আর্সেনাল,চেলসি কোয়ার্টারে, ইন্টারকে বিদায় দিল ফ্রাঙ্কফুর্ট
প্রথম লেগে রেনের মাঠ থেকে ৩-১ গোলের অপ্রত্যাশিত এক হার নিয়ে ফিরেছিল আর্সেনাল। প্রথমবারের মতো ফ্রেঞ্চ প্রতিপক্ষের কাছে হেরেছিল গানাররা। উনাই এমেরি অবশ্য ম্যাচের পরই বলে রেখেছিলেন, এখান থেকেও পরের রাউন্ডে যাওয়া খুবই সম্ভব তার দলের জন্য। এমেরির আর্সেনাল কথা রেখেছে। দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোলে জিতে আর্সেনাল চলে গেছে ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।
পিয়ের এমেরিক অবামেয়াং এর জোড়া গোলে কাজটা সহজ হয়েছে আর্সেনালের। ম্যাচের ৫ মিনিটেই প্রথম গোল করেছিলেন তিনি, এরপর এমিরেটেসে গোল করেছেন মাতিল্যান্ড নিলসও। দুই লেগ মিলিয়ে তখন ৩-৩ গোলে সমতা থাকলেও অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। কিন্তু সেটা মোটেই স্বস্তির ছিল না আর্সেনাল সমর্থকদের জন্য। পরে ৭২ মিনিটে এমিরেটসকে শান্ত করেছেন অবামেয়াং। সিড কোলাসিনাচের নিচু ক্রস থেকে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন তিনি। এই মৌসুমে এই নিয়ে মোট ৬ বার জোড়া গোল করলেন আর্সেনাল স্ট্রাইকার। শেষদিকে অবশ্য হাতেম বেন আরফাদের আটাকাতে কিছুটা অসুবিধাই হচ্ছিল আর্সেনাল ডিফেন্ডারদের। তখনও সুযোগ ছিল রেনের সামনে, তারা এক গোল দিলে খেলা চলে যেত অতিরিক্ত সময়ে। তবে শেষ পর্যন্ত আর আর্সেনালকে ভুগতে হয়নি।
ম্যাচশেষে অবশ্য অবামেয়াং অন্য আরেক কারণেও শিরোনাম হয়েছে। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে খেলার সময় নিয়মিত মুখোশ পরে গোল উদযাপন করতে দেখা যেত তাকে। ইংল্যান্ডে এসে সেটা এতোদিন বন্ধই ছিল। আজ রেনের বিপক্ষে গোল করে সেই উদযাপনটাই ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি। পরে ম্যাচশেষে বলেছেন, নিজেকে একজন সুপারহিরোর সঙ্গে তুলনা করে অনুপ্রেরণা পান তিনি। তাই ব্ল্যাক প্যান্থারকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।
ইউরোপা লিগে রাতের সবচেয়ে বড় চমকটা ঘটেছে অবশ্য মিলানে। আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট হারিয়ে দিয়েছে ইন্টার মিলানকে। সান সিরোতে ম্যাচের ৬ মিনিটেই গোল করেছিলেন লুকা ইয়োভিচ। ওই গোলটাই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে টাইয়ে। গোলশূন্য প্রথম লেগের পর দ্বিতীয় লেগেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে ইন্টার। তাই একমাত্র জার্মান ক্লাব হিসেবে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় টিকে থাকল ফ্রাঙ্কফুর্ট।
প্রথম লেগে ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল চেলসি ও নাপোলি দুই ক্লাবই। দুইদলই উঠেছে পরের রাউন্ডে। তবে চেলসি উঠেছে হেসে খেলে। ডায়নামো কিয়েভকে পরের লেগে ৫-০ গোলে উড়িয়ে, দুই লেগ মিলিয়ে ৮-০ ব্যবধানে জয়ী হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নিশ্চিত করেছে চেলসি। হ্যাটট্রিক করেছেন অলিভিয়ের জিরু। আর্সেনালের হয়ে ২০১৫ সালে প্রথমবার চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার, এরপর ইউরোপা লিগে একই কাজ করলেন কিয়েভে। ডান পা, বাম পা, আর হেড- সবগুলোতেই গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ও শেষবার উইলিয়ানের কর্নার থেকে পেয়েছেন গোল, আর মাঝেরটা ছিল আলোন্সোর দারুণ একটি ক্রস থেকে। ৯ গোল করে এবারের ইউরোপা লিগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতাও জিরুই। চেলসির হয়ে বাকি গোল দুইটি করেছেন মার্কোস আলোনসো ও হডসন ওদয়।
অন্যদিকে নেপলসে ১৪ মিনিটে আর্কাদিউস মিলিকের গোলে লিড নিলেও রাতটা সহজ হয়নি নাপোলির। সালজবুর্গ ৩ গোল শোধ দিয়ে দারুণ এক ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তবে একটু বেশি দেরিই করে ফেলেছিল তারা। ৯২ মিনিটে তৃতীয় গোল শোধ করার পর সালজবুর্গ আর অল্প সময়ই পেয়েছিল নাপোলিকে চাপে ফেলতে।
তবে ইউরোপা লিগ তো বটেই সম্ভবত ইউরোপে এই সপ্তাহের সবচেয়ে জমজমাট ম্যাচ দেখেছে প্রাগ। সেভিয়া-স্লাভিয়া প্রাগের প্রথম লেগ শেষ হয়েছিল ২-২ গোলে। প্রাগেও দুই দল নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে ড্র করলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯৮ মিনিটে সেভিয়াকে এগিয়ে নিয়েছিলেন ভাজকেজ। কিন্তু প্রাগে তবুও জিততে পারেনি সেভিয়া। ১০২ মিনিটে মিক ভ্যান বুরেন গোল করে আরও একবার সমতায় নিয়ে যান খেলা। কিন্তু অ্যাওয়ে গোলের নিয়মে তখনও বাদ পড়তে হত স্লাভিয়া প্রাগকে। শেষে ১১৯ মিনিটে ইব্রাহিম ট্রায়োরের গোলে পরের লেগে ৪-৩ আর দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ গোলের জয় নিয়ে সেভিয়াকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে চেক প্রজাতন্ত্রের দলটি।