বিঙ্গা এক্সপ্রেসের ইতিকথা
৭১৮টি আন্তর্জাতিক উইকেট নয়, নয় বিশ্বকাপ বা অ্যাশেজ জেতা! টেস্ট অভিষেকেই পাঁচ উইকেটও নয়। নয় অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিংয়ের মশালটা এক যুগ থেকে আরেক যুগে নিয়ে যাওয়া! অথবা আজন্ম লালিত স্বপ্ন ১৬০ কিলোমিটার গতিতে বল করা। ব্রেট লি গর্ব করেন না এর কোনটি নিয়েই! অর্জনের এই দীর্ঘ তালিকা ব্রেট লিকে তৃপ্তি দেয় না, পেছন ফিরে এই তালিকার দিকে তাকিয়ে তিনি স্বগতোক্তি করেন না, ‘নাহ, জীবনটা খারাপ না!’
ব্রেট লি গর্ব করেন অন্য এক লড়াইয়ে জয়ী হয়ে। নিজের শরীরের সঙ্গে লড়াইয়ে! শতভাগ ফিট না হয়েও শরীরটাকে টেনে টেনে ১৩ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে। প্রায় ২০ বছর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলে। ভাঙ্গা হাত নিয়ে এক ওভার বোলিং করে ব্রেট লি গর্ব করেন, চোটকে সঙ্গী করে বাইশ গজের চৌহদ্দিতে নিজের পরিচয় চেনানোয় তৃপ্তি আসে তাঁর!
শোয়েব আখতার ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’, কপিল দেব ‘হরিয়ানা এক্সপ্রেস’, অথবা মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। ব্রেট লির কিন্তু তেমন কোন নাম নেই!
তাঁকে নাহয় ‘বিঙ্গা এক্সপ্রেস’ নামেই ডাকা হোক!
‘বিঙ্গা এক্সপ্রেস’ও যে ছুটেছে কত পথ জুড়ে!
যাত্রা হল শুরু....
ভাইদের মধ্যে ব্রেট ছিলেন মেজো। বড়জন শেনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন। সেই শেনের সঙ্গেই বাড়ির উঠোনে ক্রিকেটটা শুরু হয়েছিল তাঁর। সেখানেও বোলিংই করতেন, তাঁর দিকে বলটা ছুঁড়ে শেন হাতে নিতেন ব্যাট। এ বোলিংয়ের প্রেমেই পড়েছিলেন ব্রেট, তখন থেকেই! প্রথম যখন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নামেন, একটা অনূর্ধ্ব-১০ দলের হয়ে, আট কিংবা সাড়ে আট বছর বয়স তখন তাঁর। ওপেনিং বোলিং করতে দেয়া হয়েছিল ছোট্ট লিকে। এক ওভার শেষে বোলিং ফিগার ছিল ১-১-০-৬! ছয়জনকেই বোল্ড করেছিলেন, ব্যাটসম্যানরা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলেন। রীতিমত বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলেন বাবা-মা।
১৬ বছর বয়সে সিডনির গ্রেড ক্রিকেট। নিউ সাউথ ওয়েলস ব্লুজদের জার্সি গায়ে শেফিল্ড শিল্ডে অভিষেক ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে। গ্রেড ক্রিকেটের সঙ্গে রাজ্য ক্রিকেটের সুস্পষ্ট তফাতটা তখনোই ধরতে পেরেছিলেন লি। হয়তো আন্তর্জাতিকে এসে কাজে লেগেছিল এই পার্থক্যকরণের ক্ষমতাই!
স্বপ্নের ব্যাগি গ্রিন, নম্বর ৩৮৩....
