• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    টটেনহামকে হারিয়ে সারির চেলসির স্বস্তি

    টটেনহামকে হারিয়ে সারির চেলসির স্বস্তি    

    গত সপ্তাহে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ইএফএল কাপের ফাইনাল হেরেছিল চেলসি। কিন্তু ম্যাচ ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছিল গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা এবং কোচ মরিজিও সারির মধ্যকার ভুল বোঝাবোঝি। সংবাদ মাধ্যমে কেপার সাথে সমস্যা নেই জানালেও আজ টটেনহাম হটস্পারের বিপক্ষে কেপাকে ঠিকই বসিয়ে রেখেছিলেন সারি। নেমেছিলেন উইলি কাবায়েরো। ক্লিনশীট এবং দুর্দান্ত সব সেভ দিয়ে কোচের আস্থার পূর্ণ প্রতিদানই দিলেন তিনি। চেলসিও ফিরল জয়ধারায়। তাতে স্বস্তি ফিরল চাপে থাকা চেলসি ম্যানেজার মাউরিসিও সারিরও। টটেনহাম হটস্পারকে ২-০ গোলে হারিয়েছে সারির দল। গোল করেছেন পেদ্রো রদ্রিগেজ, অন্যটি ছিল আআত্মঘাতী। 

    কেপার ঘটনাটা যে সিটির বিপক্ষে চেলসির দুর্দান্ত লড়াইয়ের সুফলটুকু পুরোপুরি কেড়ে নেয়নি সেটা শুরু থেকেই বোঝা গিয়েছিল স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে। মাত্র ৬ মিনিটেই টটেনহামকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল 'ব্লুজ'রা। সিজার অ্যাজপিলিকুয়েতার লম্বা পাস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় স্পার্স রক্ষণভাগ। বল পেয়েই গঞ্জালো হিগুয়াইনের জোরাল শট পরাস্ত করে স্পার্স গোলরক্ষক হুগো লরিসকে। কিন্তু ফিরে আসে বারপোস্টে প্রতিহত হয়ে। 

    ১৪ মিনিটে একটা পেনাল্টিও পেতে পারত চেলসি। মাতেও কোভাসিচের শট মুসা সিসোকোর হাতে লাগলেও অবশ্য পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। তবে দমে যায়নি চেলসি। মিনিট পাঁচেক পর আরও একবার গোলে শট করেন হিগুয়াইন। কিন্তু এবারও ভাগ্য সহায় হয়নি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের। এডেন হ্যাজার্ডের পাস থেকে 'এল পিপিতা'র শট চলে যায় স্পার্স গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে। চেলসির নিরন্তর আক্রমণে রীতিমত অসহায়ই হয়ে পড়েছিল স্পার্স। প্রথমার্ধে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন, হ্যারি কেইনদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি। গোলের সুযোগ, বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোলটাই পাওয়া হয়নি চেলসির। ২৮ মিনিটে ডিবক্সের প্রায় ২০ গজ থেকে শট নিয়েছিলেন জর্জিনহো, কিন্তু বল চলে যায় গোলপোষ্টের বাইরে দিয়ে। ৩৮ মিনিটে আবারও সুযোগ পেয়েছিল চেলসি। কিন্তু হ্যাজার্ডের শট দক্ষহাতে ফিরিয়ে দেন লরিস। এত সুযোগ পেয়েও লিড নিতে না পারার বেশ চড়া মাশুলই গুণতে হত চেলসিকে। কিন্তু ৪৪ মিনিটে হ্যারি উইঙ্কসের জোরাল শট কাবায়েরোকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় ক্রসবারে।

     

     

    প্রথমার্ধে সুযোগ পেয়েও বল জালে পাঠাতে না পারা চেলসি ৫৫ মিনিটে অবশ্য ঠিকই লরিসকে পরাস্ত করেছিল। কিন্তু জর্জিনহোর পাস থেকে হিগুয়াইনের শট স্পার্স জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় গোলটি। তবে এরপর আর খুব বেশিক্ষণ গোলের জন্য বুভুক্ষ হয়ে ঘুরতে হয়নি সারির দলকে। ৫৭ মিনিটে অ্যাজপিলিকুয়েতার পাস থেকে অবশেষে চেলসিকে লিড এনে দেন পেদ্রো। আজ চেলসির সেরা ফুটবলার ছিলেন তিনিই। শুধু আক্রমণ নয়, রক্ষণেও দলকে দারুণভাবে সাহায্য করেছেন পেদ্রো। ৬৪ মিনিটে অ্যাজপিলিকুয়েতাকে কাটিয়ে গোলরক্ষক কাবায়েরোকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন এরিকসেন। শট নিতে যাবেন, তখনই পেছন থেকে দুর্দান্ত এক ট্যাকেলে তার পা থেকে বল কেড়ে নেন পেদ্রো। হর্ষধ্বনিতে মুখরিত হয় স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ, ডাগআউটে সচরাচর গম্ভীর সারির মুখেও দেখা মেলে হাসির। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এই স্বস্তিটাই তো উধাও হয়ে গিয়েছিল অনেকটুকু।

    ৭১ মিনিটে ম্যাচে প্রথম সুযোগ পেয়েছিল স্পার্স। কিন্তু কেইনের শট দক্ষহাতে ফিরিয়ে দেন কাবায়েরো। এই সেভের পর 'হু নিডস কেপা!' (কেপাকে দরকার নেই) ধ্বনিও শোনা গেছে চেলসি সমর্থকদের থেকে। কাবায়েরো যখন দারুণ খেলছিলেন, অন্যপ্রান্তে তখন লড়িসের কপালে শুধুই হতাশা। ৮৪ মিনিটে কিয়েরন ট্রিপিয়েরের ব্যাকপাস বুঝতে না পেরে এগিয়ে আসেন লরিস। ফাঁকা পোস্টে জড়ায় ট্রিপিয়েরের পাস, নিজেদের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন ইংলিশ রাইটব্যাক নিজেই। শেষদিকে আর তেমন সুযোগও পায়নি স্পার্স। কেইনদের রুখে দিয়ে তাই দুর্দান্ত এক জয় ছিনিয়ে আনল চেলসি। সেই সাথে টিকে থাকল ব্লুজদের শীর্ষ চারে উঠার সম্ভাবনাও। কিন্তু এই হারে অনেকটাই ধূসর হয়ে গেল টটেনহামের শিরোপা সম্ভাবনা। আগের ম্যাচে বার্নলির কাছে হারের পর স্ট্যামফোর্ড ব্রিজেও হারলো মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল। ৬০ পয়েন্ট নিয়ে তাঁরা আছে এখন পয়েন্ট তালিকার তিনে। আর ওদিকে লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি নিজেদের ম্যাচে জিতে বাড়িয়ে নিয়েছে পয়েন্ট ব্যবধান।