৪৯ বছর বয়সে জাতীয় দলে!
বয়স তাঁর পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। ইপ্সউইচে ৯-৫ টা কলমিস্ত্রির কাজ করেই জীবনটা দিব্যি কেটে যাচ্ছিল মার্টিন স্মিথের। কিন্তু কাজের ফাঁকে মাঝে সাঝেই মনে হতো, ফুটবল খেলাটা চালিয়ে গেলে হয়ত বর্তমানটা অন্যরকমও হতে পারত! এসবের মাঝেই এলো একটি ফোন, ওপাশ থেকে বলা হলো, ‘স্মিথ আপনি কি জাতীয় দলের খেলবেন?’ শুনে তো স্মিথ প্রথমে ভাবলেন, নিশ্চয়ই কেউ তাঁর সাথে মজা করছে! না কেউ মজা করেনি, সত্যিই ৪৯ বছর বয়সী স্মিথকে প্রথমবারের মতো ডাকা হয়েছিল ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের জাতীয় দলে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই ম্যাচে অভিষেক হয়নি স্মিথের।
কিশোর বয়স থেকেই ফুটবল খেলতেন। এরপর পরিবারের হাল ধরার জন্য স্মিথ ফুটবল ছেড়ে বেছে নেন কলমিস্ত্রির চাকরি। তবে ফুটবলের নেশাটা এখনো যায়নি, হরহামেশাই খেলেন বিভিন্ন প্রীতি ম্যাচে। গত মাসের শেষে কনকাকাফ নেশনস লিগের বাছাইপর্বের ম্যাচে বোনাইর ও টার্কস অ্যান্ড কাইকোস আইল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড। দুই ম্যাচের জন্য ডাকা হয়েছিল স্মিথকেও। দলের রিজার্ভ গোলরক্ষক হিসেবেই স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। অভিষেকের আশায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে নামা হয়নি তাঁর।
প্রায় দুই দশক পর পেশাদার কোন দলের সাথে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছিলেন স্মিথ। এই অভিজ্ঞতা কখনোই ভুলতে পারবেন না তিনি, ‘১৫-২০ বছর ফুটবল খেলিনি আমি। বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে হুট করেই কোচ আমাকে ফোন করেন। তাঁকে হ্যাঁ বলতে আমার তো ১২ সেকেন্ড সময় লেগেছিল! দলের একজন গোলরক্ষকের হাত ভেঙে যাওয়ায় আমাকে রিজার্ভ দলে রাখা হয়েছিল। মাঠে নামতে না পারলেও আমি দারুণ খুশি।’
নিজের ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে নতুনভাবেও ভাবতে চান স্মিথ, ‘আমার তো এখনো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আন্তর্জাতিক দলের স্কোয়াডে ছিলাম। আমার বন্ধুরাও ম্যাচটা দেখেছিলাম। আশা করি আবার হয়ত একদিন দলে ডাক পাবো।’
যদি সত্যি ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের হয়ে সেদিন মাঠে নামতেন স্মিথ, তাহলে লিবেরিয়ার জর্জ উইয়ার পর সবচেয়ে বেশি বয়সে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ফুটবলার হতেন স্মিথ। গত সেপ্টেম্বরে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন উইয়া, তখন তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর ৩৪৫ দিন।
হয়ত এর চেয়েও বেশি বয়সে কোন একদিন ডাক পড়তে পারে স্মিথের। সেদিন মাঠে নেমে গড়তে পারেন নতুন রেকর্ডও! এখন থেকে গ্লাভসজোড়া নিয়ে নিশ্চয়ই প্রতিদিন অনুশীলনটা চালিয়ে যাবেন।