১৯৯৮-৯৯ মৌসুম। ব্লুজদের অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ। ব্রেট লিকে চোখে ধরল তাঁর। সেই ডিসেম্বরেই লির ডাক পড়লো। কিটব্যাগ গুছিয়ে নিতে হবে, যেতে হবে পার্থ। অস্ট্রেলিয়া দল তখন ভারতের সঙ্গে সিরিজ খেলছে। ওয়াকায় অবশ্য দ্বাদশ ব্যাক্তি ছিলেন। এমসিজিতে বক্সিং ডে টেস্টেই মাথায় চড়লো স্বপ্নের ব্যাগি গ্রিন, নম্বর ৩৮৩। নিজের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই বোল্ড করলেন সাদাগোপান রমেশকে। তারপর?
একে একে উইকেট নিলেন পাঁচটি! বাউন্সারে বিপর্যস্ত করে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন, বোল্ড করলেন, এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেললেন ব্যাটসম্যানকে! পেসে পরাস্ত করে কট বিহাইন্ড করলেন! ব্রেট লির পেস যেন নতুন জীবন নিয়ে এলো মেলবোর্নে! সত্যিকারের পেসে ভর করে। এমসিজি দেখলো অন্যরকমের এক রোমাঞ্চ। রোমাঞ্চের নাম ব্রেট লি!
সেই শুরু।
লক্ষ্য ১৬০ কিমি/ঘন্টা....
সেই নয় বছর বয়সে বাবা-মাকে বলেছিলেন, একদিন তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন, বল করবেন ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতিতে! ব্রেট লির লক্ষ্য ছিল কিন্তু সেটাই, দলে ঢোকার পরও। পিঠে প্যারাসুট নিয়ে দৌড়াতেন একসময়! লি বলতেন, সে সময় তাঁর দৌড়ানোর গতি এতো ছিল, প্যারাসুট ছাড়া দৌড়ালে কার্ল লুইসকেও নাকি কাটিয়ে যেতেন! অস্ট্রেলিয়ার ফিজিও, ট্রেনাররা একবার খেয়াল করলেন, কেউ অ্যালকোহলিক হলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় লাগে ৩-৪ দিন, আর চোটে পড়ার শঙ্কা বেড়ে যায় ৯-১০ গুন। তাদের একজন ‘গিনিপিগ’ দরকার। যিনি একমাস অ্যালকোহল ছাড়া থাকবেন। অ্যালকোহল আর অ্যালকোহল ছাড়া- দুইয়ের মাঝে পার্থক্যটা তাঁদের দেখা দরকার!
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল আর অ্যালকোহলের সখ্যতা- দুনিয়াজোড়া বিখ্যাত কাহিনী। শেন ওয়ার্ন বলতেন, একসময় অস্ট্রেলিয়ার ড্রেসিংরুমে ৩ থেকে ৫২ বোতল বিয়ার পান করা ক্রিকেটারও ছিলেন!
অ্যালকোহল টেস্টের সে পরীক্ষায় ব্রেট লি হাত তুলে বলেছিলেন, তিনি রাজি!
এক মাস নয়, গুনে গুনে ১২ মাস ব্রেট লি অ্যালকোহল ছুঁয়েও দেখেননি তিনি! এর ফল পেয়েছিলেন দক্ষিন আফ্রিকায় গিয়ে। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এক ওভারে সবগুলো বল করলেন ঘন্টায় ১৫৫ কিমি গতিতে, এর মধ্যে একটি পেরিয়ে গেল সেই ১৬০ কিলোমিটার এর দেয়াল!
তিনে তিন আর বিশ্বকাপ....
২০০৩ বিশ্বকাপ।
কেনিয়ার সঙ্গে পেয়ে গেলেন হ্যাটট্রিক। শোয়েব আখতার বা শন টেইট, গতির অন্য সেনানীর যে কৃতিত্ব নেই!
