• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    'রান বা গড়ের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইক রেট'

    'রান বা গড়ের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রাইক রেট'    

    সেদিন তামিম ইকবাল বিশ্বকাপে নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্য নিয়ে কথা বলছিলেন তপ্ত মিরপুরে। আগে ইংল্যান্ডে কী পেরেছেন, বিশ্বকাপে আগে কী পারেননি এসব একদমই মনে রাখতে চান না তামিম। বরং দলের জন্য কীভাবে অবদান রাখা যায় সেটি নিয়েই ভাবছেন। মুশফিকুর রহিম আরেকট স্পষ্টভাষী হয়ে বলেছেন, সেঞ্চুরি করতে পারলে তাঁর ভালোই লাগবে। তবে রান বা সবকিছুর আগে মুশফিকের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে স্ট্রাইকরেট।

    সরাসরি স্ট্রাইক রেটের কথা বলার কারণও আছে মুশফিকের। ইংলিশ কন্ডিশনে খেলা হলেও এই বিশ্বকাপ যে ব্যাটসম্যানদের হতে যাচ্ছে, সেটা মোটামুটি ওপেন সিক্রেট। এমনিতেই ইংল্যান্ডের মাঠ ছো্ট, তার ওপর আইসিসি টুর্নামেন্টে ফ্ল্যাট উইকেটে রানের বন্যা বইবারই কথা। মুশফিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দুই বছর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০০র বেশি রান করেও ১৬ বল বাকি থাকতে হেরে গেছে বাংলাদেশ। সেজন্য স্ট্রাইক রেটটা এবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মানছেন, ‘স্ট্রাইক রেটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কত রান করলেন, কত গড়ে রান করলেন, তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে স্ট্রাইক রেট। আপনি যদি দেখেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা ৩২০ (আসলে ৩০৫) এর মতন করেও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গেছি। এটাই প্রমাণ করে যে ওই উইকেটে আমাদের ৩৫০-৩৬০ রান করা উচিত ছিল। আমরা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা সেটাই চিন্তা করছি। আমরা যদি ১০০ করি, সেটাকে কিভাবে ১৩০-১৫০ এ নিয়ে যাওয়া যায় এবং কত দ্রুত সময়ে নিয়ে যাওয়া যায়। শুধু বাউন্ডারি না, মাঠ গুলো হয়তো বড় হবে, তাই আপনার রানিং বিটউইন দ্য উইকেটও গুরুত্বপূর্ণ।’

    চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদাহরণ দিয়েই ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বটা মনে করিয়ে দিলেন মুশফিক, ‘চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যদি খেয়াল করেন, উইকেটগুলো পাটাই থাকবে। টিপিক্যাল ইংল্যান্ড কন্ডিশনের মত উইকেট থাকে না। আর ৩০০+ তো যে কোনো গ্রাউন্ডেই হয়ে থাকে। আমরাও ওইভাবে প্র্যাকটিস করছি, নিশ্চিত করছি যে যাতে স্ট্রাইক রেটটা বেশি থাকে। ফলে ৩৩০-৩৫০ পার করলেও যেন আমরা তাড়া করতে পারি। আবার ৩৩০-৪০ করলে যেন আমাদের বোলাররা সেটা ডিফেন্ড করতে পারে। আমরা সেভাবে চেষ্টা করছি অ্যাজ অ্যা ব্যাটিং ইউনিট। বোলারদের জন্যও কঠিন হবে, কারণ তেমন সুবিধা থাকবে না। তবে এটা ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব। আমরা যদি ১০-২০টা বেশি করতে পারি তাহলে বোলারদের সুবিধা হবে।’

     

     

    রেকর্ড সাক্ষ্য দিচ্ছে, মুশফিক এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে মুশফিকের রান ১৯৪১, গড় ৪৭.৩৪। স্ট্রাইক রেট ৮৬, এই সময়ে সেঞ্চুরি করেছেন চারটি। অথচ অভিষেকের পর থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ৩০ গড়ে করেছেন ৩৪৫১ রান। এই সময়ে সেঞ্চুরি দুইটি, স্ট্রাইক রেট ৭৩.৪০। গত চার বছরে নিজেকে কোথায় নিয়ে গেছেন সেটি না বললেও চলে।


     

    মুশফিক অবশ্য জানেন, চ্যালেঞ্জের কমতি নেই। নিজে তাই এবার সবকিছু ছাপিয়ে যেতে চান, ‘এটা এমন একটা আসর যেখানে সবাই বড় ভূমিকা রাখতে চায়।তো আমার মনে হয়, আমিও ব্যতিক্রম নই। তবে কন্ডিশন একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে, প্রতিপক্ষ একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে। দর্শক থাকবে।  সব কিছু মিলিয়ে এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ চতুর্থবারের মতো আমি খেলতে যাচ্ছি। শেষ তিনটি বিশ্বকাপে আমি রান করেছি, আমার নিজেরও একটা ব্যক্তিগতলক্ষ্য আছে। এই বিশ্বকাপে যেন সবকিছু ছাপিয়ে যেতে পারি। আমি মনে করি সুযোগ আছে, সামর্থ্যও আছে। আমি সেভাবেই চেষ্টা করব। যদি সুযোগ থাকে তাহলে চেষ্টা করব বাংলাদেশ দুহাত ভরে দিতে।’