'সামর্থ্য সবাইকে দেখিয়ে দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময় সৌম্য-লিটনের'
তারা কী পারেন, সৌম্য সরকার ও লিটন দাসের সেটা এখনই সবাইকে দেখিয়ে দেওয়ার সময় বলে মনে করছেন তামিম ইকবাল। তার সম্ভাব্য দুজন ওপেনিং সঙ্গী যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন বলেও ধারণা তামিমের, সঙ্গে তিনি আশা করছেন, এ দুজনের দলকে দেওয়ার মতো ১০-১৫ বছরের একটা ক্যারিয়ার আছে।
তামিম নিজে প্রিমিয়ার লিগ না খেললেও খেলেছেন সৌম্য ও লিটন। পরেরজন ৮ ম্যাচ খেলে করেছেন দুইটি ফিফটি। আর শিরোপা-নির্ধারণী ম্যাচে রেকর্ডময় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য। তিনি যেখানে এ ইনিংস খেলেছেন, ইংল্যান্ডের কন্ডিশন এর চেয়ে অনেক আলাদা হলেও আত্মবিশ্বাসটা কাজে লাগবে বলে মনে করেন তামিম, “দারুণ একটা অর্জন, বাংলাদেশী কেউ এই প্রথম ২০০ রান করেছে। যদিও আমরা খেলব একেবারেই ভিন্ন একটা কন্ডিশনে, ভিন্ন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে, তবুও রান করাটা সবসময়ই ইতিবাচক। এটা আত্মবিশ্বাস যোগায়। সে কোথায় রান করেছে এটা মুখ্য বিষয় নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যে সে রান করেছে।
“সে যদি শেষ দুই ম্যাচে দুইটা সেঞ্চুরি না করে ১০ আর ৫ করে সফরে যেতো, ওর মাথার মধ্যে এক শতাংশ হলেও একটা চাপ থাকতো। তবে সে এখন জানে, সে রান করেছে। যখন আপনি রান করেন, তখন আপনি এটা জানেন যে কিভাবে রান করতে হয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন কারো ফর্ম খারাপ যায়, তখন সে ওইটা ভুলে যায় যে কিভাবে রান করতে হবে। তাই এটা তার জন্য খুব ইতিবাচক যে সে আয়ারল্যান্ডে যাবার আগে দুটি বড় ইনিংস খেলেছে।”
দীর্ঘদিন ধরেই ওপেনিংয়ে একজন নিয়মিত সঙ্গী খুঁজে ফিরছেন তামিম। ওপাশে একজন থিতু কাউকে পাওয়ার গুরুত্বটা তামিমের কাছে এমন, “নির্দিষ্ট ম্যাচে তো এমন কোনো সমস্যা করে না। কিন্তু যখনই আপনার একজন নিয়মিত ওপেনিং সঙ্গী থাকবে, তখন যেটা হয়, আমরা দুজনই আমাদের খেলাটাকে ভালো বুঝতে পারি আর কি। অনেক সময় হয়তোবা এমন থাকে যে, আমার টাইমিং ভালো হচ্ছে না। হয়তো আমি মারছি, কিন্তু ফিল্ডারের কাছে চলে যাচ্ছে। তখন তাকে বাড়তি সুযোগটা নিতে হয়। একইভাবে ওর সাথে যদি এই জিনসটা হয়, তবে আমার সুযোগ নিতে হয়।
তবে সমস্যা হয় দলে যাওয়া-আসার মধ্যে থাকা কেউ আসলে, “তবে, কেউ যদি (দলে) থিতু না হয়, তবে তাকে গিয়ে এটা বলা অন্যায্য যে, ভাই, তুমি সুযোগটা নাও। কারণ, ওদেরও একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তবে আমি নিশ্চিত, লিটন ও সৌম্য যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছে। আমি নিশ্চিত, তারা কী পারে সেটা সবাইকে দেখিয়ে দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।”
ওপাশের মানুষটা কী চাইছেন, সেটা বুঝতে পারাও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তামিম, “আপনি যখন একটা মানুষের সাথে যে কোন কিছুতে, যে কোনো পেশায় - আপনার পেশাতেই চিন্তা করেন না কেন, আপনি যদি একজন সহকর্মীর সঙ্গে ২০ বছর ধরে কাজ করেন, তাহলে সে আপনার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারগুলো জানবে - সব পেশাতেই এটা হয়। যারা বিশ্বের বিখ্যাত সব ওপেনিং জুটি, হেইডেন-গিলক্রিস্ট, গাঙ্গুলী-শচীন, শেওয়াগ-শচীন, এদের মধ্যে দেখবেন একটা বোঝাপড়া থাকতো। আপনি যখন ওদের খেলা ম্যাচগুলো দেখবেন, আপনি মনে করবেন যে, তারা মাঠে মজা করছে আর তারা জানে অন্যজন কী চায়।”
“এরকম সুযোগ দূর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এখনও হয় নাই। তবে আমি নিশ্চিত, যে দুজন বিশ্বকাপে যাচ্ছে, তারা বাংলাদেশের হয়ে আগামী ১০-১৫ বছর খেলার সামর্থ্য রাখে। ভালো একটা পারফরম্যান্স দেখানোর এটাই সেরা সময় বলে আমি মনে করি।”