ক্যাসিয়াসের জন্য ম্যাচে রিয়ালকে জেতালেন মারিয়ানো
গত সপ্তাহে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। শৈশবের ক্লাব ছেড়ে পোর্তোতে যোগ দিয়েছিলেন বছর চারেক আগে, কিন্তু নিজেদের কিংবদন্তী ইকার ক্যাসিয়াসকে ভোলেনি রিয়াল মাদ্রিদ। স্প্যানিশ গোলরক্ষকের আরোগ্য কামনা করে আজ ম্যাচের আগে স্মারক টি-শার্টও গায়ে জড়িয়েছিলেন রিয়ালের ফুটবলাররা। লা লিগায় শেষ দুই ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি জিনেদিন জিদানের দল, কিন্তু সেইন্ট ইকারের জন্য ম্যাচটিতে আর দমিয়ে রাখা যায়নি তাদের। মৌসুমের শুরুতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর '৭' নম্বর জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন, পুরো মৌসুমে বিবর্ণ থাকলেও আজ ঠিকই জ্বলে উঠেছেন মারিয়ানো দিয়াজ। তার জোড়া গোলেই সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ভিয়ারিয়ালকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
আজ মাদ্রিদ অবশ্য শুধু ফুটবলাররা নন; ক্যাসিয়াসের স্মরণে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছিলেন মাদ্রিদ সমর্থকেরা। রিয়ালের জন্য আবেগঘন এক ম্যাচের শুরুটাও হয়েছিল যুতসই। মাত্র ৮৪ সেকেন্ডে ব্রাহিম দিয়াজের পাস থেকে ভিয়ারিয়াল জালে বল পাঠান মারিয়ানো। পুরো মৌসুমে এটিই ছিল রিয়ালের দ্রুততম গোল। শুরুটা দুর্দান্ত হলেও খেই হারাতেও সময় নেয়নি রিয়াল, নিজেদের পায়েই কুড়ালটা মেরেছে নিজেরাই।
১১ মিনিটে কাসেমিরোর পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে জেরার্ড মোরেনোকে পাস বাড়ান আলভারো গঞ্জালেজ। বাঁ-পায়ের জোরাল শটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন তিনি। এতক্ষণের উৎসবমুখর বার্নাব্যুর উল্লাস মুহূর্তেই মিলিয়ে যায় বাতাসে। তবে রিয়ালও হাল ছাড়েনি। ভাগ্য সহায় হলে ১৫ মিনিটেই আবারও লিড নিতে পারত তারা, ডিবক্সের বাইরে থেকে দানি কারভাহালের জোরাল ভলি প্রতিহত হয় বারপোস্টে।
প্রথমার্ধে গোলের কম সুযোগ পায়নি রিয়াল, কিন্তু কাজে আর লাগাতে পারেনি। গোলমুখে করিম বেনজেমার অভাবটা বেশ ভুগিয়েছে তাদের। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষদিকে ঠিকই লিড পুনরোদ্ধার করেছে রিয়াল। ৪২ মিনিটে কর্নার থেকে মার্সেলোকে পাস বাড়ান কাসেমিরো। মার্সেলোর ডানপায়ের শট ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রেয়াস ফার্নান্দেজ ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি অধিনায়ক সার্জিও রামোসের বদলে রিয়ালের রক্ষণে নামা ডিফেন্ডার হেসুস ভায়েহো।
প্রথমার্ধের শেষটা দারুণ হওয়ায় আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকেই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করেছিল রিয়াল। জয় নিশ্চিত করতেও সময় নেয়নি একেবারেই। ৪৯ মিনিটে কারভাহালের ক্রসে গোলের সামনে থেকে পায়ের আলতো টোকায় ব্যবধান ৩-১ করেছেন মারিয়ানো। মিনিট দশেক পর ব্যবধানটা আরও বড় করতে পারত রিয়াল। ৫৮ মিনিটে ব্রাহিম দিয়াজের চমৎকার বাঁকানো শট অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দেন ফার্নান্দেজ। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও গোলের একাধিক সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। কিন্তু কখনও ফার্নান্দেজ, বা ভাগ্য সহায় না হওয়ায় আর লিডটা বাড়ান হয়নি তাদের।
৭৬ মিনিটে ব্রাহিমের বদলে প্রায় ২ মাসের ইনজুরি কাটিয়ে রিয়ালের একাদশে ফিরেছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ৭৬ মিনিটে বার্নাব্যুর হর্ষধ্বনিই প্রমাণ করে, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে ঠিক কতটা মিস করেছিলেন রিয়ালের ভক্তরা। পুরো দ্বিতীয়ার্ধ দারুণ খেললেও শেষদিকে আরেকটু হলেই রিয়ালের থেকে পয়েন্ট কেড়ে নিতে পারত ভিয়ারিয়াল। গোলের আসায় ৮৪ মিনিটে হাউমে কস্তাকে নামিয়ে দিয়েছিল ভিয়ারিয়াল, ফলাফলটাও পেয়েছে ঠিকই। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান ৩-২ করেছিলেন কস্তা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবারও পয়েন্ট হারানোর হতাশায় ডুবতে হয়নি রিয়ালকে। ইকারের জন্য ম্যাচে ঠিকই জয় পেয়েছে তারা।