• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৫
  • " />

     

    কেনিয়ার উইন্ডিজবধ

    কেনিয়ার উইন্ডিজবধ    

    আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুত উত্থান আর ততোধিক দ্রুততায় পতনের ইতিহাসে কেনিয়া দলের নামটা সম্ভবত সবার উপরেই থাকবে। দুর্বল ক্রিকেটীয় অবকাঠামো, সীমিত সুযোগ আর অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে অবিশ্বাস্য গতিতেই উন্নতি করছিলেন স্টিভ টিকোলোরা। ২০০৩ বিশ্বকাপের স্মৃতিচারণে সেসব আলোচনা ঘুরেফিরে আসবে। আজ বরং ফিরে দেখা যাক বিশ্বকাপ তথা একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেনিয়ার প্রথম জয়টার দিকে।

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬। গ্রুপ এ’র ম্যাচে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি মরিস ওদুম্বের দল। প্রথম দু’ ম্যাচে ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার কাছে যথাক্রমে ৭ উইকেট ও ৯৭ রানের পরাজয়ের পর নবীন দলটির সাথে লারাদের একপেশে লড়াই এবং তার ফলাফল অনেকটাই অনুমিত ছিল। টস জিতে ক্যারিবিয়ান ক্যাপ্টেন প্রতিপক্ষকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠালেন হয়তো সময় বাঁচানোর চিন্তা করেই!

    সময় না বাঁচলেও রিচার্ডসনের সিদ্ধান্তর প্রতি পুরোপুরি ‘অবিচার’ করেন নি কেনিয়ান ব্যাটসম্যানরা! ৪৯.৩ ওভার খেলেও স্কোরবোর্ডে রান উঠলো মাত্র ১৬৬। স্টিভ টিকোলোর সর্বোচ্চ ২৯ বাদে বিশের কোঠা পেরোতে সক্ষম হন মাত্র দু’জন।

    ১৬৭ রানের মামুলি লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাট করতে নেমে সম্ভবত একটু বেশীই খামখেয়ালি হয়ে পড়েছিলেন দুই ক্যারিবিয় ওপেনার। যথাক্রমে ৪ ও ৫ রান করে ক্যাম্পবেল, রিচার্ডসনরা ফিরে যান দলীয় ২২ রানের মধ্য। তিন নম্বর ব্যাটসম্যানটি যেহেতু ব্রায়ান লারা তাই তখনও পর্যন্ত ক্যারিবিয় শিবিরে তেমন উদ্বেগ তৈরি হয় নি। কিন্তু মারমুখী লারা যখন বারবার ব্যাটেবলে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হতে লাগলেন তখন ড্রেসিং রুম থেকে দ্বাদশ খেলোয়াড় পানি নিয়ে ছুটে গেলেন বোধহয় মাথা ঠাণ্ডা করে খেলার বার্তা দিতেই।

    তেমন কোন বার্তা পৌঁছে থাকলেও সেটার থোড়াই কেয়ার করে আরও দুটো বল অবিবেচকের মতো মারতে গিয়ে মিস করলেন লারা। একবার রান আউট হতে গিয়েও বেঁচে গেলেন। কিন্তু মাথা ‘ঠাণ্ডা’ না করার খেসারতটা তাঁকে খুব দ্রুতই দিতে হল। ব্যক্তিগত ইনিংসের ১১ নম্বর ডেলিভারিতে পিছনের পায়ে ভর করে সপাটে ব্যাট চালালেন। এবার ব্যাটে বল লাগলো বটে, তবে সেটা কিনারা ছুঁয়ে ঠিকানা খুঁজলো সোজা উইকেটরক্ষক তারিক ইকবালের গ্লাভসে। ইকবাল সম্পর্কে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে তিনি উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে এতো বেশী ক্যাচ মিস করতেন যে একটা সময় নিজ দলের খেলোয়াড়দের কাছেই হাসির পাত্রে পরিণত হন!

    তবে সে যাত্রায় ইকবালের হাত বিশ্বাসঘাতকতা করে নি। রজব আলীর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে ব্রায়ান লারা সাজঘরের পথ ধরেন ব্যক্তিগত মাত্র ৮ রানে। এরপরের সময়টুকু ক্যারিবিয়ানদের জন্য স্রেফ দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকলো। নিয়মিত বিরতিতে ব্যাটসম্যানরা উইকেটে এলেন আর গেলেন। ৩৬তম ওভারে রজব আলীর বল যখন শেষ ব্যাটসম্যান ক্যামেরন কাফির স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিলো তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ডে রানসংখ্যা মাত্র ৯৩!

    কেনিয়া প্রথম ওডিআই জয়টা পেলো দুইবারের শিরোপাধারীদের বিপক্ষে ৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে।