সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার মূল্য দিল বাংলাদেশ
কাকে দোষ দেবে বাংলাদেশ? ভাগ্য নাকি বারবার গোলের সামনে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসাকে? ফিলিস্তিনের বিপক্ষে এতোগুলো সুযোগ পাওয়া যাবে সেটা ম্যাচের আগেও কেউ কল্পনা করেনি। বাংলাদেশ পেল, কিন্তু কাজে লাগাতে পারল না একবারও। এর মধ্যে একবার ফাঁকা বারেও গোল মিস করেছে বাংলাদেশ। এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্বে তাই ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হার এড়ানো হয়নি, ১-০ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের।
ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে পুরো ১০০ ধাপ এগিয়ে ফিলিস্তিন। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাহরাইনের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারলেও বাংলদেশের জন্য অনুপ্রেরণাও কম ছিল না সেই ম্যাচে। তবে প্রতিপক্ষ প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৯-০ গোলে হারানো দল। তাই ফিলিস্তিনের বিপক্ষেও শুরুতে বাংলদেশ দল খেলেছে রক্ষণাত্মক। কাউন্টার অ্যাটাকে আক্রমণ সাজানোর চেষ্টা করেও প্রথমার্ধে মোটেই সুফল পায়নি বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনের একের পর এক আক্রমণ ঠেকাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে লাল-সবুজের দলকে। আগের ম্যাচে গোলরক্ষক আনিসুর রহমানের বীরত্ব হারের ব্যবধান কমিয়েছিল। ৮ মিনিটে ভালো একটা সেভ করে সেই ম্যাচের কথাও আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্ভুল থাকা হয়নি আর এবার। আনিসুরই করে বসলেন ভুলটা। ২২ মিনিটে ফিলিস্তিন অধিনায়ক শুফা আব্দুল্লাহর ডিবক্সের বাইরে থেকে করা শট সেভ করারই কথা ছিল আনিসুরের, কিন্তু পারলেন না। কপাল পুড়ল বাংলাদেশের।
ম্যাচের আগে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে বলেছিলেন রক্ষণ মজবুত করার কথা। আনিসুরকে যতটা সম্ভব নিরাপত্তা দিতে চেয়েছিলেন। কোচের কথার মূল্য রেখেছে বাংলাদেশ, তবে যে একবার ভুল করেছে, সেটাই কাল হয়ে গেছে।
প্রথমার্ধ শেষেও অবশ্য বাংলাদেশ যে কেবল ১-০ গোলেই পিছিয়ে থাকল তাঁর কৃতিত্ব রক্ষণেরই, আবার কিছুটা ফিলিস্তিনের আক্রমণভাগেরও। বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ফিলিস্তিন। বিরতির পরই একই ধারায় আক্রমণ চলে ফিলিস্তিনের। কিন্তু বাংলাদেশেরও রক্ষণে বাড়ে আত্মবিশ্বাস। সে কারণেই শেষ আধঘণ্টায় খোলস ছেড়ে বের হয় বাংলাদেশ। প্রথম সুযোগটা তৈরি করেছিলেন রিয়াদুল হাসান। ডানদিক থেকে আসা ক্রসে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়ে হেড করেছিলেন, কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
বদলি ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া এরপর আফসোস বাড়িয়েছেন। ফাঁকা বারপোস্টেও গোল করতে পারেননি ৭১ মিনিটে। ডানদিক থেকে থ্রু পাস ধরে এগিয়ে গিয়েছিলেন, গোলরক্ষকেও ফাঁকি দিলেন, কিন্তু এরপর ফিনিশটাই করতে পারলেন না। তার দূর্বল শট সহজেই গোলমুখ থেকে ক্লিয়ার করেছেন প্যালেস্টাইন ডিফেন্ডার। পরের মিনিটে সেই রিয়াদই আরেকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন কর্নার থেকে। কিন্তু ফাঁকায় থেকেও তিনি মারলেন বাইরে দিয়ে।
ভালো কয়েকটি সুযোগ মিস করে বাংলাদেশের আর আক্রমণে ওঠা হয়নি। শেষদিকে আনিসুর একটি ভালো সেভ করে হারের ব্যবধান বাড়তে দেননি। কিন্তু যে ভুলটা করেছিলেন, সেটাই তো ডুবিয়েছে দলকে। স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় হাজার পাঁচেক বাংলাদেশি সমর্থক পুরোটা সময়ই উজ্জীবিত করার চেষ্টা করে গেছে বাংলাদেশ দলকে। ঘরের মাঠেও বাংলাদেশের এমন সমর্থন পাওয়া হয় না সাধারণত, কিন্তু শেষ বিকেলে সবাই ফিরেছেন মুখকালো করে।