে বিপিএল খেলা নিশ্চিত হওয়ার পর এবার অধিনায়ক করা হয় অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথকে। অথচ এ ব্যাপারে কিছু জানতেনও না তামিম ইকবাল, স্মিথের অধিনায়ক হওয়ার খবর তামিম জেনেছিলেন স্মিথেরই এজেন্টের কাছে! কুমিল্লার হেডকোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, এসব ব্যাপার একসময় হয়ে উঠেছিল ‘কুৎসিত’।
বল-টেম্পারিংয়ের দায়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিচ্ছিন্ন স্মিথকে নিয়ে বিপিএলের আগে হয়েছিল বিতর্ক- ড্রাফটের বাইরে থেকে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল বলে। শেষ পর্যন্ত স্মিথ বিপিএল খেলার অনুমতি পেয়েছিলেন, তবে চোটের কারণে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই ফিরেছিলেন অস্ট্রেলিয়া। স্মিথকে কুমিল্লায় খেলানোর ব্যাপারে মূল ভূমিকা রেখেছিলেন তামিমই। ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সালাউদ্দিন বলেছেন, “গত ছয়-সাত মাস ধরে আমি ও তামিম বিপিএলে আমাদের স্কোয়াড নিয়ে, আমরা কোথায় জোর দিব এসব নিয়ে পরিকল্পনা করেছি। স্টিভ স্মিথের সঙ্গে যোগাযোগও তামিমের সহায়তায় হয়েছে, তার বাংলাদেশের আসার পেছনেও তামিমের বড় ভূমিকা ছিল।”
“শুরুতে আমরা সবাই জানতাম, তামিম আমাদের অধিনায়ক। আমরা পরিকল্পনাও করেছি সেভাবেই। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তামিম স্মিথের এজেন্টের কাছে জেনেছে যে তাকে (স্মিথকে) আমাদের অধিনায়ক করা হচ্ছে। তামিমের জন্য এটা বড় ধাক্কা ছিল। তার হতাশ হওয়ার কারণ আছে, কারণ এ টুর্নামেন্টে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোয়াড গড়ার পেছনে তার পরিশ্রমকে উপেক্ষা করা হয়েছিল। এমনকি স্মিথও তামিমকে জিজ্ঞাসা করেছে, তার নেতৃত্ব দেওয়া উচিৎ হবে কিনা। কারণ সবকিছু দ্রুত এবং সবাইকে বিস্মিত করে বদলে যাওয়ার আগে সেও জানতো, তামিমই অধিনায়কত্ব করবে।”
অধিনায়কত্বের ব্যাপারটা এক সময় বেশ কুৎসিত হয়ে উঠেছিল বলেও মন্তব্য করেছেন সালাউদ্দিন, “সত্যি বলতে কি, তামিম এমন কেউ না যে এ কারণে তার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে। এমনকি স্মিথ আসার পর সে আমাকে জিজ্ঞাসাও করেছিল, স্মিথকে অধিনায়ক বানানো যায় কিনা। তবে স্মিথকে টুর্নামেন্টের ঠিক আগে কুমিল্লার অধিনায়ক বানানোর হঠাৎ সিদ্ধান্তে ব্যাপারটা কুৎসিত হয়ে উঠেছিল। আমার বিশ্বাস, এ ব্যাপারটা ভিন্নভাবে সামাল দিতে পারলে আমরা আরও দৃঢ় একটা ড্রেসিংরুম পেতাম।”
এসব কারণে শুরুতে তামিমের পারফরম্যান্স একটু কমতির দিকে ছিল বলেও ধারণা সালাউদ্দিনের, “পুরো ঘটনাটা তামিম অন্যভাবে নিতে পারতো। ভাগ্যক্রমে সেটা হয়নি। তবে সবকিছুর পরও সে দলের কারণে যে নিবেদন দেখিয়েছে, এটাকে তার দিক থেকে আত্মত্যাগই বলতে হবে, কারণ এটা যে কারও অহমে আঘাত করার জন্য যথেষ্ট।”
তবে এসব কারণেই স্মিথ চলে যাওয়ার পরও অধিনায়কত্ব নেননি তামিম। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা জিতেছে ইমরুল কায়েসের অধিনায়কত্বে। অবশ্য মাঠে বেশ সরব ছিলেন তামিম, ইমরুলও প্লে-অফ জেতার পর সরাসরি বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অবদান ছিল তামিমের। কুমিল্লার 'সারপ্রাইজ প্যাকেজ' শামসুর রহমানকে দলে নেওয়া ব্যাপারেও তামিমের সরাসরি প্রভাবের কথা এর আগে জানিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। তামিমের সেঞ্চুরিতেই ফাইনালে ঢাকাকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার বিপিএল জিতেছে কুমিল্লা।