কিক অফের আগে: অসম্ভবকে সম্ভব করতে প্যারিসে 'খোঁড়া' ইউনাইটেড
অসম্ভবকে সম্ভব করতে প্যারিসে 'খোঁড়া' ইউনাইটেড
প্যারিস সেইন্ট জার্মেই বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড; ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোল দ্বিতীয় লেগ; পার্ক দে প্রিন্স; ৭ মার্চ, রাত ২টা
নেইমার, এডিনসন কাভানি, থমাস মুনিয়েরকে ছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলর প্রথম লেগে নেমেছিল প্যারিস সেইন্ট জার্মেই। ওলে গানার সোলশায়ারের অধীনে নিজেদের ফিরে পাওয়া পল পগবা, মার্কাস রাশফোর্ড, অ্যান্থনি মার্শিয়ালদের ইউনাইটেডের পক্ষেই বাজি ধরার লোকের সংখ্যা ছিল বেশি। কিন্তু ২-০ গোলের জয়ে শেষ আটে যেন এক পায়ে দিয়েই রেখেছে পিএসজি। নেইমার, কাভানিরা না থাকলেও কিলিয়ান এমবাপ্পে এবং সাবেক 'রেড ডেভিল' আনহেল ডি মারিয়ায় সওয়ার হয়ে শেষ হাসি হেসেছে থমাস তুখেলের দলই। সপ্তাহ তিনেক পর দৃশ্যপট যেন বদলে গেছে ১৮০ ডিগ্রি। পিএসজি নয়, দ্বিতীয় লেগের আগে ইনজুরি জর্জর এখন ইউনাইটেডই। পরের রাউন্ডে যেতে 'ফেবারিট' কে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
'মৌসুমের সবচেয়ে বাজে সময়েই নকআউটে খেলছি'
ইনজুরির কারণে দ্বিতীয় লেগে মার্শিয়াল, জেসি লিনগার্ড, হুয়ান মাতাদের কেউই থাকছেন না ইউনাইটেডের হয়ে। পগবার বহিষ্কারাদেশ সহ মূল স্কোয়াডের মোট ১০জনকে ছাড়া প্যারিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ইউনাইটেড। এতজন ছাড়া পিএসজির মত দলের বিপক্ষে খেলতে নামার আগেই মানসিকভাবে কিছুটা হলেও হয়ত পিছিয়ে থাকতে পারে ইউনাইটেড। কোচ সোলশায়ারও মেনে নিচ্ছেন মানসিকতার ব্যাপারটা, ‘মৌসুমের সবচেয়ে খারাপ সময়ে ইনজুরিতে পড়েছে ছেলেরা। নকআউট পর্বে দ্বিতীয় কোনও সুযোগ নেই, মরো কিংবা মারো। এরকম ম্যাচগুলোয় অবশ্যই পূর্ণশক্তির স্কোয়াডই চাইবে সবাই। তবে যা আমাদের হাতে নেই, সেটা নিয়ে ভাবতে চাই না।’ প্রথম লেগে ইনজুরির কারণে নেইমারের মত ফুটবলাররা ছিলেন না পিএসজির একাদশে। তারপরেও দারুণ এক জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন এমবাপ্পেরা। দ্বিতীয় লেগের আগে প্রতিপক্ষের পারফরম্যান্স থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজলেন সোলশায়ার, ‘ইনজুরির দোহাই দেওয়ার চেয়ে রসদে যা আছে, সেটা দিয়েই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারাই কৃতিত্বের নিদর্শন। পিএসজি প্রথম লেগে তা-ই করেছে। অবশ্যই দুর্দান্ত খেলেছে তারা। ইনজুরির কারণে ভেঙ্গে না পড়ে পিএসজির প্রথম লেগের পারফরম্যান্স আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবেই কাজ করবে।’
‘শেষ বাঁশি পর্যন্ত সুযোগ আছে দু’দলেরই’
প্রথম লেগে জয় এবং দুটি ‘অ্যাওয়ে’ গোল নিয়ে ওল্ড ট্রাফোর্ড ছেড়েছিল পিএসজি। খর্বশক্তির দল নিয়েও ট্যাকটিক্সের মারপ্যাঁচে সোলশারের ইউনাইটেডকে হারিয়ে দিয়েছিল ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয় লেগের আগে অনুশীলনে ফিরেছেন কাভানি, মুনিয়েররা। আর ইউনাইটেডের একাধিক ফুটবলার পড়েছেন ইনজুরিতে। সব মিলিয়ে পিএসজির বিপক্ষে বাজি ধরার লোকের সংখ্যা হয়ত গোণা যাবে দু’হাতেই। কিন্তু এতকিছুর পরও ইউনাইটেডকে সমীহই করছেন তুখেল, ‘এখনও কিছুই নিশ্চিত নয়। প্রথম লেগে আমরা ভাল খেলেছি। দ্বিতীয় লেগে তারই পুনরাবৃত্তি দরকার। ইউনাইটেডের স্কোয়াডটা দারুণ। পল (পগবা), অ্যান্থনিরা (মার্শিয়াল) না থাকলেও আমাদের বিপদে ফেলার যথেষ্ট রসদ এখনও আছে তাদের। আর নকআউট পর্বে আত্মতুষ্টিতে ভোগার চেয়ে বোকামি আর কিছু হতে পারে না। অবশ্যই কোয়ার্টারে যাওয়ার প্রত্যাশা আছে আমাদের, কিন্তু এখনও নিশ্চিতভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
দলের খবর
সপ্তাহ তিনেক আগে পিএসজি এবং ইউনাইটেডের অবস্থা যেন একেবারেই উল্টো। ইনজুরির কারণে ইউনাইটেডের হয়ে থাকছেন না পগবা, মার্শিয়াল, লিনগার্ড, অ্যান্ডার হেরেরা, নেমানিয়া মাতিচ, ফিল জোনস, অ্যালেক্সিস সানচেজদের কেউই। পিএসজির হয়ে থাকছেন না নেইমার। তবে অনুশীলনে ফিরেছেন কাভানি, তবে আজ হয়ত শুরু থেকেই তাকে একাদশে রাখবেন না তুখেল। গত সপ্তাহে ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন মুনিয়েরও।
সম্ভাব্য মূল একাদশ
পিএসজি (৪-৩-৩): বুফন; কেহরের, সিলভা, কিম্পেম্বে, বের্নাত; ভেরাত্তি, মার্কিনিয়োস, এন’কুকু; ড্র্যাক্সলার, এমবাপ্পে, ডি মারিয়া
ম্যান ইউনাইটেড (৪-৩-৩): ডি গেয়া; ইয়ং, স্মলিং, লিন্ডেলফ, শ’; ম্যাকটোমিনে, ফ্রেড, দালোত; পেরেইরা, লুকাকু, রাশফোর্ড
সংখ্যায় সংখ্যায়
- সোলশায়ারের অধীনে খেলা ৮ ‘অ্যাওয়ে’ ম্যাচের প্রতিটিই জিতেছে ইউনাইটেড
- ফ্রেঞ্চ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে খেলা ২৯ ম্যাচে মাত্র ৩বার হেরেছে ইউনাইটেড
- নিজেদের শেষ ৫ম্যাচের প্রতিটিই জিতেছে পিএসজি