পাঁচ গোলের থ্রিলারে জয় সিটিরই
দ্বিতীয় রাউন্ডের বাকি সাত ম্যাচে প্রথমার্ধে যেখানে একটি গোলও হয়নি, ম্যানচেস্টার সিটি-শালকে ম্যাচে প্রথম ৪৫ মিনিটেই হলো তিন গোল! পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত অবশ্য শালকের মাঠ থেকে জয় নিয়েই ফিরেছে সিটিজেনরা। জমজমাট এক ম্যাচে শেষ পাঁচ মিনিটে দুই গোল করে শালকেকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল।
ম্যাচের প্রথম সুযোগটা এসেছিল সার্জিও আগুয়েরোর সামনে। ৭ মিনিটে তাঁর দারুণ এক হেড ঠেকিয়ে দেন শালকে কিপার ফাহরম্যান। ১৬ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনকেও গোলবঞ্চিত করেন তিনি। কিন্তু পরের মিনিটেই সেই গোলরক্ষকই করে বসেন ভুল। সিটিজেনদের প্রেসিংয়ের পরও ডিবক্সের ভেতর থেকে ছোট পাসে খেলা বিল্ড আপ করতে চেয়েছিলেন, দিয়েছেন ভুল পাস। ডিফেন্ডারের পা থেকে সেই বল ছিনিয়ে নিয়ে ডেভিড সিলভা দিয়েছেন পাস। সহজ কাজটা এরপর সেরেছেন আগুয়েরো। ৩৩ মিনিটে ডি ব্রুইন আরেকটি সুযোগ নষ্ট না করা করলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত সিটি।
ব্যবধান দ্বিগুণ করতে না পারার খেসারত দেয় এরপর পেপ গার্দিওলার দল। শালকের একটি শট নিকোলাস অটামেন্ডির হাতে লেগে চলে যায় বাইরে দিয়ে। অটামেন্ডি অবশ্য ইচ্ছে করে হাতে লাগাননি বল। ব্লক করতেই গিয়েছিলেন শটটি। কিন্তু বাগড়া বাঁধিয়ে বসে ভিএরআর। প্রায় আড়াই মিনিট ধরে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে অবশেষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে ম্যাচে সমতা আনেন নাবিল বেন্তালেব। তার উল্লাস অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের আগেই দ্বিগুণ হয়।
বিরতির ঠিক আগে আবার পেনাল্টি পেয়ে যায় শালকে। এবার অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশয় থাকল না কোনো। বক্সের ভেতর সালিফ সানেকে ফাউল করেন ফার্নান্দিনহো। এরপর পেনাল্টি থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করে শালকে এগিয়ে দেন বেন্তালেব।
পিছিয়ে পড়া সিটি দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোল শোধে মরিয়া ছিল। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করেছেন রাহিম স্টার্লিং, ইলকায় গুন্ডোয়ানরা। গোল তো হচ্ছিলই না, মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে আসে অটামেন্ডির লাল কার্ড। ৬৮ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে অটামেন্ডি মাঠ ছাড়লে দশ জনের দলে পরিণত হয় সিটি। সিটির হয়ে এই প্রথমবার লাল কার্ড দেখলেন তিনি।
ম্যাচের তখন ৮৫ মিনিট। সাত মিনিট আগেই বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন লিরয় সানে। সাবেক শালকে খেলোয়াড়েই কপাল পোড়ে ঘরের দলের। বক্সের বাইরে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে দারুণ এক গোল করে সিটিকে সমতা ফেরান সানে। এর পাঁচ মিনিট পরেই সিটিকে জয়সূচক গোল এনে দেন স্টার্লিং, এডারসনের বাড়ান বলে শালকে গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ কাজে লাগান তিনি। তাঁর ডান পায়ের শট আর ঠেকাতে পারেননি শালকে কিপার।
শেষ পর্যন্ত শালকের মাঠ থেকে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ফিরল সিটি। তিনটি মহামূল্যবান অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে দ্বিতীয় লেগে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে তাঁরা। এই জয়ে জার্মান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শেষ আট ম্যাচ অপরাজিত থাকল সিটি। অন্যদিকে ঘরের মাঠে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে নয় ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের স্বাদ পেতে হলো শালকেকে।