তবে লির মতে, সেই হ্যাটট্রিকের পেছনে তাঁর ভাল বোলিংয়ের চেয়ে কেনিয়ান ব্যাটসম্যানদের মানসিক অবস্থাই নাকি দায়ী ছিল বেশী! কেনেডি ওবুয়া বল ছাড়তে গিয়ে কনুইয়ে আঘাত পাওয়ার সঙ্গে বোল্ডও হয়েছিলেন! সেই ‘আঘাত’ এর কারণেই নাকি কেনিয়ার পরের দুই ব্যাটসম্যান মানসিকভাবে একটু দুর্বল ছিলেন! তবে বাস্তবতা হল, হ্যাটট্রিকের দ্বিতীয় বলটা ছিল ১৫৩.৫ কিলোমিটার গতির, ডেভিড ওবুয়া পেসে পরাস্ত হয়ে রিকি পন্টিংয়ের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন। আর তৃতীয় বলে ১৫৫.৫ কিমির ইয়র্কারের কোনো উত্তর ব্রিজাল প্যাটেলের জানা ছিল না। ব্রেট লি টুর্নামেন্ট শেষ করেছিলেন ১০ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে, সেই আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
২০০৭। টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক প্রথম আসর। একটি ডট বলই যে ফরম্যাটে অমূল্য রতন, ব্রেট লি সেখানে পরপর তিন বলে পেয়ে গেলেন উইকেট! সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, অলক কাপালী- বাংলাদেশী তিন ব্যাটসম্যানকে সঙ্গে নিয়ে ব্রেট লি ঢুকে গেলেন ইতিহাসের পাতায়! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যে সেটিই প্রথম হ্যাটট্রিক!
শত্রুর সঙ্গে বসবাস....
ক্যারিয়ারে ঠিক কতবার, কতরকমের চোটের মুখোমুখি হয়েছিলেন ব্রেট লি? যখন কোনো অনুষ্ঠানে তাঁকে এমন প্রশ্ন করা হয়, লি জানতে চান, অনুষ্ঠানের মেয়াদ কতক্ষণ! তাঁর চোটের তালিকা দিতে গেলে যে সে সময় পেরিয়ে যাবে অনায়াসেই!
সামনে কী ঘটবে, তা ভেবে অপেক্ষা করে থাকা নয়, নিজেই ঘটনা তৈরীর পক্ষপাতি ছিলেন ব্রেট লি। নিজের শরীরকে তাই চড়া মূল্য দিতে হয়েছিল! সইতে হয়েছিল অবর্ণনীয় চাপের ভার! প্রায় সব বোলারদের ‘ল্যান্ডিং ফুট’ এ চাপ পড়ে যেখানে নিজের শরীরের ওজনের প্রায় দুই থেকে তিনগুন, লির অ্যাকশন আর শারীরিক গঠন মিলিয়ে সেই চাপটাই গিয়ে দাঁড়াতো প্রায় ১৫-১৬ গুনে।
বাঁ পায়ের অ্যাঙ্কেলকে শল্যবিদের ছুরির নীচে নিতে হয়েছিল তাই ছয়বার! শরীরের এক অংশ থেকে হাড় এনে অন্য অংশের সাথে জুড়ে দিতে হয়েছে, পায়ের পেছনের দিকের বাড়তি হাড়কে আবার সরিয়ে ফেলতে হয়েছে!
বিঙ্গা এক্সপ্রেসের কলকব্জা ঠিক জায়গাতে ছিলনা আসলে সবসময়! সেই ‘এলোমেলো’ কলকব্জা নিয়েও সেই এক্সপ্রেস ছুটেছে!
তেমনই এক যাত্রা ছিল ২০০১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী। ওয়াকায় জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ। অনেকের কাছেই ব্রেট লি তখন ‘চোটপ্রবণ’ ক্রিকেটার! ব্রেট লি এসব শোনেন, আরও উজাড় করে দিতে চান নিজেকে! জোরে বল করতে চান, এমনকি থ্রোও করেন বাড়তি গতিতে! এরকম সময়েই খেয়াল করলেন, ডান হাতের কনুইয়ের কাছে কেমন নীলচে হয়ে গেছে। অবস্থা সুবিধার নয়। ব্রেট লি কিন্তু মাঠ ছাড়লেন না, বরং এলেন বোলিং করতে! মনের জোরে এলেন, হাত তো আর মনের জোরকে সমর্থন করবে না সবসময়! আগের ওভার যে বোলার বল করেছেন ১৫০ কিলোমিটার গতিতে, সেই তিনিই এই ওভারে এসে ১৩০ এর উপর যেতে পারলেন না। স্টিভ ওয়াহ এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কোনো সমস্যা?’
