মাঠে থাকতে চাওয়া, না চাওয়ার যত গল্প
গোলরক্ষককে বদলি করাতে চেয়েছিলেন চেলসি ম্যানেজার মাউরসিও সারি। কিন্তু কেপা ছাড়তে চাননি মাঠ, থেকেই গেছেন শেষ পর্যন্ত। পড়ে টাইব্রেকারেও অংশ নিয়েছেন, যদিও নায়ক হয়ে উঠতে পারেননি আর কেপা। ম্যাচটা ম্যানচেস্টার সিটির কাছে শেষ পর্যন্ত হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে চেলসির। কিন্তু এসবকিছুই ঢাকা পড়েছে ওই এক ঘটনায়, কেপার বদলি হতে অস্বীকৃতি জানানোয়।
ফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এমন ঘটনা ফুটবল আগে দেখেনি। তবে খেলোয়াড়দেড় মাঠ ছাড়তে না চেয়ে গোঁ ধরে বসা থাকার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। মাঠ ছাড়তে যেমন অস্বীকৃতি জানিয়েছেন খেলোয়াড়েরা, বদলি হয়ে মাঠে নামতেও অনেকে আপত্তি জানিয়েছিলেন অনেকে।
লুকাস ফাবিয়ানস্কি
২০১৭ সালের এই ঘটনাটিই কেপার সঙ্গে সবচেয়ে মিল খুঁজে পেতে পারেন আপনি। টটেনহামের সঙ্গে ম্যাচে ফাবিয়ানস্কি আহত হয়েছিলেন ৮১ মিনিটে। সোয়ানসি গোলরক্ষক এরপর বুকে হাত দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়েও ছিলেন অনেকক্ষণ। তাতে সোয়ানসি ম্যানেজার তাকে বদলানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। ৮৬ মিনিটে চতুর্থ রেফারির বোর্ডে ফাবিয়ানস্কির জার্সি নম্বরও জ্বলে উঠেছিল। কিন্তু পরে পোলিশ গোলরক্ষক মাঠ থেকেই জানিয়েছিলেন তিনি নামতে চান না। সোয়ানসি ম্যানেজারও আর উচ্চবাচ্য করেননি সেটা নিয়ে। শেষপর্যন্ত অবশ্য ফাবিয়ানস্কির সিদ্ধান্তও ফলপ্রসূ হয়নি। ওই ঘটনার আগ পর্যন্ত সোয়ানসি এগিয়ে ছিল ১-০ গোলে। পরে বাকি সময়ে তিন গোল হজম করে ফাবিয়ানস্কির দল ম্যাচ হারে ৩-১ গোলে।
কার্লোস তেভেজ
চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে শুরুর একাদশে কার্লোস তেভেজকে দলে রাখেননি রবার্তো মানচিনি। ব্যাপারটা মোটেই পছন্দ হয়নি তখনকার ম্যানচেস্টার সিটি অধিনায়ক তেভেজের। দ্বিতীয়ার্ধে একটা সময় মানচিনি তেভেজকে ওয়ার্ম আপে নামতে বলেন। কিন্তু তেভেজ তখনও একাদশে না থাকাটাই হজম করতে পারছিলেন না। ওয়ার্ম আপে অস্বীকৃতি জানান তেভেজ, পরে আর মাঠেও নামেননি তিনি।
২০১১ সালে ওই ঘটনার পর তেভেজকে ক্লাব নিষিদ্ধ করা হয় ৫ মাসের জন্য! পরে অবশ্য ফিরে সিটির নাটকীয় লিগ জয়ে অবদান রেখেছিলেন তেভেজ।
নিকোলা কালিনিচ
ক্রোয়াট স্ট্রাইকারের ঘটনাটি মাত্র কয়েকদিন আগের। সবচেয়ে অভাগা খেলোয়াড়ও ভাবতে পারেন আপনি তাকে। রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম ম্যাচ ছিল নাইজেরিয়ার বিপক্ষে। কালিনিচকে একাদশ থেকে বাদ দিয়েছিলেন কোচ জালাটকো ডালিচ। কিন্তু ম্যাচের একটা সময় আবারও কালিনিচকে নামাতে চেয়েছিলেন তিনি। তখন বেঁকে বসেছিলেন কালিনিচ। ওই ম্যাচে তাই আর খেলা হয়নি তার, খেলা হয়নি আসলে পুরো টুর্নামেন্টেই। ওই ম্যাচের পরই রাশিয়া থেকে কালিনিচকে দেশে ফেরত পাঠান ডালিচ। আর ক্রোয়েশিয়া তরতর করে উঠে যায় বিশ্বকাপের ফাইনালে। ফ্রান্সের কাছে হেরে যদিও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি ক্রোয়েশিয়ার, কিন্তু ওই দলটা তার আগেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছল। আর সেটার অংশ না হয়ে কালিনিচ থেকে গেছেন উপেক্ষিতই। রানার আপ মেডেলও আর তিনি নেননি শেষ পর্যন্ত।