'অ্যাটলেটিকোর খেলায় ইতালিয়ান ছাপ বেশি'
ফার্নান্দো তোরেস, ডিয়েগো কস্তা, মারিও মানজুকিচ, আঁতোয়া গ্রিযমান, আলভারো মোরাতা। কোচ ডিয়েগো সিমিওনের অধীনে বিশ্বমানের ফরোয়ার্ডের অভাব হয়নি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। কিন্তু গত দশকে সিমিওনের অধীনে অ্যাটলেটিকোর সাফল্যের মূল ভিতটা তাদের আক্রমণ নয়; বরং ডিয়েগো গোডিন, হুয়ানফ্রানদের নিয়ে গড়া রক্ষণ। আগামীকাল বুধবার ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে মুখোমুখি হচ্ছে অ্যাটলেটিকোর এবং জুভেন্টাস। ম্যাচের আগে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জুভেন্টাস অধিনায়ক জর্জিও কিয়েলিনি জানিয়েছেন, অ্যাটলেটিকোর খেলায় স্প্যানিশ ঘরানার চেয়ে ইতালিয়ান ছাপটাই বেশি।
অ্যাটলেটিকোর রক্ষণ নিয়ে কথা বললেও তার ফরোয়ার্ডদেরও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কিয়েলিনি, 'গ্রিযি (গ্রিযমান), ডিয়েগো (কস্তা) এবং আলভারো (মোরাতা) তিনজনই ইউরোপের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড। নিজেদের দিনে যেকোনও প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে তারা। গতি, শারীরিক শক্তি এবং দারুণ ড্রিবলিংয়ে ডিফেন্ডারদের কুপোকাত করতে দক্ষ তারা। আমাদের পুরোটা ম্যাচই সতর্ক থাকতে হবে। ম্যাচটি তাদের নিজেদের মাঠে হওয়ায় ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনতে আরও তেতে থাকবে তারা।'
গ্রিযমানদের মত অ্যাটলেটিকোর খেলার ধরন নিয়েও বলেছেন জুভেন্টাস অধিনায়ক, 'অ্যাটলেটিকো স্পেনের অন্য দলগুলোর মত উইং ব্যবহার করে খেলে না। মাঝমাঠে ছোট ছোট পাস এবং বল না থাকলে প্রেসিং নির্ভর ফুটবলে অভ্যস্ত তারা। সেটপিসগুলোতেও দুর্দান্ত তারা। স্পেনের অন্য দলগুলোর মধ্যে এরকমটা সাধারণত দেখা যায় না, কিন্তু ইতালিয়ান দলগুলো এভাবেই খেলে থাকে সাধারণত। অ্যাটলেটিকোর খেলায় স্পেনের চেয়ে ইতালিয়ান ছাপটাই বেশি। ডিয়েগো (সিমিওনে) নিজেও দীর্ঘদিন ইন্টারে (ইন্টার মিলান) খেলেছেন। হয়ত তার দর্শন তাদের (ইন্টার) থেকেই অনুপ্রাণিত।
মার্কার সাথে সাক্ষাৎকারে শুধু কালকের ম্যাচ নয়, কিয়েলিনি কথা বলেছেন নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে, 'কালসিওপোলি' (২০০৬ সালে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে জুভেন্টাসের দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যাওয়া) সহ আরও অনেক বিষয়ে। তবে জিয়ানলুইজি বুফনের কথা উঠতে যেন একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কিয়েলিনি, 'জিজি (বুফন) আমার কাছে শুধু সতীর্থ নয়, একজন বন্ধুও। জিজি, আমি, লিও (বনুচ্চি), আন্দ্রেয়া (বার্জাগলি) একত্রে খেলেছি দীর্ঘদিন। গত গ্রীষ্মে তার বিদায়টা আমাদের জন্য বেশ বিষাদময়ই ছিল। এখনও গোলবারের নিচে জিজিকে দেখতে না পাওয়ার সাথে ধাতস্থ হতে পারিনি আমরা।'
এক কিংবদন্তী ক্লাব ছেড়েছেন, আর তার জায়গায় এসেছেন আরেকজন। গত গ্রীষ্মে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে দলে নিয়ে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছিল জুভেন্টাস। গত দশক দুয়েক ধরে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে পারেনি তুরিনের বুড়িরা, আর এখন দলে এসেছেন গত ৫ বছরে ৪বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন। রোনালদোর হাত ধরেই জুভেন্টাসের ইউরোপিয়ান গেরোর সমাপ্তি দেখছেন কিয়েলিনি, 'ক্রিসের (রোনালদো) জুভেন্টাসে যোগ দেওয়া অবশ্যই আমাদের এবং ইতালিয়ান ফুটবলের জন্য দারুণ। আমাদের আক্রমণকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে সে। বড় ম্যাচে গোল করা ওর জন্য সাধারণ ব্যাপার। আমাদের হয়ে খেলা একমাত্র ফাইনালেও গোল করেছে সে (ইতালিয়ান সুপারকাপ)। ক্রিসের চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমাদের জন্য ইতিবাচক। চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা সবসময়ই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই মৌসুমেই ইউরোপিয়ান গেরো কাটাতে চাই আমরা।'