• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    'কঠিন' কিন্তু 'সুবিধাজনক' ফরম্যাট পেরিয়ে সেমিফাইনালের আশা মুশফিকের

    'কঠিন' কিন্তু 'সুবিধাজনক' ফরম্যাট পেরিয়ে সেমিফাইনালের আশা মুশফিকের    


    গত বিশ্বকাপে ছিল ১৪ দল, দুইটি পুলে ভাগ হয়ে খেলার পর ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০০৭ সালে ছিল চারটি করে দল নিয়ে চারটি গ্রুপ- এরপর সুপার এইট। ২০০৭ ও ২০১৫, ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ শুরু করা বাংলাদেশ এ দুবারই টপকাতে পেরেছিল প্রথম পর্ব। ১৯৯২ সালের পর আবার বিশ্বকাপ হচ্ছে গ্রুপ-পর্বেই রাউন্ড-রবিন লিগের পর সেমিফাইনাল ফরম্যাটে। ১০ দলের সবাই তাই খেলবে সবার সঙ্গে। ‘কঠিন’ হলেও সব দিক দিয়েই এই ফরম্যাটকে সুবিধাজনক মনে করছেন বাংলাদেশের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এই ফরম্যাটের সেই ‘ফেয়ার’ সুবিধা কাজে লাগিয়েই পরের রাউন্ড বা সেমিফাইনালে যাওয়ার আশা তার।

    “আগে দেখা গেছে আমরা বিশ্বকাপে শক্ত গ্রুপে পড়েছি, তখন মনে হয়েছে এই গ্রুপে না পড়ে অন্য গ্রুপে পড়লে ভালো হতো। ২০০৭ সালে আবার আমরা ভারতকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ালিফাই করেছিলাম (গ্রুপে অন্য দুই দল ছিল শ্রীলঙ্কা ও বারমুডা)। অনেক সময় সহজ গ্রুপে পড়েই কোয়ালিফাই করতে পারিনি। এটা কঠিন ফরম্যাট। কিন্তু ‘ফেয়ার’ সুবিধা পাবে (সবাই)। সে দিক থেকে বলবো, এই ফরম্যাট যে কোনো দিক থেকেই সুবিধাজনক”, বলছেন মুশফিকুর।

    “আর বাংলাদেশ আগের মতো নাই। আমার মনে হয় বাংলাদেশ আগের চেয়ে বড় দল। এই ফরম্যাটকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমার মনে হয় আমরা এই ফরম্যাটে ভালো খেলেই পরের ধাপে যাব।” 

    এই ‘ফেয়ার’ সুবিধার উল্টো-পিঠে আবার আছে দীর্ঘ এক টুর্নামেন্ট। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপ হয়েছিল ৪৭ দিন, তবে সুপার এইটসহ বাংলাদেশ খেলেছিল ৭টি ম্যাচ। এবার ফাইনালসহ টুর্নামেন্ট চলবে ৪৬ দিন, তবে বাংলাদেশ সেমিফাইনালের আগেই খেলবে ৯টি ম্যাচ। ফলে ফিটনেসটা দারুণ গুরুত্বপূর্ণ এখানে, “ফিটনেস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রথম যে বিশ্বকাপ খেলি, তখন দুই মাস ওয়েস্ট ইন্ডিজে ছিলাম। এটাও দীর্ঘ টুর্নামেন্ট। অনেকে ভাবতে পারে লম্বা সিরিজে ফিটনেস তেমন গুরুত্বপূর্ন না, আসলে তা নয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ। ম্যানেজমেন্ট আমাদের দেখাশুনা করছে। পরিবার নেয়ারও সুযোগ আছে। যা আমাদের রিলাক্স থাকতে সহায়তা করবে। অনেক সময় দেখা যায় অনেক চাপের ম্যাচের সময় রিলাক্স থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। দিনশেষে মাঠে আমাদের ভালো খেলতে হবে। কোচরা সেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন।”

    বিশ্বকাপের আগে আছে ত্রিদেশীয় সিরিজ, সব মিলিয়ে এ সফরটা তাই বেশ লম্বা। ক্রিকেটাররা ত্রিদেশীয় সিরিজের পর দেশে ফিরতে চান, এমনটা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত সেটা হচ্ছে না সময়-স্বল্পতায়। বাস্তবতাটা মেনে নিচ্ছেন মুশফিক, “এক দিনের জন্য দেশে আসা… আমার জন্য মনে হয় একটু কঠিন। সবার পরিবারই মোটামুটি ইংল্যান্ড যাচ্ছে। যা একটা ভালো দিক। তবে শারীরিক দিকের চেয়ে মানসিকভাবে ফিট থাকাও জরুরি। যা কাজ সহজ করে দেয়। একটাই কথা- আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা জেতার জন্য যাচ্ছি; শুধু অংশগ্রহণের জন্য নয়। এটা আমরা যেভাবে বিশ্বাস করি, আশা করি আপনারাও তা করবেন।”

    বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন মুশফিক, সবার এক গ্রুপ হয়ে খেলার অভ্যাসের জন্য। বিশ্বকাপের ঘোষিত স্কোয়াডে না থাকলেও আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য ডাকা হয়েছিল নাইম হাসান ও ইয়াসির রাব্বিকে। এরপর ডাকা হয়েছে তাসকিন আহমেদ ও ফরহাজ রেজাকেও। মুশফিক বলছেন, “আমাদের সামনে আয়ারল্যান্ড সিরিজটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিউজিল্যান্ডের পর আমরা অনেকে অনেক ম্যাচে ছিলেন। কিন্তু গ্রুপ হয়ে আসা হয়নি। এগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকেই সেই ইতিবাচক ছন্দটা ধরতে হবে।”

     

     

    আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল হবে ১৭ মে। ২৬ মে পাকিস্তান ও ২৮ মে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওভালে ২ জুন ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হবে বাংলাদেশের।