লি জবাব দিলেন, “ইয়েস, আই হ্যাভ এ ব্রোকেন আর্ম”!
চোট ছিল ব্রেট লির নিত্যকার সঙ্গী। তবে চোটই তাঁকে শিখিয়েছিল, কীভাবে শতভাগ ফিট না থেকেও খেলতে হয়। জানতেন, চোট থেকে কখনোই পুরোপুরি সেরে উঠতে পারবেন না। সেই চোটের সঙ্গে লড়াই করেই তাই খেলে গেছেন! ২০০৩-০৪ মৌসুমে ‘ফ্রোজেন শোল্ডার’ এর কবলে পড়েছিলেন, ডাক্তাররা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। ব্রেট লি শোনেননি। অসহনীয় এক ব্যাথা নিয়েই খেলে গেছেন! সমুদ্রে শয্যা পাতলে শিশিরে তো ভয় নেই আসলেই!
এজবাস্টন মহাকাব্য আর একটি ছবি....
হাঁটু গেঁড়ে বসে থাকা ব্রেট লির কাঁধে হাত দিয়ে কিছু একটা বলছেন ফ্রেডি ফ্লিনটফ! সদ্যই শেষ হয়েছে ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক টেস্ট! ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা সেই ছবির অংশ তিনি।
২০০৫ অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য ছিল ২৮২ রান। তৃতীয় দিন শেষেই ৮ উইকেট নেই, জয় তখনও ১০৭ রান দূরে! ম্যাচ তো সেখানেই শেষ, হয়তো অনেকেই ভেবেছিলেন এমন। কিন্তু দর্শকদের উৎসাহে কমতি ছিল না, সকাল থেকেই এজবাস্টনের বাইরে ছিল তাই দীর্ঘ সারি!
ব্রেট লি সকালে নেটে নক করতে করতে পাশে দাঁড়ানো পন্টিং আর ক্লার্ককে বলছিলেন, কী হতো আর কয়েকটা রান করে আসলে! ক্রিজে গিয়ে শেন ওয়ার্ন আর পরে মাইকেল ক্যাসপ্রোভিজের সঙ্গে জুটি গড়লেন, অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গেলেন জয় থেকে নিঃশ্বাস-দূরত্বে! হলো না শেষ পর্যন্ত, ক্যাসপ্রোভিজ গেরাইনট জোনসকে যখন স্টিভ হার্মিসনের বলে ক্যাচ দিলেন, ব্রেট লি তখন এ প্রান্তে, জয় থেকে তিন রান দূরে দাঁড়িয়ে! তীরে এসেও তরী ডোবার বেদনা তখন লির মনে! একটু পরই কাঁধে হাত পড়ল তার। তাকিয়ে দেখেন, ফ্লিনটফ! সবাই যখন উদযাপনে ব্যস্ত, তিনি এসেছেন লিকে সান্ত্বনা দিতে!
ক্রিকেটীয় চেতনা অন্য একটা পর্যায়ে গেল সেদিন। ঠিক কী বলেছিলেন ফ্লিনটফ, লি তা মনে করতে পারেন না। তবে ক্যারিয়ারের সেরা টেস্ট বলেন তিনি সেই এজবাস্টনকে! অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল, ব্রেট লি হেরেছিলেন। আসলেই কী? দিনশেষে তো বিজয়ীর নাম ছিল ক্রিকেট, ব্রেট লিদেরই ক্রিকেট!
