পগবার দুই পেনাল্টিতে আশা বাঁচিয়ে রাখল ইউনাইটেড
পা হড়কালেই শেষ হয়ে যেতে পারে পরের মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ। প্রতি সপ্তাহেই আরও কঠিন হয়ে যাওয়া শীর্ষ চারের লড়াইটা অন্তত আরও কিছুদিনের জন্য বাঁচিয়ে রাখল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুই অর্ধে পল পগবার দুই পেনাল্টি গোলে ইউনাইটেড হারিয়েছে ওয়েস্ট হামকে। ৩৩ ম্যাচ শেষে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে ইউনাইটেডের অবস্থানের উন্নতি অবশ্য হয়নি। টটেনহাম আর চেলসির চেয়ে যথাক্রমে ৩ আর ২ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে ইউনাইটেড। তাদের এক ধাপ নিচে ছয়ে থাকা আর্সেনালের পয়েন্ট ৬৩, তবে গানারদের হাতে আছে ১ ম্যাচ বেশি।
ওয়েস্ট হাম অবশ্য দিন শেষে রেফারির ওপরও দোষ চাপাতে পারে। ম্যাচের শুরুতেই ফিলিপে অ্যান্ডারসন দারুণ একটি গোল করেছিলেন। কিন্তু রেফারির অফসাইড সিদ্ধান্তে বাতিল হয় সেটি। যদিও টিভি রিপ্লেতে নিশ্চিত হওয়া গেছে ডিয়েগো দালো অনসাইডেই খেলিয়েছিলেন অ্যান্ডারসনকে। ১৯ মিনিটে এরপর একটা বিতর্কিত পেনাল্টিও পেয়ে যায় ম্যান ইউনাইটেড। ডিবক্সের ঠিক মাথায় স্নডগ্রাস ফাউল করেছিলেন হুয়ান মাতাকে। রেফারিও বাজিয়েছেন পেনাল্টির বাঁশি। তবে অন্য কোনোদিন হলে হয়ত শোল্ডার চ্যালেঞ্জের কারণে পার পেয়ে যেতেন স্নডগ্রাস।
ওয়েস্ট হামের জন্য যেটা মন্দ কপাল, সেটাই ভাগ্য খুলে দিয়েছিল ঘরের দলের। পল পগবা স্পটকিক থেকে গোল করে এগিয়ে দেন দলকে। যদিও এরপর প্রথমার্ধে খুব বেশি সুযোগ তৈরি করা হয়নি ইউনাইটেডের। মাতা অনেকদিন পর নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি, ইনজুরি ফেরত জেসি লিনগার্ডও তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য প্রাপ্য গোলটা পেয়েই যায় ওয়েস্ট হাম। ডেভিড ডি গিয়া লম্বা থ্রো মিডফিল্ডে লুফে নেন ডেক্লান রাইস। এরপর চোখের পলকে সেখান থেকে আক্রমণে ওঠে হ্যামাররা। বামদিক থেকে ম্যানুয়েল লানজিনি ইনসুইং ক্রস করেন ফারপোস্টে। পা স্ট্রেচ করে কাছাকাছি জায়গা থেকে ডি গিয়াকে পরাস্ত করে গোল করেন সেই অ্যান্ডারসনই। ২০০১-০২ সালে জার্মেইন ডিফোর পর প্রথম ওয়েস্ট হাম খেলোয়াড় হিসেবে ব্রাজিলিয়ান এক মৌসুমে দুইবার গোল করলেন রেড ডেভিলদের বিপক্ষে।
৫৫ মিনিটে মাতার বদলি নেমে মার্কোস র্যাশফোর্ড আবার ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন দলকে। দুটো দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। একবার সঙ্গীর অভাবে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে নিজেই শট মারলেন। লুকাস ফাবিয়ানস্কি সেটা ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দিলেন। পরেরবারেরটা ছিল আরও ভালো। কিন্তু সিক্স ইয়ার্ড বক্সের ভেতর থেকে তখন র্যাশফোর্ড হেড করলেন বারপোস্টেরও অনেক ওপর দিয়ে।
ওলে গানার সোলশারের মতো ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনিও আবার আরেক বদলি করে খেলার লাগাম টেনে ধরেন। সাবেক ইউনাইটেড স্ট্রাইকার হাভিয়ের হার্নান্দেজকে তুলে মিকাইল অ্যান্টোনিওকে নামান তিনি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সমর্থকদের করোতালিতে মাঠ ছাড়া হার্নান্দেজ অবশ্য ম্যানেজারের সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি হননি। তবে সাইডবেঞ্চে বসতে বসতেই টের পেয়েছেন ম্যানেজার সিদ্ধান্তটা সঠিকই নিয়েছিলেন। অ্যান্ডারসন নেমেই ইউনাইটেডকে চোখ রাঙাচ্ছিলেন। ডিবক্সের বাইরে থেকে একবার শট করলেন, কিন্তু বারপোস্টে বাধা পেয়ে গোল পাওয়া হলো না। এর কিছুক্ষণ পর করলেন দারুণ এক হেড, ডি গিয়া এবার আরও দুর্দান্ত এক সেভে ফেরালেন তাকে।
ওয়েস্ট হাম যখন ওল্ড ট্রাফোর্ডে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল, তখনই অন্যপ্রান্তে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে হ্যামারদের ডিবক্সের ঢুকে পড়েন অ্যান্থনি মার্শিয়াল। গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে ছিলেন। তখনই তাকে ফাউল করে বসেন ফ্রেডেরিকস। ৮০ মিনিটে ওই পেনাল্টিই ভাগ্য বদলে দিয়েছে ম্যাচের। পগবার দ্বিতীয় গোলে পরে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে।