কিক-অফের আগে: টটেনহাম বাধা উতরানোর পালা গার্দিওলার
গার্দিওলার সিটির টটেনহাম পরীক্ষা
লিগ কাপ ঘরে তুলেছে আগেই, পৌঁছে গেছে এফএ কাপের ফাইনালেও। বাকি ম্যাচগুলো জিতলে ধরে রাখবে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা। ম্যানচেস্টার সিটি আপাতত মন দিচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লিগে। কিন্তু পেপ গার্দিওলার মতে, ম্যানচেস্টার সিটির পক্ষে এই মৌসুমে ‘কোয়াড্রোপল’ জেতা প্রায় অসম্ভব। প্রতিপক্ষ টটেনহাম হটস্পারের অনুপ্রেরণা নতুন স্টেডিয়ামে প্রথম ইউরোপিয়ান ম্যাচ।
পুরো মৌসুমে ধারাবাহিকতার বিচারে হয়ত তাদের ধারে কাছে নেই কেউই। প্রায় সব প্রতিপক্ষকেই রীতিমত দুমড়েমুচড়েই এগিয়েছে গার্দিওলার সিটি। ইংল্যান্ডে ছড়ি ঘোরালেও ইউরোপে সিটির হয়ে তেমন সাফল্যের দেখা পাননি গার্দিওলা। অবশ্য শুধু গার্দিওলা ছাড়াও ইউরোপে তেমন সাফল্য পায়নি সিটি। ২০১৫-১৬ মৌসুমে সেমিফাইনালের পর আর এগুনো হয়নি তাদের। তবে এবার যেন ভাগ্য পরিবর্তনে রীতিমত বদ্ধপরিকর সিটি।
এবারের মৌসুমে সবচেয়ে বড় দুটি জয় সিটিরই (৬-০, ৭-০)। প্রতিপক্ষের মাঠেও ইউরোপে সিটির রেকর্ডটাও ঈর্ষনীয়। ইউরোপে শেষ ৬ ম্যাচে সিটির জয় ৪টিতে, হার মাত্র ১টি। সেই হারটি অবশ্য এসেছিল ইংল্যান্ডেই। গত মৌসুমে লিভারপুলের কাছে হেরে সিটি বিদায় নিয়েছিল কোয়ার্টার থেকেই। এবার অবশ্যই এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি এড়াতে চাইবেন স্প্যানিশ কোচ। গার্দিওলা যাই বলুন, সিটির সবাই-ই মনে করেন; ‘কোয়াড্রোপল’ জেতার সামর্থ্য আছে তাদের। সাক্ষাৎকারে নিজেদের ওপর পূর্ণ আস্থার কথাই বলেছেন বের্নার্দো সিলভারা। শুধু সিটি-স্পার্স নয়, দ্বৈরথের উত্তাপ ছড়াবে ডাগআউটেও। অবশ্য মুখোমুখি লড়াইয়ে সিটি যেমন এগিয়ে আছে স্পার্সের চেয়ে, ঠিক তেমনি পচেত্তিনোর চেয়েও এগিয়ে আছেন গার্দিওলা।
আট বছর আগে শেষবার কোয়ার্টারে খেলেছিল স্পার্স। মরিসিও পচেত্তিনোর অধীনে তারুণ্য নির্ভর দুর্দান্ত এক দল গড়েছে তারা। ন্যু ক্যাম্পের মত স্টেডিয়ামে ড্র করে এসেছে স্পার্স। এই মৌসুমের সব ‘হোম’ ম্যাচ ওয়েম্বলিতে খেলেছিল পচেত্তিনোর দল। গত সপ্তাহে ক্রিস্টাল প্যালেসকে হারিয়ে নতুন স্টেডিয়ামে শুরুটা ভালোই হয়েছে স্পার্সের। সিটির বিপক্ষেও প্রিমিয়ার লিগের মত ইউরোপের শুরুটাও জয় দিয়েই করতে চাইবে তারা।
সম্ভাব্য মূল একাদশ
টটেনহাম হটস্পার (৩-৪-৩): লরিস; সানচেজ, অল্ডারওয়েরেল্ড, ভার্টনহেন; ট্রিপিয়ের, আলি, সিসোকো, রোজ; সন, কেইন, এরিকসেন
ম্যান সিটি (৪-৩-৩): এডারসন; ওয়াকার, লাপোর্তে, অটামেন্ডি, মেন্ডি; গুন্ডোয়ান, ফার্নান্দিনহো, ডি ব্রুইন; সানে, আগুয়েরো; স্টার্লিং
পোর্তোর বিপক্ষে পুনরাবৃত্তিই চাইবে লিভারপুল
গত মৌসুমে আক্ষরিক অর্থেই তীরে এসে তরী ডুবিয়েছিল তারা। রোমা, সিটির মত দলকে টপকে ফাইনালে হার মানতে হয়েছিল জিনেদিন জিদানের রিয়ালের মাদ্রিদের কাছে। এই মৌসুমে যেন সেই আক্ষেপ ঘোচাতেই নেমেছেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে লিভারপুল পৌঁছে গেছে শেষ আটে। প্রতিপক্ষ পোর্তো, গত মৌসুমের শেষ ১৬-তে যাদের ৫-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল ক্লপের দল।
প্রিমিয়ার লিগে সিটিকে সমানে সমান টেক্কা দিচ্ছে লিভারপুল। চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব কোনোমতে পার হওয়া লিভারপুল এখন আছে ফর্মের তুঙ্গে। সাউদাম্পটনের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে গোল করে ঠিক সময়েই ফর্মে ফিরেছেন মোহামেদ সালাহ। এফএ বা লিগকাপ থেকে বিদায় নিলেও মূল দুই প্রতিযোগিতায়ই টিকে আছে ‘অল রেড’রা। পোর্তোর বিপক্ষে তাই স্বাভাবিকভাবেই ফেভারিট লিভারপুল।
লিভারপুলের মত পোর্তোও টিকে আছে নিজ লিগের শিরোপা রেসে। পাঁচ বছর পর শেষ আটে খেলবে তারা। গত দুই মৌসুম বিদায় নিতে হয়েছিল শেষ ষোল থেকেই। দলে আছেন ইকার ক্যাসিয়াস, পেপের মত চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা অভিজ্ঞ ফুটবলার। আছে অ্যালেক্স তেয়েস, আবু বকরদের তারুণ্যও। আগেরবার লিভারপুলের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও এবার হয়ত আগের চেয়ে মানসিকভাবে কিছুটা হলেও প্রস্তুতিটা ভাল থাকবে পোর্তোর।
সম্ভাব্য মূল একাদশ
লিভারপুল (৪-৩-৩): অ্যালিসন; আলেকজান্ডার-আর্নল্ড, মাতিপ, ভ্যান ডাইক, মিলনার; হেন্ডারসন, ফাবিনহো, কেইটা; সালাহ, ফিরমিনো, মানে
পোর্তো (৪-৩-৩): ক্যাসিয়াস; পেরেইরা, মিলিতাও, পেপে, মানাফা; ওটাভিও, অলিভার, পেরেইরা; ব্রাহিমি, মারেগা, তিকিনিয়ো