এবার তবে বিদায়....
দীর্ঘ সংস্করণের ক্রিকেট আর নিতে পারছিল না শরীর। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের পর আর কোনো টেস্ট খেলেননি। বিশ্বকাপ খেলবেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্টকে বিদায় বললেন ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী। ২০১২ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দিলেন। যাবার আগে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ ওয়ানডে উইকেটশিকারীর খাতায় গ্লেন ম্যাকগ্রার পাশে নামটা বসিয়ে গেছেন অবশ্য!
এরপর খেলেছেন আইপিএল আর বিগব্যাশ। বিগব্যাশের সর্বশেষ আসরের শুরুতেই ঠিক করে রেখেছিলেন, এই শেষ! ১৫ জানুয়ারী, ২০১৫ তে নিউ সাউথ ওয়েলসের এই বোলার তাই বলে দিয়েছিলেন, আর যতক্ষণ সিডনি সিক্সারস টুর্নামেন্টে টিকে আছে, তিনিও প্রতিযোগীতামূলক ক্রিকেটে ততদিনই।
সিক্সারস ফাইনালে গেল।
সাঙ্গ হল চলা....
প্রস্তুত মঞ্চ। বিদায়বেলার। শেষ ওভার, সম্বল ৭ রান। প্রথম বলেই চার খেলেন। তারপরের বলে দুই। তারপর এক। দরকার তিন বলে এক।
এরপর? উইকেট, উইকেট। ‘অন এ হ্যাটট্রিক’!
শেষ বলে গিয়ে ঠেকল সব! ব্রেট লির দলের অধিনায়ক মইসে হেনরিকেস নিজে একটা রান-আউটের সুযোগ হারালেন। বিগ ব্যাশ এর চতুর্থ মৌসুমে জিতে গেল পার্থ স্কোরচার্স।
নিজের শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে হারলেন ব্রেট লি। তবে তার আগে দিয়ে গেলেন অনেকদিন মনে রাখার মত এক রোমাঞ্চের ওভার।
কুর্নিশ তাহারে....
ফাস্ট বোলিং ক্রিকেটে কঠিনতম কাজগুলোর একটি, সন্দেহ নেই। তাঁর সমসাময়িক ফাস্ট বোলারদের ক্যারিয়ার তাই শেষ হয়েছে সময়ের আগেই। শেষবেলার গানে তাঁদের হয়তো মেশানো ছিল আক্ষেপও খানিকটা! শোয়েব আখতার, শেন বন্ড, শন টেইট - চোট, ফর্ম টিকতে দেয়নি বেশীদিন।
অথচ ব্রেট লি বল করে গেছেন ৩৮ বছর বয়স পর্যন্ত! চোটের চ্যালেঞ্জকে যিনি নিত্য বুড়ো আংগুল দেখান, তিনিই তো খেলবেন এতদিন! চ্যানেল নাইনের ধারাভাষ্য দলে যোগ দিয়েছেন, হয়তো গায়ক ব্রেট লিও ফিরে আসবেন অচিরেই!
তবে, সেই ট্রেডমার্ক উদযাপন! সেই অনন্য অ্যাকশন! অথবা ব্যাট হাতের সেই ‘স্লগার’ ব্রেট লি! ক্রিকেটদর্শকরা তো মিস করে নিত্যদিন!
সেই ‘আন্তঃমহাদেশীয়’ বিঙ্গা এক্সপ্রেস থেমে যাওয়ার পরও চলেছিল ‘আন্তঃনগর’ বিঙ্গা এক্সপ্রেস। একসময় তাও শেষ বাঁশিটা বাজালো। এ সুদীর্ঘ যাত্রাকালে যে ‘এক্সপ্রেস’ কতশত স্মৃতির যোগানদাতা।
সেই এক্সপ্রেস থেমে গেলেও, সেই স্মৃতি তো আর হারিয়ে যাবেনা সহসাই!